ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

ঈদে সংকট রোধে আমদানি পণ্য দ্রুত খালাস প্রয়োজন

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৫, ০৭:১৮ বিকাল  

বর্তমানে সারাদেশের বিভিন্ন নৌঘাটে পণ্য বোঝাই ৫৬টি ব্যক্তিমালিকানাধীন লাইটার জাহাজ খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে এমনও জাহাজ রয়েছে; যেগুলো থেকে প্রায় এক মাসেও পণ্য খালাস করেনি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। ফলে লাইটার জাহাজের অপ্রতুলতার কারণে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতার সৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে মাদার ভেসেলকে (গভীর সমুদ্রে চলাচলকারী বড় জাহাজ) ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে; যাতে অপচয় হচ্ছে বিপুল অংকের বৈদেশিক মুদ্র। এভাবে রমজান ও ঈদুল ফিতর ঘিরে দেশে ভোগ্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট তৈরির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। একদিকে লাইটারেজ সংকটের কারণে আমদানি পণ্য খালাসে বিলম্ব হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরে; অন্যদিকে গভীর সাগরে বহির্নোঙরে বাড়ছে জাহাজ (মাদার ভ্যাসেল) জট। এতে একদিকে আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, অন্যদিকে জাহাজের ডেমারেজ চার্জ হিসেবে শত শত কোটি টাকা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। ফলে দেশের জাতীয় অর্থনীতি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। 

বলার অপেক্ষা রাখে না, বর্তমানে বন্দরের বহির্নোঙরে শতাধিক জাহাজ অবস্থান করছে। সবচেয়ে বেশি রয়েছে বাল্কবাহী জাহাজগুলো। আমদানিকারকরা ভোগ্যপণ্যে কৃত্রিম সংকট তৈরির জন্য লাইটার জাহাজগুলো গুদাম হিসেবে ব্যবহার করছেন। তারা সিন্ডিকেট করে দেশে পণ্যে কৃত্রিম সংকট তৈরির জন্য জাহাজগুলোকে বিভিন্ন ঘাটে ঘাটে এনে ফেলে রেখে পণ্য খালাস করছে না। অথচ প্রতিটি জাহাজের অবস্থানের বিপরীতে দৈনিক ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার মার্কিন ডলার অতিরিক্ত গুনতে হয় তাদের। চট্টগ্রাম বন্দরে বাল্কপণ্যবাহী মাদার ভেসেল থেকে পণ্য খালাসে দুই হাজারের মতো লাইটার জাহাজ রয়েছে। এর মধ্যে দেড় হাজারের মতো নিয়ন্ত্রণ করে ডব্লিউটিসিসি। বড় বড় আমদানিকারক লাইটার জাহাজকে ভাসমান গুদাম বানিয়ে রাখেন বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারসাজি জন্য। 

বলা বাহুল্য, সরকার ভোগ্যপণ্য আমদানিতে শুল্ক ছাড় দেওয়ায় এবার আমদানিকারক ও ভোগ্যপণ্যের আমদানির পরিমাণ বেড়েছে; এমনকি চাহিদার চেয়ে বেশি পণ্য আমদানি হয়েছে। গত বছর রমজান ঘিরে ২১৪ আমদানিকারক ভোগ্যপণ্য আমদানি করেছিলেন। এবার আমদানি করেছেন ৩৬৫ জন। বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ জাহাজগুলোয় গম, ডাল, সরিষা, লবণ, কয়লা, পাথর, সø্যাগসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য রয়েছে। অনেক আমদানিকারক গুদাম বানিয়ে এসব পণ্য জাহাজে রেখে দিচ্ছেন। তারা এসব পণ্য খালাস না করায় সংকট তৈরি হয়েছে। রমজানের শুরুতেই আমদানি করা অনেক ভোগ্যপণ্য বন্দরে চলে আসে। অথচ বাজারে চলছে পণ্যের সংকট। আমাদের প্রত্যাশা, ঈদে বাজার স্বাভাবিক রাখতে জাহাজ থেকে আমদানি পণ্য দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা করবেন সংশ্লিষ্টরা। 
 
দৈনিক সরোবর/কেএমএএ