ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১

আন্দোলন প্রশমনে যথাযথ ব্যবস্থা প্রয়োজন 

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৪, ০৩:২৮ দুপুর  

প্রতি কর্মদিবসেই কোনো না কোনো দাবি নিয়ে সচিবালয়ের ফটকের সামনে এমন বিক্ষোভ হচ্ছে। কর্মীদের ভেতরে প্রবেশ ও বের হতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। সরকার পতনের পর থেকেই ধীরে ধীরে ঘনীভূত হচ্ছে সচিবালয়কেন্দ্রিক মিছিল, বিক্ষোভ ও অবরোধ। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র খ্যাত এই কেপিআই অবকাঠামোর ভেতরে সরকারি কর্মচারীরাও নিয়মিত বিক্ষোভ করছেন। পুলিশের দুর্বল প্রতিরোধ অতিক্রম করে একজোট হয়ে মানুষ ভেতরে ঢুকে যাচ্ছেন, মিছিল করছেন, কর্মীদের বের হতেও বাধা দিচ্ছেন। জনতার অবস্থানের কারণে উপদেষ্টা, সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সচিবালয়ে ঢুকতে বেগ পেতে হচ্ছিল। এ সময় সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্লিপ্ত থাকতে দেখা যায়।

৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেওয়ার পর প্রথম কর্মদিবস ১১ অগাস্ট থেকেই প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা পদোন্নতি, বদলি ঠেকানো, চাকরি স্থায়ীকরণ ইত্যাদি দাবি নিয়ে নিয়মিত মিছিল করে যাচ্ছেন। সচিবালয়ের পশ্চিম পাশের ফটকে নার্স ও মিডওয়াইফরা অবস্থান নেয়। বদলির হয়রানি দূর করা এবং বদলির ক্ষমতা মন্ত্রণালয় থেকে নার্সিং অধিদপ্তরে ফেরত নেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন তারা। মিছিলকারীরা বলেন, “আমাদের নিয়োগের সময় বলা হয়েছে, চাকরিতে যোগ দেওয়ার দুই বছর পর বদলির আবেদনপত্র নার্সিং অধিদপ্তরে জমা দেওয়া যায়। কিন্তু চাকরিতে যোগ দেওয়ার কিছুদিন পর এই ক্ষমতা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ফলে এখন আমরা আর ৫/৬ বছরেও বদলির সুযোগ পাচ্ছি না। প্রতিবন্ধীদের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের অনুমোদন দেওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষক সচিবালয়ের এক নং ফটকে অবস্থান নেন এমপিওভুক্তির দাবিতে। তারা বলেন, “প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য সারাদেশে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১ হাজার ৭৭২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে আমাদের জন্য একটা বিশেষ নীতিমালা করা হয়েছে। সেই নীতিমালা অনুযায়ী আমরা স্কুল প্রতিষ্ঠা করি। মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিটি স্কুলের পরিদর্শন কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু এগুলোর এমপিও হয়নি, আমরা কোনো বেতন পাইনি। তারা আমাদের সঙ্গে প্রহসন শুরু করেছে।”

বলার অপেক্ষা রাখে না, নির্বাচিত সরকারের পতন হওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই সময়ে প্রশাসন স্থবির। এ রকম একটা সময়ে কেন দাবি পূরণের জন্য সচিবালয় অচল করে দেওয়াটা একেবারেই ঠিক নয়। আসলে পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, এই মুহূর্তে দাবি আদায় না হলে যেন তা আর পাওয়া যাবে না। আমার চাই, এই সরকার একটি নীতির মধ্যে আন্দোলনের ব্যবস্থা করুক যাতে কারো সচিবালয়ে আসতে না হয়। এছাড়া আন্দোলন মোকাবেলায় সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নেবে বলে আমাদের বিশ্বাস।