ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

২০২৪-২৫ বাজেট পেশ

দেশে দুর্নীতি বন্ধে অবিচল থাকুন

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: জুন ০৯, ২০২৪, ০৬:৩৭ বিকাল  

এবারের বাজেট পেশ হলো বিশ্ব পরিস্থিত যখন ভীষণ মন্দা। বিশ্বের দুইপ্রান্তে চলছে ভয়াবহ যুদ্ধ। চীন-তাইওয়ানের মধ্যে যুদ্ধ লেগে যায় অবস্থা। বলা যায়, যুদ্ধের কারণেই বিশ্ব অর্থনীতি চরম মন্দায় পড়ে। এর প্রভাব পড়ে প্রতিটি দেশে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে আমাদের ভাগ্য ভালো যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনীতির বিপর্যয় ঠেকিয়ে রেখে গতিশীল করে তুলছেন। ৬ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করা হয়। বাজেট নিয়ে নানা মহল থেকে প্রতিক্রিয়া আসা শুরু হয়েছে। এটিই ঐতিহ্য। বাজেট চুলচেরা বিশ্লেষণের গুরুত্ব সরকার অনুধাবন করে বাজেট সংশোধনও করে থাকে। তা জাতীয় সংসদে পাস হয়। এবারের বাজেটের অনেক ভালো দিক রয়েছে। তবে বাজেটকে যারা ত্রুটিবিচ্যুতির ঊর্ধ্বে থাকার আশা করেন, তারা আসলে ঠিকটি চিন্তা করেন না। কোনো দেশের বাজেট কি ত্রুটিমুক্ত হতে পারে? সরকার তার নিজস্ব রাজনৈতিক চিন্তার প্রতিফলন এতে ঘটান। তবে আমাদের বাজেট, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় এসে যে বাজেট ঘোষণা করলো, তা বলা যায় কল্যাণমুখী অবশ্যই। আওয়ামী লীগ কল্যাণমুখী রাজনীতি যেমন করে, তাদের বাজেটও এর ছবি দেখা যায়। ধনিক শ্রেণির সুবিধা পাইয়ে দেয়া এ দলের বাজেট তোয়াক্কা করে না। জনমানুষই গুরুত্ব পায় বাজেটে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি।

এবারের বাজেট  ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার। আর্থিক সংকটের কারণে এই প্রথম বছরওয়ারি হিসাবে বাজেটের আকার প্রায় ৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। এতে বাজেট ঘাটতিও কিছুটা কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তা দেশের আর্থিক কাঠামো ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ কমাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বাজেটের আকার কমার কারণে অনেক খাতেই বরাদ্দ কমেছে। এতে সামগ্রিকভাবে সুবিধা কমবে, নতুন করে করের বোঝা চাপবে সাধারণ মানুষের কাঁধে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছিল জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ। আর নতুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে জিডিপির ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এতে বাজেটের ভূমিকা অস্বীকার করা যাবে না। একটি বিষয় অবশ্য সত্যি, বাজেটই বলে দিচ্ছে আমাদের অর্থনীতি আর ছোট নেই। এত বিশাল আকারের বাজেট একদিন হয়তো কেউ কল্পনাও করেনি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের অর্থনীতিকে বিশাল করে তুলেছেন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, খেলাপি ঋণকে বাজেটে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। কালো টাকা সাদা করার সুযোগ এ বাজেটেও রাখা হয়েছে। আমরা মনে করি, খেলাপি ঋণ কেন আটকে থাকলে টাকা তোলায় সংকট তৈরি হবে। যারা খেলাপি তাদের কাছ থেকে টাকা ফিরিয়ে আনতে সক্রিয় হতে হবে। কালো টাকা সাদা করার জন্য কর আরও বৃদ্ধি করা উচিত। আমাদের প্রত্যাশা, দেশে দুর্নীতি বন্ধ করতে সরকার অবিচল থাকবে।