ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

সবার মতামতের ভিত্তিতে এনআইডির সমাধান দরকার

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৫, ০৪:৪৯ দুপুর  

নির্বাচন ভবনের সামনে ‘স্ট্যান্ড ফর এনআইডি’ কর্মসূচিসহ মানববন্ধন করেন ইসি সচিবালয়ের কেন্দ্রীয় ও মাঠ পযায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নিজের অধীন নাগরিকদের ডেটা অথরিটি রাখার জন্য সরকারের কাছে সম্প্রতি সময়ে নানা অভিমত তুলে ধরেছে সংস্থাটি। রাজনীতির মাঠে নির্বাচনকালীন রোড ম্যাপ নিয়ে তুকলোঘিকান্ড ও দলগুলোর পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে জনমনে জানার আগ্রহ আরও প্রবল হয়েছে। এর মধ্যেই এনআইডির নিজেদের অধীন রাখতে দেশব্যাপী ‘অপারেশনাল হল্ট’ কর্মসূচি পালন করেছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের নাগরিকদের জন্য ব্যবহৃত জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার কার্ড নিজের অধীন রাখতে ব্যাপক তোড়জোড় চালাচ্ছে। এর মধ্যে এনআইডি সেবা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়বলি নিজেদের অধীনই রাখার পক্ষে মত দিয়েছে ইসি এবং এ বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ পাঠিয়েছে। এর আগে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম অন্য কোনো দপ্তর বা কর্তৃপক্ষের অধীন স্থানান্তর করা হলে ইসির সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এমএম নাসির উদ্দিন। তারপরও জাতীয় নির্বাচন, সংস্কার ও নুতন দলের নিবন্ধণ ইস্যুতে সরব হয়েছে নির্বাচন কমিশন।

বলা বাহুল্য, অন্তর্বর্তী সরকার জন্মনিবন্ধন, এনআইডি ও পাসপোর্ট সেবা নিয়ে স্বতন্ত্র একটি কমিশন করার উদ্যোগ নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এনআইডি সেবা নিজেদের হাতে রাখতে এর আগে কর্মসূচি পালন করছেন ইসির কর্মকর্তারা। গত ৫ মার্চ তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি দেন দিয়েছেন। এদিকে ইসির অধীন থাকবে না এনআইডি, দায়িত্ব পাবে স্বাধীন ডেটা অথরিটি (দুই মন্ত্রণালয়ের পরস্পবিরোধী) এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব; যা দুই মন্ত্রণালয়ের সাংঘর্ষিক বক্তব্য। তবে নির্বাচন একটি সাংবিধানিক স্বাধীন কমিশন। জাতীয় পরিচয়পত্র এনআইডির ভার নিয়ে দুই মন্ত্রণালয়ের বৈষম্যমূলক বক্তব্যে ও বিরোধের জের সহসায় মিঠছে না বলে মনে করেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। 

বলার অপেক্ষা রাখে না, ভোটার তালিকা ও এনআইডি একসঙ্গে নির্বাচন কমিশনে রাখার পক্ষে ইসির আগের সংলাপগুলোয় অংশীজনরা মতামত দিয়েছেন। সর্বশেষ ২০২৩ সালে একটি আইন করে শুধু এনআইডি সেবা সুরক্ষা সেবা বিভাগে নেওয়ার চেষ্টা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার বিদ্যমান আইনটি বাতিল করে এনআইডি ইসির অধীনই রাখার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ইসি কর্মকর্তারা মনে করেন, এনআইডি আলাদা হলে নির্বাচন ব্যবস্থাই বাধাগ্রস্ত হবে। এনআইডি এমনভাবে জন্ম হয়েছে এটা কমিশন থেকে আলাদা করার মতো নয়। এটা একটি ডেটাবেইজ। কোনো প্রতিষ্ঠান এনআইডি নিতে হলে ভোটার তালিকাও নিতে হবে। এনআইডি নিলে ভোটার তালিকা ব্যাহত হবে। এনআইডি চলে গেলে ভোটার তালিকায় ভাটা পড়বে। এনআইডি জন্ম হয়েছে নির্বাচন কমিশনে। তাই এখানে থাকা দরকার। তাই ইসির অবস্থান হচ্ছে এনআইডি কার্যক্রম ইসির অধীন থাকা। আমাদের প্রত্যাশা, সবার মতামতের ভিত্তিতে এনআইডি কোন সংস্থার অধীন থাকবে, তা নির্ধারণ করবে সরকার। 

দৈনিক সরোবর/কেএমএএ