ঢাকা, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

অভিযানে নিরপরাধীদের হয়রানিমুক্ত রাখা দরকার

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৪, ০১:০৯ দুপুর  

শিগগিরই দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে পুলিশ বাহিনী। এরই মধ্যে অভিযান পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মন্ত্রণালয় ও জেলা-উপজেলাভিত্তিক টাস্কফোর্স গঠন করে এই অভিযানের ছক পরিচালনা করা হবে বলে জানা গেছে। বেআইনি কর্মকান্ডের অভিযোগ ও অপরাধে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে আটক করা হবে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের। এ ব্যাপারে এরই মধ্যে ৫ হাজার জনের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে সরকারের একটি সংস্থা। আইজিপি মো. ময়নুল বলেছেন, সারাদেশে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদক ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হবে। অপরাধ করলে কারও পার পাওয়ার সুযোগ নেই। রাজনৈতিক পরিচয় দিলেও কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির ঘটনাগুলো প্রতিহত করতে পারি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দলীয় বিবেচনায় এই তালিকা প্রণয়ন করা হয়নি। অপরাধ বিবেচনা করেই তালিকা প্রস্তুত হয়েছে। সরকারদলীয় নেতার পরিচয়ে ও জনপ্রতিনিধির হওয়ার প্রভাব খাটিয়ে অনেক আগে থেকে সন্ত্রাসীদের মদদ দিচ্ছেন অনেকে। ফলে প্রায় প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, ডাকাতি ও খুনের ঘটনা ঘটছে। 

বলা বাহুল্য, গত ১৫ বছরে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন, হয়রানি, দখল বাণিজ্য, অনিয়ম এবং সিন্ডিকেট করে রাষ্ট্রীয় অর্থ তছরুপ করে সমাজকে অস্থিতিশীল করা, কিশোর গ্যাং এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকদের আইনের আওতায় আনতে তালিকায় অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে জানা গেছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর লুটপাট, চাঁদাবাজি এবং দখল বাণিজ্যে সক্রিয় হওয়া ব্যক্তিদেরও নেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি, এই অভিযানে দলমত নির্বিশেষে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সবাইকে বুঝতে হবে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। তাহলেই অভিযান জনসমর্থন পাবে। গণআন্দোলন, বিদ্রোহের মাধ্যমে সরকারের পতন হয়েছে। গত দু’মাসে বাংলাদেশে ব্যাপক মাত্রায় গুজব বেড়েছে। কারণ দীর্ঘ সময় মানুষ বাকস্বাধীনতা পায়নি এবং গণমাধ্যমগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। তখন মানুষ নিয়মিত গণমাধ্যমের ওপর আস্থা হারিয়েছে। এ দীর্ঘ সময়ে তথ্যের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর মানুষের নির্ভরতা বেড়েছে। এ জন্যই মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা দেখছে, সেটিকেই বিশ্বাস করতে চাইছে। আমাদের প্রত্যাশা, প্রকৃত গুজবকারী ও সব ধরনের অপরাধীরাই ধরা পড়বে অভিযানে। এছাড়া নিরপরাধীরা যেন হয়রানির শিকার না হয়, এদিকেও কঠোর দৃষ্টি রাখতে হবে।

দৈনিক সরোবর/কেএমএএ