ঢাকা, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

নিভেছে আগুন, গাজী টায়ার্স ভবন ধসে পড়ার শঙ্কা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি 

 প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৪, ০৪:২৭ দুপুর  

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাজী টায়ারস কারখানার লাগা আগুন প্রায় ৩২ ঘণ্টা ধরে জ্বলেছে ছয় তলা ভবনটি। গত রাতে নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি নিভেছে মঙ্গলবার ভোরে। এতে ভবনটি ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে ফায়ার সার্ভিস।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক আনোয়ারুল হক গণমাধ্যমকে জানান, মঙ্গলবার ভোর ৫টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিভেছে। তবে ভবনটির অবস্থা নাজুক। এখন তারা ভেতরে ঢুকে উদ্ধার অভিযান শুরু করবে।

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, দীর্ঘ চেষ্টার পর আপাতত ফ্লেম (অগ্নিশিখা) ডাউন (নেভানো) করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু এখনো ভবনের ভেতরে হিট (উত্তাপ) আছে৷ অল্প অল্প করে আগুন জ্বলছে৷ ভবনটা বেঁকে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে৷ কয়েকটা জায়গায় সুরকির মতো হয়ে গেছে৷ ভেতরে ঢুকে কাজ করা যাচ্ছে না৷ নিচতলার সিঁড়ি পর্যন্ত ঢোকা গেছে কেবল৷

ছাদের কোনো অংশে হতাহত কাউকে পাওয়া যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ভবনের ভেতরে ঢোকা সম্ভব হয়নি৷ আগুনটা যেহেতু নেভাতে পেরেছি, সবকিছু বিবেচনা করে ভেতরে উদ্ধার অভিযান শুরু করব৷

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পূর্ব পাশে দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী গাজী গ্রুপের গাড়ির টায়ার প্রস্তুতকারী কারখানা 'গাজী টায়ারস' এর অবস্থান৷ কারখানাটির মালিক আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী৷ রবিবার ভোররাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার একটি বাসা থেকে গ্রেফতার হন তিনি।

গোলাম দস্তগীরের গ্রেফতারের খবর তার নির্বাচনী এলাকা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে সকাল থেকেই সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়৷ দুপুরের দিকে টায়ার প্রস্তুতকারী কারখানাটির অদূরে একটি মসজিদ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোক জড়ো করা হয়। এ ঘোষণার পর কয়েকশ মানুষ জড়ো হন কারখানাটির সামনে, শুরু হয় লুটপাট৷ দিনভর লুটপাটের পর রাত ৯টার দিকে কারখানাটির ভেতরের একটি ছয়তলা ভবনে আগুন দেয় লুটপাটকারীদের একটি দল৷ সোমবার আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পরও লুটপাট চলে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এদিকে এ ঘটনায় অন্তত ১৭৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে দাবি করেছেন তাদের স্বজনরা৷ নিখোঁজদের মধ্যে কয়েকজন নারীর নামও পাওয়া গেছে৷ তাদের প্রাথমিক একটি তালিকাও করেছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা৷ তবে, নিখোঁজদের কেউ কারখানাটির কর্মী নন। সবাই আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা৷ তারা লুটপাটের সময় ভবনটির ভেতরে ছিলেন, কিন্তু আগুন লাগার পর বের হতে পারেননি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দৈনিক সরোবর/এমই