টিসিবির পণ্য একাধিকবার নেওয়া বন্ধে পদক্ষেপ দরকার
প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৫, ০৬:৫৯ বিকাল

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। টিসিবির পণ্য স্বল্পমূল্যে পাওয়া যায়। এ কারণে টিসিবির পণ্য কিনতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রচণ্ড রোদের মধ্যে মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। আবার অনেকে মধ্যরাতে এসে লাইনে দাঁড়ান। দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে টিসিবির পণ্য ক্রয়ের জন্য দরিদ্র, এমনকি নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও ট্রাকের লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছে। বাজার থেকে সয়াবিন তেল, ডাল, চিনি, ছোলা ও খেজুর না কিনে টিসিবির ট্রাকের লাইনে দাঁড়াচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ। উদ্দেশ্য সাশ্রয়ী মূল্যে এসব পণ্য কিনে কিছু টাকা সাশ্রয় করা। কিন্তু এই লাইন ক্রমে লম্বা হচ্ছে। নির্ধারিত স্থানে টিসিবির ট্রাক আসার চার-পাঁচ ঘণ্টা আগে থেকেই মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। বিভাগীয় শহরে ৬০টি, ঢাকা সিটিতে ৫০টি, চট্টগ্রাম সিটিতে ২০টি মিলিয়ে ১৩০টি ট্রাকে পণ্য বিক্রি করত। বর্তমানে দেশের ৬৪ জেলাতেই টিসিবির ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, রমজান ঘিরে নিত্যপণ্যের চাহিদা বেড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে স্বল্প-আয়ের মানুষ। এ অবস্থায় সাশ্রয়ী মূল্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য পেতে গভীর রাত থেকেই সরবরাহকারী ট্রাকের সামনে ভিড় করতে দেখা যায় শত শত নারী ও পুরুষকে। কেউ কেউ আবার সেহরি খেয়েই পণ্যের আশায় লাইনে দাঁড়িয়ে যান। সকাল গড়িয়ে বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে তাদের। ট্রাক থেকে প্রতিদিন পণ্য পান চারশ’জন। কিন্তু লাইনে দাঁড়ান ছয় থেকে সাত শতাধিক মানুষ। তবে অনেকেই পরিবারের একাধিক সদস্যদের দিয়ে পণ্য নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ফলে অনেক মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের পণ্য বিক্রির দিনে ২-৩ দিন ধরে ৬-৭ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও নিত্যদ্রব্য কিনতে না পেরে খালি হাতে বাসায় যেতে হয়। এছাড়া স্বজনপ্রীতিরও অভিযোগ রয়েছে।
বলা বাহুল্য, টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনলে খরচ কম হয়। এ কারণে কষ্ট হলেও রাতেই এসে লাইনে দাঁড়ায় মানুষ। কিন্তু বিক্রয়কর্মীরা প্রতি কেজিতে ডাল, চিনি ও ছোলা ৫০ গ্রাম করে কম দেন। দুই কেজি ডাল, দুই কেজি চিনি ও এক কেজি ছোলাতেই প্রায় ২৫০ গ্রামের মতো ওজন কম দেন। অন্যান্য পণ্যের মতো ৫০০ গ্রাম খেজুরে ৫০ গ্রামের মতো ওজন কম দেয় টিসিবির ডিলাররা। মানুষের প্রকৃত আয় বাড়ছে না। এ কারণে নিয়মিত টিসিবির ট্রাকের সামনে সুলভে পণ্য কিনতে আসা মানুষের ভিড় বাড়ছে। পণ্যের সরবরাহ বাড়িয়েও অপেক্ষমাণ মানুষের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না টিসিবি। ৫ মার্চ থেকে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে ভর্তুকি মূল্যে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়। ২৮ মার্চ পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলমান থাকবে। আমাদের প্রত্যাশা, একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তির টিসিবি ট্রাকের পণ্য নেওয়া বন্ধে পদক্ষেপ নেবে কর্তৃপক্ষ।
দৈনিক সরোবর/কেএমএএ