যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি একই
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩, ০৯:০৩ রাত

জি-২০ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরটি নানা দিক দিয়ে ছিল খুই গুরুত্বপূর্ণ। এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তিরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক জোট। এতে জোটভুক্তরাষ্ট্রের প্রধানরা হাজির ছিলেন। ৯ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর দুই দিনব্যাপী ভারতের নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই অর্থনৈতিক জোটের সদস্যরাষ্ট্র না হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের পক্ষ আমন্ত্রিত ছিলেন। সম্মেলনটির আয়োজক ছিল এবার ভারত। বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেশি তিন বাকি নেই। নভেম্বরে তফসিল ঘোসণা করবে নির্বাচন কমিশন। জানুয়ারিতে নির্বাচন। এই নির্বাচন ঘিরে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। বিশ্ব শক্তিকেও দেশের রাজনৈতিক দলগুলো কাছে টানার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে বিএনপি এতে দৃশ্যমান কিছু দেখাতে চায়। দলটি এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের পিঠে সাওয়ার হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার কথা ভেবে এসেছে। বিএনপির রাজনীতির দুটি দিকÑ পাকিস্তান ও সৌদি আরব। এই দুটি দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় রাখার চেষ্টা করে এসেছে জš§লগ্ন থেকে। কিন্তু হতাশার কথা হলো, সৌদি আরবের কানেশন বহু আগেই আওয়ামী লীগের দখলে চলে আসে। এছাড়া পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক একটা টানাপড়নের মধ্য দিয়ে চলছে অনেক দিন। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির বিষয়ে পিছু হটেনি। অথচ বৈশ্বিক রাজনীতির কাছে বিএনপি মার খাচ্ছে বারবার!
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ওপরে একটি চাপ ছিলে। ওই চাপ ভারমুক্ত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিয়ে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে হাস্যোজ্জ্বল মুখছবি দেখা গেল, এতে আওয়ামী লীগের বিরোধী শক্তি বিএনপির পিলে চমকানো অবস্থা। এমতাবস্থায় বিএনপি বলছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সেলফি তোলার ঘটনা প্রচার করে আওয়ামী লীগ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আদতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের নড়চড় হয়নি। দেশটি কোনোমতেই বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারকের দাবিকে সমর্থন দিচ্ছে না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেখা-সাক্ষাৎ হওয়া, আলাপচারিতা সারা- সবই গুরুত্ববহন করে এবং তা শেখ হাসিনার সরকারের বিরোধী শক্তি বিএনপি- যারা যুক্তরাষ্ট্রের পিঠে সওয়ার হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর, তাদের জন্য চরম অশনিসংকেত। আর যে কথাটি সবাই বোঝে ও মানে, যুক্তরাষ্ট্র অযথাচিতভাবে বাংলাদেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপে পক্ষাপাতী নয়। কোনো দলকেও সমর্থন করবে না- এটি দেশটি আগেই পরিষ্কার বলে দিয়েছে। এর পরও এমন একটি ধূম্রজাল সৃষ্টির প্রয়াস নেওয়া হয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র মুখে যা বলছে, তা ঠিক নয়; অন্তরে তা অন্য কথা। আবার অনেকের কথা হলো, ভারতকে টপকে যুক্তরাষ্ট্র দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কিছু করতে রাজি নয়। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি একই।