শিক্ষকদের কোচিংয়ে নয় ক্লাসেই শিক্ষার্থীদের পড়ানো উচিত
প্রকাশিত: জানুয়ারী ০২, ২০২৫, ০৩:০৫ দুপুর

সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির সময় বেসরকারি স্কুলগুলো নির্ধারিত টিউশন ফির বাইরে যেন অতিরিক্ত টাকা আদায় করতে না পারে, তা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের তদারক করতে হবে। যেসব এলাকার কমিটি এখনো টিউশন ফি নির্ধারণ করেনি, সেসব এলাকার স্কুলকে আপাতত তা না নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী বলেই প্রতীয়মান। শিক্ষকদের মনে রাখতে হবে, অন্য কেউ নৈতিকতার চর্চা করুক বা না করুক; তাদের কাছ থেকে জাতি নৈতিকতা আশা করে। কারণ তারা মানুষ গড়ার কারিগর। দেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলোয় অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধে নীতিমালা জারির পর এবার তদারকির নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। আমাদের শিক্ষকদের দাবি, যথাযথ সম্মান পান না তারা। তারা বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষক পরিচয় দিলে অবহেলিত হতে হয়; সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার দাবিতে আন্দোলন করতে হয়। বাংলাদেশে শিক্ষকরা অবহেলিত কি না, সেটি আলোচনার বিষয়। শিক্ষকেরা অবহেলার শিকার হওয়ার পেছনে দায় কার রাষ্ট্রের, জনগণের, নাকি শিক্ষকদেরই।
বলার অপেক্ষা রাখে না, শিক্ষকদের কিছু কর্মকাণ্ডে হয়তো তাদের প্রতি আস্থা ও সম্মান কমছে। তাই বলে কেউ শিক্ষকদের অবহেলা করা হয়, এটি সত্য নয়। শিক্ষকদের কর্মকাণ্ড কেন সাধারণ মানুষকে ক্ষুব্ধ করবে; কেন তারা শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য করবেন। অনেক সময় দেখা যায়, সন্তান বা পোষ্যের কোনো ধরনের ক্ষতি হতে পারে, এমন আশঙ্কায় অভিভাবকেরা অতিরিক্ত অর্থ আদায় নিয়ে উচ্চবাচ্য করছেন না। তাই বলে কি অসন্তোষ নেই। রাজধানীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ‘কর্তৃপক্ষ’ বলতে শিক্ষকদেরই বোঝায়। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় বা সরকারি অর্থ সহায়তা না নেয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা বোর্ড ও মাউশির নজরদারিও তেমন নেই। এ সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগাচ্ছেন উদ্যোক্তা কাম শিক্ষকেরা।
বলা বাহুল্য, এ দেশের সামর্থ্য সীমিত। আমরা বিশ্বাস করি, নিজেদের কোনো কর্মকাণ্ডে শিক্ষকদের সুনাম হানি হয়, এমন কাজ থেকে বিরত থাকবেন তারা। তাদের দাবি, শিক্ষার্থীদের ভালোর জন্যই কোচিং বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের এতই হিতাকাক্সক্ষী হলে ক্লাসে পাঠদানে অমনোযোগী কেন! কেন পাবলিক পরীক্ষার আগে সরকারকে অতিরিক্ত অর্থ ও বকেয়া আদায়-সংক্রান্ত নিয়ে কঠোর নির্দেশনা জারি করতে হয়! কেন কোচিং, মডেল টেস্ট প্রভৃতির নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হয়। শিক্ষকদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, কোচিংয়ে পাঠদানে মনোযোগী না হয়ে ক্লাসেই শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে পড়াবেন।
দৈনিক সরোবর/কেএমএএ