ঢাকা, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

শিক্ষার সব ক্ষেত্রে দ্রুত শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা জরুরি

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৪, ০৩:১৭ দুপুর  

সরকার পতনের পর স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হলেও এখনো সচল করা যায়নি। প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় চার কোটি। এই খাতে এখনো শৃঙ্খলা ফেরেনি। নানা ইস্যুতে প্রায়ই আন্দোলনে নামছে শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে শিক্ষাঙ্গন ছেড়ে তারা সড়কে নামছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন খাতের সংস্কারে জোর দিচ্ছে। শিক্ষা খাতেও রয়েছে সংস্কারের বড় দাবি। কাজও শুরু করেছে সরকার। তবে দায়িত্ব গ্রহণের চার মাসেও সংস্কার কাজে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। উল্টো শিক্ষা খাতে বেড়েছে বিশৃঙ্খলা। সাধারণ শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বড় একটি অংশ ছাত্র রাজনীতি বা লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি বন্ধের দাবি জানিয়েছে। তবে এই দাবি বাস্তবায়নে এখনো কোনো রূপরেখা তৈরি হয়নি। ফলে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, সাধারণ শিক্ষার্থী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাশাপাশি ছাত্র সংগঠনগুলোর নানা ইস্যুতে বিরোধ তৈরি হচ্ছে। 

বলার অপেক্ষা রাখে না, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হল প্রশাসন, কার্যকর ছাত্র সংসদ এবং সব শিক্ষার্থীর জন্য আবাসিক সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির ধারা বন্ধ হবে। একই সঙ্গে ক্যাম্পাসে দীর্ঘমেয়াদে শৃঙ্খলা ফিরবে। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ক্যাম্পাসগুলোয় শক্ত অবস্থান নিশ্চিত করতে চায় ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির। বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠনও ক্যাম্পাসে সক্রিয় রয়েছে। আমরা মনে করি, আন্দোলনসহ নানা কারণে শিক্ষায় যে ক্ষতি হয়েছে; তা কাটিয়ে ওঠার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই শিক্ষার গুণগত মানে জোর না দিলে ভবিষ্যতে ভুগতে হবে। এছাড়া দীর্ঘদিনের প্রচলিত ধারার ছাত্র রাজনীতির সংস্কার দরকার। অথচ জুলাই অভ্যুত্থানের ৪ মাস পার হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতির কোনো রূপরেখা তৈরি হয়নি। ফলে শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয়েছে। 

বলা বাহুল্য, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ হয়েছে। এটি জনআকাক্সক্ষার ফল। পরাজিত ফ্যাসিস্ট শক্তি ও গোপন রাজনৈতিক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্তরা ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে চান। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সচেতনতা দরকার। ক্যাম্পাসগুলোয় এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য রাজনৈতিক রূপরেখা প্রণনয় জরুরি। এছাড়া শিক্ষার গুণগত মানে জোর দিতে না পারলে ভবিষ্যতে সবাইকে ভুগতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা, সরকার দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়ে শিক্ষার সব ক্ষেত্রে দ্রুত শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে।

দৈনিক সরোবর/কেএমএএ