ঢাকা, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আগুন

ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে আন্তরিক হোন

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩, ০৮:৪২ রাত  

বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৩টার পর রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। পরে সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট। তার পর থেকেই কৃষি মার্কেটে আগুন লাগার প্রতিটি জায়গা সার্চ করা শুরু হয়। বিকাল সাড়ে ৫টা বাজলেও অনুসন্ধান কাজ চলমান ছিল। সম্পূর্ণ নির্বাপণ কারার পর বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। ঢাকা শহরে বেশিরভাগ মার্কেটের ঘনত্ব অনেক বেশি এবং এগুলো অত্যন্ত অপরিকল্পিত। তাই ঢাকার মতো শহরগুলোয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া বেশিরভাগ মার্কেটেরই পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব রয়েছে। মার্কেটে অগ্নিনিরাপত্তার সঠিক সরঞ্জাম থাকলে সেগুলো একটি ছোট আগুনের শিখাকে বড় আগুনে পরিণত হওয়া থেকে রোধ করতে পারে। 

কৃষি মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডে  ক্ষতির পরিমাণ কত, এর কোনো হিসাব পাওয়া না গেলেও আগুনে পুড়ে জীবন ও সম্পদের ক্ষতি একটি নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বস্তি, বাসাবাড়ি, দোকানপাটে আগুন লাগার খবর প্রায়ই পাওয়া যায়। কোনো কোনো অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতি কম হয়, কোনোটায় বেশি। আগুনে ক্ষতি না হওয়ার কোনো নিরাপদ ও স্থায়ী ব্যবস্থা আমাদের দেশে নেই। আগুনে পুড়ে মানুষ আশ্রয় হারায়, সম্পদ হারায়, নিঃস্ব হয়ে পথে বসে। চোখের সামনে দাউ দাউ করে নিজের স্বপ্ন পুড়তে দেখে চোখের জলে বুক ভাসায়। কিন্তু আগুন না লাগার মতো জনসচেতনতার অভাব দূর হয় না।

আগুন লাগার খবর পেলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে নেভানোর দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হলেও কখনো কখনো কিছু যৌক্তিক কারণেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়। আগুন লাগার স্থানের রাস্তাঘাট অপরিসর হলে, আশেপাশে পানির উৎস বা সরবরাহ না থাকলে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়। বড় বড় ভবন, পোশাক কারখানাসহ বেশির ভাগ জায়গায়ই আগুন নেভানোর ব্যবস্থা রাখা হয় না। নিম্নমানের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার, বৈদ্যুতিক লাইন নিয়মিত চেক না করায় প্রধানত শর্টসার্কিট হয়ে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুনে যাতে মানুষের আশা এবং ভবিষ্যৎ পুড়ে না যায়, এ জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সরকারকে  উদ্যোগ নিয়ে তা কার্যকর এবং আগুনের বিরুদ্ধে সব মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা আর এভাবে মানুষকে নিঃস্ব হতে দেখতে চাই না। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনে সরকার আন্তরিক হবে- এটিই প্রত্যাশা সবার।