গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রয়োজন
প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৩, ০১:১১ রাত

বাংলাদেশের অভ্যুদয় সহজ পথ ধরে আসেনি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি আমরা বাংলাদেশ, স্বাধীনতা।
দুঃখের কথা হলো-এই স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে বাঙালির এত আত্মত্যাগ, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা, তাকে দেশের কিছু মানুষ এখনো সঠিক মূল্য দিতে শেখেনি। তারা এখনো স্বাধীনতার সঙ্গে যারা বেঈমানি করেছিলো, বিরোধীতা করেছিলো, সেইসব ঘাতকদের চিন্তা-ভাবনা নিয়ে স্বাধীনতাকে মূল্যায়িত করে থাকে।
আমরা আশা করি এরও একদিন অবসান হবে। স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকদের দোসর হয়ে যারা আজও আস্ফালন করে, নির্লজ্জের মতো পাকিস্তান প্রীতি দেখায়-সেই সময় খুব আসন্ন যে, তারা একদিন সমূলে ধ্বংস হবে। বাঙালির অহঙ্কার, বাঙালির গৌরব, তার স্বাধীনতা নিয়ে কেউ ভিন্ন কিছু বলার সাহস পাবে না।
লক্ষ্যণীয় গণহত্যা দিবসে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ পূর্ণমর্যাদায় পালন করলেও দেশের বৃহৎ দল বিএনপি গণহত্যা দিবস যথার্থ মর্যাদা দিয়ে পালন করেনা। আওয়ামী লীগ যেভাবে গণহত্যা দিবস মর্যাদার সঙ্গে পালন করে, বিএনপি কখনই সেভাবে পালন করে না।
এতে যে তারা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে, এ নিয়ে বোধ হয় দলটির নেতৃবৃন্দ ভাবিত নয়। এই দলটি স্বাধীনতা বিরোধীদের যেভাবে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে পুষ্ট করেছে, তার অন্তর্নিহিত কারণেই কি গণহত্যা দিবসের মতো জাতির কাছে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিনকে বিএনপি নিস্পৃহভাবে এড়িয়ে যায়।
জাতীয়ভাবে গণহত্যা দিবস পালিত হলেও, আজও আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসের স্বীকৃতি মেলেনি। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আশা করি তার এই লড়াই সফল হবে। আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের দেশে পাস্তিানিদের গণহত্যার স্বীকৃতি মিলবে।
এবার গণহত্যা দিবসে প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চেয়েছেন। শনিবার সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে সূচনা বক্তব্য দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২৫ মার্চ থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস ধরে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি জনগোষ্ঠীর ওপর ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে হত্যাকান্ড চালিয়েছিল, আন্তর্জাতিকভাবে তার জন্য একটা স্বীকৃতি প্রয়োজন। আমি জাতিসংঘসহ বিশ্বের সবার কাছে এই আবেদন করব সে সময় যেভাবে তারা নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করেছিল তার স্বীকৃতি যেন পায় বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, সাড়ে ৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৩ কোটি মানুষ ছিল গৃহহারা। ১ কোটি মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। রাস্তায় রাস্তায় সব লাশ পড়েছিল। লাশ শিয়াল, কুকুর খেয়েছে, সেটা মানুষ দেখেছে। মেয়েদের ওপর পাশবিক অত্যাচার, ধরে নিয়ে ক্যাম্পে জঘন্য অত্যাচার করেছে। সেই সময় (১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ) তারা (পাক-হানাদার বাহিনী) নিরস্ত্র বাঙালির ওপর, ঘুমন্ত মানুষের ওপর গুলি চালায়, হামলা চালায়, বীভৎসভাবে দিনের পর দিন, দীর্ঘ ৯ মাস হত্যাকান্ড চালিয়েছিল, ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়, সব ঘরবাড়ি পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়।
মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দিয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, দীর্ঘ সংগ্রাম-লড়াইয়ের মধ্যদিয়ে আমাদের জন্য স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ এনে দিয়েছেন।
দৈনিক সরোবর/ আরএস