বালেশ্বরে তিনটি ট্রেনের ভয়াবহ দুর্ঘটনা যেভাবে হলো
প্রকাশিত: জুন ০৩, ২০২৩, ০৩:৪৯ দুপুর

ছবি: ইন্টারনেট
ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ২৮৮ জন এবং আহত হয়েছেন আরো অন্তত ৯০০ জন। এই দুর্ঘটনা দুটি যাত্রীবাহী ও একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে কয়েক মিনিটে ঘটে। শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে উড়িষ্যার বালেশ্বর স্টেশন থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বাহানাগাঁ স্টেশনের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
কলকাতাগামী বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস পশ্চিমবঙ্গের দিকে আসছিল। ট্রেনটি সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে উড়িষ্যার বাহানগাঁ বাজার এলাকায় এলে কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এর মিনিট পাঁচেক পর আপ লাইন দিয়ে ওই এলাকা পার হচ্ছিল চেন্নাইগামী শালিমার–চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। হঠাৎ এই ট্রেনের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ সময় পাশের একটি লাইনে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল মালবাহী একটি ট্রেন।
করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে প্রথমে বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগিতে আঘাত করে। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি এরপর আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী ট্রেনের ওপর গিয়ে আছড়ে পড়ে।
বালেশ্বরে দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা কর্নেল এসকে দত্ত জানান, সেনাবাহিনী রাত থেকে উদ্ধারকাজে রয়েছে এবং কলকাতা থেকে আরো সেনা সদস্য ডাকা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্টালিন এরই মধ্যে চেন্নাইয়ে স্টেট ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার পরিদর্শন করেছেন। উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ঘটনাস্থলে রয়েছেন।
এদিকে, দুর্ঘটনার পর হাওড়াগামী ৪২টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে রুট পরিবর্তন করা হয়েছে অনেক ট্রেনের।
ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের মনোযোগ ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানে। ছাড়পত্র পেলেই মেরামতের কাজ শুরু হবে। কিছু মৃতদেহ এখনও অনেক ট্রেনের বগিতে আটকে আছে যা বের করার চেষ্টা চলছে।’
ঘটনাস্থলে পৌঁছে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা। রেল, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং রাজ্য সরকার উদ্ধারকাজে রয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ তদন্তে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
শনিবার তামিলনাড়ুর ডিএমকে’র প্রতিষ্ঠাতা এবং রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এম করুণানিধির ১০০তম জন্মবার্ষিকী। ডিএমকে এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা করেছিলেন, কিন্তু ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে শনিবারের সেসব কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় একদিনের শোক ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। এসময় কোনো উৎসব হবে না। বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডাও বিজেপির সমস্ত কর্মসূচি বাতিল করেছেন।
দৈনিক সরোবর/আরএস