ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১

আর্থিক খাত ঠিক করতে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৫, ০৭:০৬ বিকাল  

গত ১৫ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) মাধ্যমে খরচ করা হয়েছে প্রায় ৭ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এর ৪০ শতাংশ পর্যন্ত লুটপাট করা হয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পে মূলত রাজনৈতিক চাঁদাবাজি, ঘুষ এবং বাড়তি খরচ দেখিয়ে এই বিপুল অর্থ লুটপাট করেছেন তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা ও সুবিধাভোগীরা। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে দেশের আর্থিক খাত ও ব্যাংকগুলো ঠিক করায় কঠোর নজর দেওয়া হচ্ছে। একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে দীর্ঘ মেয়াদে সংস্কার রাজনৈতিক দল এসে করবে। খেলাপি ঋণ ছিল ১৬ শতাংশ। এখন কোনো কোনো ব্যাংকে যেন ৮০ শতাংশ ঋণই খেলাপি হয়েছে। 

বলা বাহুল্য, আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে দুটি নতুন আইন প্রণয়নসহ ৬ আইন সংশোধন হচ্ছে। এর একটি হচ্ছে ব্যাংক রেজ্যুলেশন অ্যাক্ট ২০২৫ (বাস্তবায়নকাল : ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে এপ্রিল ২০২৫) এবং অপরটি হচ্ছে ডিসট্রেসড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট (অক্টোবর ২০২৪ থেকে জুন ২০২৬)। সব আইনেরই খসড়া প্রণয়নের কাজ বর্তমানে চলমান। ইতোমধ্যে কোনো কোনোটির খসড়া চূড়ান্ত করে এর ওপর অংশীজনদের মতামত গ্রহণের জন্য খসড়া আইনটি বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। সংস্কার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নতুন আইন প্রণয়ন এবং পুরনো আইনগুলো সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই আইনগুলো তৈরি ও সংশোধনের কাজ শেষ হলে তা আর্থিকখাতের ভিত্তিকে মজবুত ও শৃঙ্খলায় আনবে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র জানায়, ব্যাংক রেজ্যুলেশন অ্যাক্ট ২০২৫ এর চূড়ান্ত খসড়া ইতোমধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে এবং খসড়ার ওপর অংশীজনদের মতামত গ্রহণের জন্য তা বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশও করা হয়েছে। অন্য দিকে ডিসট্রেসড অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট-এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে এবং খসড়ার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত পাওয়া গেছে। মতামতের ভিত্তিতে একটি সভা হয়েছে; আরেকটি সভা দ্রুতই করা হবে। 

বলার অপেক্ষা রাখে না, এডিবি সব সময় কম সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে যাচ্ছে; যেটা অন্যদের ক্ষেত্রে কম দেখা যায়। এডিবি বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সহযোগী। পানি নিষ্কাশন কার্যক্রমে তারা বড় অর্থায়ন করেছে। দারিদ্র্য নিরসনে তাদের আরও কাজের সুযোগ আছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঋণদাতা সংস্থা অর্থায়নে পিছিয়ে গেলেও এডিবি কখনো এমনটা করেনি। সামনে নীতি ও আইনকানুন প্রয়োগ এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে কাজ করতে পারে এডিবি। আমাদের প্রত্যাশা, দেশের আর্থিক খাত ও ব্যাংকগুলো ঠিক করতে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা করবেন সংশ্লিষ্টরা। 

দৈনিক সরোবর/কেএমএএ