ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

মানবাধিকারের নামে এ মিথ্যাচার বন্ধ হোক

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২৩, ০৯:২৭ রাত  

যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত মানবাধিকার সংস্থাগুলো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে তা তাদের নানা কর্মকান্ডে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এই সংস্থাগুলো এক পেশে ভাবে দেশের কোনও কোনও বিরোধী রাজনৈতিক দলের হয়েও কাজ করছে বলে মোটা দাগে অভিযোগ উঠেছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো-এ সংস্থাগুলো বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নেমেছে। 

প্রশ্ন উঠেছে, তাদের বিতর্কিত কর্মকান্ডের পেছনে প্রশ্নের উত্তরে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা না ভাবার কোনও সুযোগ নেই। আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলেই বিতর্কিত মানবাধিকার সংস্থাগুলো যা খুশি তাই আচরণ করছে। যারা বিপুল অর্থ ঢেলে মার্কিন মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে, তারা শেষ পর্যন্ত কোনও ফল পাবে না। 

বিতর্কিত তথাকথিত মার্কিন মানবাধিকার সংস্থাগুলো যাদের পক্ষ হয়ে কাজ করছে, তারা একটা সময়ে দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন ছিলো। তাদের সময়ে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি কতটা তলানীতে গিয়ে ঠেকেছিলো তা সর্বজনবিদিত। 

আগামী  জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৫ মাস বাকি। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন নিয়ে নানা খেলা শুরু হয়েছে। কোনও কোনও  রাজনৈতিক দল কণ্টকমুক্তভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য  শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে বানোয়াট, বাস্তবতাবর্জিত তথ্য উপস্থাপন করে চলছে। 

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আরো নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানিয়েছে এইসব মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা। আমরা মনে করি এ ধরনের কাজ করে মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা নিজেদের অবিশ্বাস্যভাবে হেয় করে তুলেছে। 

কিছু রাজনৈতিক দল  দেশের সংবিধানমতো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে অনির্বাচিত সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চায়। এর আসল কারণ নিজেদের মতো অনির্বাচিত সরকার গঠন করে ক্ষমতায় যাওয়া নিশ্চিত করা। 

দুঃখজনক হলো যে এরা মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা দিয়ে দেশের ওপর আরো নিষেধাজ্ঞা আনার পাঁয়তারা করছে, যা চরম নিন্দনীয় কাজ। 

সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়-বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আরো নিষেধাজ্ঞাসহ নতুন নীতি প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তাদের দাবি, বাংলাদেশে ব্যাপক রাজনৈতিক সহিংসতা দেখা যাচ্ছে, পাল্টাপাল্টি ডাকা রাজনৈতিক সমাবেশগুলো সংঘর্ষের মধ্যদিয়ে শেষ হচ্ছে এবং বিরোধীদলগুলোর ডাকা বিক্ষোভ প্রায়ই দমনপীড়নের সম্মুখীন হচ্ছে। 

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের দ্বিদলীয় ‘টম ল্যান্টোস হিউম্যান রাইটস কমিশন’ আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এই আহ্বান জানানো হয়। এতে অংশ নেয় এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন, রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ইউএস ইনস্টিটিউট অফ পিস এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের প্যানেলিস্টরা। 

পরিশেষে আমরা বলবো এসব মানবাধিকার সংস্থার কথার প্রতি কারোর কোনও বিশ্বাস ও আস্থা নেই। বাংলাদেশকে যারা অস্থিতিশীল ও ফের দেশব্যাপী আগুনসন্ত্রাস ছড়িয়ে দিতে চায়, তাদের পক্ষ নিয়ে কথা বলছে। যারা দেশের শত শত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে, তাদের পক্ষে সাফাই গেয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আদাজল খেয়ে নেমেছে, আর মার্কিন মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে যারা এ কাজে নামিয়েছে, তাদের এ দেশের মানুষ খুব ভালো করেই চেনে। 

বাংলাদেশে এখনও স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকরা রয়েছে, যারা জঙ্গিবাদ মদদ দিয়ে চলছে। এরা বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধ শক্তি। মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা এদেরই পক্ষ নিয়ে বর্তমান সরকারের সময়ে মানবাধিকার নাজুক বলে মিথ্যা, ভিত্তিহীন কথা বলে বেড়াচ্ছে। যা মোটেই কাম্য হতে পারে না। বিএনপি -জামায়াত দেশে আগুনে পুড়িয়ে কত মানুষ মেরেছে তা আশা করা যায় মার্কিন মানবাধিকার সংস্থার কাছে আছে। সাম্প্রতিক সময়ে এরা অনির্বাচিত সরকারের দাবির নামে দেশে চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর ভয়ানক আক্রমণ করছে। অথচ মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা এগুলোকে এড়িয়ে গিয়ে অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে সাফাই গাইছে এবং  বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞার ডাক দিচ্ছে। এ জন্য আমরা এ মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি ঘৃণা-নিন্দা প্রকাশ করছি। মানবাধিকারের নামে এ মিথ্যাচার বন্ধ হোক। 

দৈনিক সরোবর/আরএস