ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১

ভয়াবহ বন্যায় পানির নিচে ফেনী

ফেনি প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৪, ০৪:৪১ দুপুর  

প্রবল বন্যায় ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় নৌকার অভাব এবং পানির তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। এতে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে জনপদের হাজারো মানুষ।

বুধবার দুপুরে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেড় মাসের ব্যবধানে তৃতীয় দফায় ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার লাখ লাখ মানুষ। গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি ও ভারতের উজানের পানিতে মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল থেকে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙনের স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। এতে তিন উপজেলার রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়ি, ফসলি জমি ও মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। লোকালয়ে পানি ঢুকে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক ও উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ।
 
পরশুরামের সলিয়া এলাকার বাসিন্দা নাজিম হোসেন বলেন, আমাদের ত্রাণের চেয়েও এখন নৌকা বা স্পিডবোট বেশি প্রয়োজন। বন্যা পরিস্থিতি এমন হবে কেউ বুঝতে পারেনি। অনেকে রাত থেকে উদ্ধার করতে আসতেছে বললেও তেমন কাউকে দেখা যায়নি। সোমবার রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই। বন্যার সঙ্গে বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় অনেক বেশি ভোগান্তি দেখা দিয়েছে।

ফুলগাজীর উত্তর দৌলতপুর এলাকার বাসিন্দা আজমল বলেন, রাত ৩টার দিকে বুক সমান পানি দিয়ে ছোট সন্তানকে মাথায় নিয়ে পরিবারসহ অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। চারদিকে পানি থইথই। ঘর-বাড়ি সব ডুবে গেছে। জিনিসপত্র কোনো কিছুই বের করতে পারিনি। 

এ বিষয়ে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, নদীর পানি বিপদসীমার ৮৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এত পানি আগে কখনও দেখা যায়নি। মানুষকে উদ্ধারেও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। আমরা অসহায় হয়ে গেছি। পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এখনও বৃষ্টির সঙ্গে পানি বাড়ছে।

ফেনী আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ফেনীতে টানা তিন দিন মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। জেলায় ২৪ ঘণ্টায় ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টা বৃষ্টি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

দৈনিক সরোবর/এএস