জামায়াতের উদ্দেশে জয়নুল আবদিন
কোথায় ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়, কোথায় ছিলেন ১৬ বছর
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫, ০৫:৩৩ বিকাল

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক জামায়াতে ইসলামীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, গত ৫৪ বছরে কোনোদিনও দেখিনি স্বাধীনতা দিবসে একটা মিছিল করতে। যখনই অন্তর্বর্তী সরকার অক্টোবর-নভেম্বরে একটি নির্বাচনের কথা বলা শুরু করলেন, তখনই আপনাদের মুখে রাম রাম। আবার শুনি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। কীসের ইঙ্গিত। সংস্কারের পর নির্বাচন? কোথায় ছিলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়। কোথায় ছিলেন ১৬ বছর?
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত 'জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও পবিত্র মাহে রমজানের আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি' শীর্ষক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব প্রশ্ন রাখেন।
জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আমরা শুনেছি আপনাদের একটা পত্রিকার মাধ্যমে ১৯৭১ সালে আমরা যারা যুদ্ধ করেছিলাম তাদেরকে অমুসলিম বলা হয়েছে। তাই আবার নতুন চক্রান্ত শুরু করেছেন। কোথায় ছিলেন আমার নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট যখন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য হাঁটুজলে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছেন। যারা কবরস্থানের মধ্যে, জঙ্গলে ঘুমিয়ে জীবন কাটিয়েছেন, যারা আয়না ঘরে মানুষকে মারার শিক্ষা দিয়েছেন তখনও আপনাদেরকে এতো জোড়ালো কথা বলতে দেখিনি। এখন আবার এই ষড়যন্ত্র কেন? বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি ১৬ বছর আমরা হাসিনার কাছে মাথা নত করিনি। এখনও এই সরকারকে সমর্থন দিয়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হলে আমরা আল্লাহ ছাড়া আর কারো কাছে মাথা নত করবো না।
ফারুক বলেন, এখন নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা শুরু হয়েছে। একটু যেন গোলমাল করে ফেলছে কেউ। যেন কোথায় কীসের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। না হলে এই জামায়াতে ইসলামী আওয়ামী লীগকে, শেখ হাসিনাকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে জীবন দিতে হয়েছে। আমি মনে করি তার পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল শেখ হাসিনার।
বিএনপি চেয়ারপারসন উপদেষ্টা বলেন, জামায়াতে ইসলামী আপনারাও আওয়ামী লীগের সঙ্গে একাত্মতা করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, পরিণামে কী পেয়েছেন? আপনাদের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মেরেছে।
জাতীয় পার্টির জি এম কাদেরের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তিনবার জাতীয় নির্বাচনে বৈধতা দিয়ে, শেখ হাসিনাকে, আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করে আপনাদের দল আজ বিলীনের পথে।
তিনি আরো বলেন, বিগত ১৬ বছরে আমরা অনেক কষ্ট করেছি, অনেক কটূক্তি শুনেছি, অনেক ব্যথা পেয়েছি, অনেক জেল জুলুম খেটেছি। জনগণের কথা বলতে গিয়ে এই প্রেসক্লাবের সামনে থেকেই আমাদের নেতৃবৃন্দসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে আজকে ভারতের আশ্রয়কারী শেখ হাসিনা সরকার। শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রকে তার (শেখ হাসিনার) বাবা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। এটা আমরা কখনোই শেখ মুজিবরের কাছে আশা করেছিলাম না। কিন্তু সে কারণেই তাকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়। মানুষের ভালোবাসার সম্মান যে ব্যক্তি দিতে পারে না সে ব্যক্তি কোনো দিনও ক্ষমতাই থাকতে পারে না। তার আরেক প্রমাণ শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন, সাধারণ সম্পাদক মো. নবী হোসেন প্রমুখ।
দৈনিক সরোবর/ইএইচপি