নির্বাচন প্রকল্পে ৮০ কোটি টাকার প্রযুক্তি সহায়তা দিয়েছে ইউএনডিপি
প্রকাশিত: মার্চ ২০, ২০২৫, ০৪:৪৩ দুপুর

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি হাতে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরমধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ অন্যতম। জাতিসংঘ উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের এই প্রকল্পে সহায়তা করছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যে ল্যাপটপসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি দিয়েছে সংস্থাটি, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৮০ কোটি টাকা হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, চলমান হালনাগাদে ইউএনডিপি ল্যাপটপ দিয়েছে (ব্যাগ, হাব ও মাউসসহ) ১ হাজার ৩২১টি, ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানার দিয়েছে ৫৭৪টি, আইরিশ স্ক্যানার ৫৬১টি, ক্যামেরা (ট্রাইপড, ব্যাগ, ক্যাবল, চার্জার ও ব্যাটারি) ১ হাজার ১০টি। ডকুমেন্টস স্ক্যানার দিয়েছে ৪৬৪টি। এছাড়াও ৬৯৯টি সিগনেচার প্যাডের চাহিদার মধ্যে ইউএনডিপি দিয়েছে ৩০০টি। আর বাকিটা পরে দেওয়া হবে। এ সকল পণ্যের বাজার মূল্যে দাম ধরলে যা দাঁড়াবে তা ৮০ কোটি টাকার মতো। এর বেশিভাগ প্রোডাক্ট মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে।
জাতিসংঘ উন্নয়ন প্রকল্প (ইউএনডিপি) এর সহায়তার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন বলেন, ইউএনডিপি ইতিমধ্যে একটা নিড এসেসমেন্ট করেছে। একটা টিম পাঠিয়েছিল তারা। তারা সব সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছে৷
চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে ইউএনডিপি’র সহায়তা টাকার অংকে কী পরিমাণ হতে পারে জানতে চাইলে ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ ঢাকা মেইলেকে বলেন, ইউএনডিপি আমাদের প্রোডাক্ট দিয়েছে। তারা তাদের আর্থিক হিসেবে আমাদের তো আর জানাবে না। আর এটা জানতে চাওয়া টাও আমাদের ঠিক হবে না। তবে আমরা যে বুঝতে পেরেছি ইউএনডিপি প্রায় আমাদের ৭০-৮০ কোটি টাকার মতো প্রযুক্তি দিয়ে সহায়তা করছে। এটা আরও বেশি হতো যদি এসব প্রোডাক্টের বিপরীতে কাস্টমস ফি দেওয়া লাগত।
জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেছেন, নির্বাচনে সহায়তা দেওয়ার জন্য গত ডিসেম্বরে আমাদের অনুরোধ করা হয়েছিল। সেই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কী ধরনের কারিগরি সহায়তা দেওয়া যায় সেজন্য ইউএন’র একটি প্রয়োজনীয় মূল্যায়ন দল দুই সপ্তাহ সফর করেছে। তাদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ভোটারদের অংশগ্রহণের জন্য ইসিকে শক্তিশালী করা, নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটকে শক্তিশালী করা; যেমন- ভোটার নিবন্ধন, ভোটার নিবন্ধন প্রচার, ভোটার শিখন কার্যক্রম নিয়ে সহায়তা প্রদান করা।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়তা করছি। আশা করছি এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সেরা নির্বাচন হবে। এক্ষেত্রে নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশন।
ইসি সূত্র জানায়, ইউনডিপি নির্বাচন কমিশনকে বরাবরই কারিগরি সহায়তা দিয়ে থাকে। চলামান হালনাগাদে যেমন দিয়েছে। তেমনি ২০০৭-২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো ভোটার ডাটা তৈরীতেও তাঁরা সহায়তা করছে। এছাড়া তাদের সহযোগিতায় বাংলাদেশের নির্বাচনে স্বচ্ছ ব্যালট বক্সের ব্যবহার হয়েছে যা ওই সময়ে এ দেশের সব নাগরিকের একটা চাওয়া ছিলো। শুধু ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ ছাড়া প্রায় সব নির্বাচনে ইউএনডিপি নির্বাচন কমিশনকে কারিগরি সহায়তা দিয়ে থাকে।
জানা যায়, নির্বাচনের আগে বড় প্রস্তুতির মধ্যে আছে ভোটার তালিকা হালনাগাদ যা শেষ হবে জুনে। সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ যেটির আইন সংশোধনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য দেওয়া হয়েছে। নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দেওয়ার লক্ষে আবেদন আহবান করেছে নির্বাচন কমিশন যেখানে নতুন রাজনৈতিক দল আবেদন করতে পারবে আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত। এছাড়া পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধনের জন্য বিদ্যমান নিবন্ধিত পর্যবেক্ষক সংস্থার পুনঃমূল্যায়ন কাজ চলমান। এর বাইরে নির্বাচনি কর্মকর্তা নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, ব্যালট পেপার তৈরির মতো কাজগুলো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর শুরু করা হয়।
দৈনিক সরোবর/ইএইচপি