ঢাকা, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

হয়রানিমূলক মামলা প্রতারকদের শাস্তি নিশ্চিত জরুরি 

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৩:১২ দুপুর  

সারাদেশে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ, চাঁদাবাজি, মালিকানা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাসহ নানা রকম অস্থিরতা বিরাজ করছে। এরই মধ্যে বেশকিছু কারখানা ভাঙচুর ও লুটতরাজের শিকার হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি চক্র মেতেছে মামলাবাণিজ্যে। আর তাদের লক্ষ্য প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কর্ণধাররা। মামলায় আসামি না করার জন্য কৌশলে ব্যবসায়ীদের কাছে দাবি করা হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। দাবি করা টাকা না দিলেই দেওয়া হচ্ছে একের পর এক মামলা।  ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক না কাটলে সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। চাঁদা না পেয়ে অনেক প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা ঠুকে দেওয়া হয়েছে। চাঁদাবাজরা চাঁদা না পেলে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করছে। সাধারণ ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করতে দিতে হবে। হয়রানিমূলক মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। এর পাশাপাশি তাদের মধ্যে ভয় কাটাতে হবে। না হলে অর্থনীতির বড় ক্ষতি হবে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, অনেক প্রতিষ্ঠান অন্যের দখলেও চলে গেছে। এতে জড়িয়েছেন কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতারা। শুধু ব্যবসায়ীই নন, বাদ যাচ্ছেন না শিক্ষক, সাংবাদিক ও তারকারাও। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল ও পূর্বশত্রুতার জেরে মামলার আসামি করারও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে মামলার বাদী চেনেন না আসামিকে আর আসামি চেনেন না বাদীকে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে নানা রকম হয়রানিসহ হত্যা মামলাও করা হয়েছে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীরাসহ জনমনে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। ব্যবসায়ীদের কোনো দল নেই। ব্যবসা করে তারা দেশে অর্থনীতির চাকা সচল রাখেন। সাধারণ ব্যবসায়ীদের হয়রানি থেকে মুক্তি দিতে হবে। ব্যবসায়ীদের হয়রানিমূলক মামলা থেকে মুক্তি না দিলে একদিকে নতুন বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে, অন্যদিকে কর্মসংস্থান তৈরির পথ বন্ধ হবে। 

বলা বাহুল্য, মামলা ও হয়রানির ভয়ে অনেকে বাসাবাড়িতে থাকতে পারছেন না। যারা গত সরকারের লেজুড়বৃত্তি করেননি, তারাও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই সুযোগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তৎপর হয়ে উঠেছে কয়েকটি প্রতারক চক্র। তারা ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের টার্গেট করছে আবার কেউ কেউ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকেও ঘায়েলের চেষ্টা করছে। তাই প্রতারণায় সম্পৃক্তদের দ্রুততম সময়ে আইনের আওতায় আনতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কারো আতঙ্ক কাটবে না। এছাড়া দেশের অর্থনীতি কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে। তাই চিহ্নিত রাজনৈতিক ব্যক্তি ছাড়া সাধারণ ব্যবসায়ীদের মামলা থেকে রেহাই দিতে হবে। অর্থনীতির স্বার্থেই ব্যবসায়ীদের হয়রানি মুক্ত রাখা দরকার। আমাদের প্রত্যাশা, হয়রানিমূলক মামলা প্রতারকদের আটকের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি দ্রুত নিশ্চিত করবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। 

 দৈনিব সরোবর/কেএমএএ