ঢাকা, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

সব সুযোগ প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের কাছে পৌঁছানো দরকার

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: মার্চ ০৪, ২০২৫, ১২:৫৫ দুপুর  

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমানের উন্নয়ন ছাড়া সামগ্রিক অর্থনৈতিতে কোনোভাবেই সুফলতা আসে না। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমানে পরিবর্তন হবে সম্পদের সুসষম বন্টন নিশ্চিত করা গেলে। দেশের মাথাপিছু আয় আনুপাতিক হারে বাড়ছে। কিন্তু এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। দরিদ্র শ্রেণির মানুষের উন্নয়ন নিশ্চিত হবে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হলে। এ জন্য প্রতিটি দরিদ্র, হতদরিদ্র পরিবারকে শনাক্ত করা যেমনি জরুরি, তেমনি তাদের জীবনমানে পরিবর্তন আনতে সব সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের আয়ের উৎস নিশ্চিত করা জরুরি।  এক্ষেত্রে জেলাভিত্তিক বাজেট পরিকল্পনা তৈরি এবং তা দরিদ্রতার আনুপাতিক হারে যে জেলায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা যত বেশি; ওই জেলায় বাজেটের অর্থের পরিমাণ বেশি নির্ধারণ করতে হবে। এছাড় দরিদ্র মানুষের আয়ের উৎস সৃষ্টির লক্ষ্যে সামাজিক সুরক্ষার আওতায় বিনিয়োগ করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষিকর্মী, খামারি ও প্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির আবশ্যকতা রয়েছে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, একশ্রেণির মানুষ দরিদ্র, অবহেলিত ও দরিদ্রতার গ্রাস হতে বেরিয়ে আসতে পারছে না। তাদের কথা না ভেবে আমাদের সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়। দেশের দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নত করছে সরকারের তেমন কোনো দৃশ্যমান কর্মসূচি চোখে পড়ছে না। বর্তমান সরকার যে কোনো একটি এজেন্ডা নিয়ে কাজ কলে খুব সহজে তা বাস্তবায়ন করতে পারত। তাই এখনো সময় আছে শুধু গরিব ও সাধারণের মানুষের কথা চিন্তা করার। এতে সরকারের গ্রহলযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে যাবে। ভবিষ্যতে যারা রাজনীতি করবে- তারাও কোনো দুর্নীতি, অনিয়ম ও সরকারের প্রশাসনে কোন ধরনের হস্তক্ষেপ করতে না পারে। সব ক্ষেত্রে সুযোগের সমতা ও সমান ক্ষমতা থাকবে। তাহলে হয়তো দেশের গ্রামীণ সমাজ ব্যবস্থায় উন্নয়ন তাদের হাত ধরেই সম্ভব হবে।

বলা বাহুল্য, সাধারণ মানুষ সম্পদের সুষম বণ্টন চায়। কেউ দুর্নীতি করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় আর সাধারণ মানুষ সৎ ও সততার মাধ্যমে জীবনধারণ করে। তারা মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতেও হিমশিম খান। তা হতে দেওয়া যায় না। সাধারণ খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষের কথা প্রাধান্য দিয়ে দেশের অর্থনীতি শক্ত ও মজবুত করা উচিত। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে হলে এখনই জেলাভিত্তিক বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। প্রশাসনকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভাগ্য পরিবর্তনে ভূমিকা রাখা উচিত। মতের ভেদাভেদ থাকতে পারে। কিন্তু দেশটা আমাদের সবার। সভ্য লেবাসধারী মানুষের সংখ্যা নেহাত আমাদের সমাজে কম না। এ ধরনের মানুষ নিজের শিকড়কে ভুলে ইট পাথরের দালান কোঠায় সভ্য, ভদ্র মানুষ সেজে বসে বসে ভাববে কার কাছ থেকে কত টাকা ঘুষ আর দুর্নীতি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া যায়। অথচ অনেক মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই এখন পর্যন্ত হয়নি। আমাদের প্রত্যাশা, সব ধরনের সুযোগ প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে সরকার।


দৈনিক সরোবর/কেএমএএ