আরো দুই নতুন রুটে চলবে মেট্রোরেল
প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২৩, ০৬:০৯ বিকাল

ছবি: ইন্টারনেট
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাজধানী ঢাকাকে সর্বাধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মহাপরিকল্পনা নিয়েছেন। তারই অংশ হিসেবে নানা যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তুলছেন। সর্বাধুনিক ঢাকা গড়ে তোলার অভিপ্রায় থেকেই মেট্রোরেল চালু করা হয়েছে। বর্তমানে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চলছে। কিছুদিন পরেই আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। এই অংশের কাজ দ্রুত শেষ করা হচ্ছে।
সরকার রাজধানীবাসীর চলাচলে স্বাচ্ছন্দ আনতে উড়ালরেলের সঙ্গে সঙ্গে পাতালরেল নির্মাণেরও উদ্যোগ নিয়েছে। রাজধানীর কয়েকটি রুটেই উড়ালরেল ও পাতালরেল চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এতে ক্রমশ ঢাকা বিশ্বের সর্বাধুনিক শহরে রূপান্তরিত হবে নিশ্চিতভাবেই।
দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল-কমলাপুর রুটের পর সরকার মেট্রোরেলকে উত্তরের পথে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। ইতোমধ্যে এ চুক্তিও সম্পন্ন হয়েছে। কাজ শুরু হচ্ছে আগামী জুলাই মাসে। হেমায়েতপুর-ভাটারা মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার আর্থায়নে দুই রুটে মেট্রোরেল নির্মাণে খরচ হবে ৪১ হাজার কোটি টাকার ওপরে। মেগা প্রকল্প হিসেবে এটি দ্রæত এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর। দীর্ঘদিন ধরেই রাজধানীবাসী জলাবদ্ধতা ও যানজটে হাঁপিয়ে উঠেছিলো। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেই ঢাকাকে আধুনিক নগর হিসেবে প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী হন এবং এ নিয়ে মহাপরিকল্পনা নেন। জলজট ও যানজটের কারণে নগরবাসীর কর্মঘণ্টা নষ্টসহ আর্থিক ক্ষতির পরিমান প্রতি বছর কোনও কোনও গবেষণা প্রতিষ্ঠান মনে করে এক লাখ কোটি টাকারও বেশি।
ফলে যানজট মুক্ত ঢাকা গড়ে তোলা গেলে মানুষের কর্মঘণ্টা যেমন বাঁচবে, তেমনি বিপুল আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচার উপায় বের হবে। এ জন্যেই মেট্রোরেল ও পাতালরেল নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় সরকার। তার মধ্যে টানা কয়েক বছরের মধ্যে মেট্রোরেল নির্মাণ শেষ করে দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চালু করা সম্ভব হয়েছে। নতুন দুই রুট হেমায়েতপুর ও ভাটারায় মেট্রোরেল চালু করা সম্ভব হলে যানজটের দুর্ভোগ অনেক নিচে নেমে আসবে।
জানা গেছে, ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৫-এর উত্তর পথের নির্মাণকাজ শুরু হচ্ছে আগামী জুলাইয়ে। মঙ্গলবার (২৩ মে) প্রথম প্যাকেজের কাজের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ বলেছে, উত্তর পথের নির্মাণকাজ ১০টি প্যাকেজের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে। এর মধ্যে প্যাকেজ সিপি-১ (ডিপো এলাকার ভ‚মি উন্নয়ন)-এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। জুলাইয়ে উদ্বোধনের মাধ্যমে লাইন-৫-এর নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে। গাবতলী, মিরপুর-১০, কচুক্ষেত, বনানী, নতুনবাজার সড়কের নিচ দিয়ে যাবে এ রুটের একটি অংশ। আর হেমায়েতপুর থেকে আমিনবাজার এবং নতুনবাজার থেকে ভাটারা অংশ তৈরি করা হবে সড়কের ওপর দিয়ে। পাতাল ও উড়াল সমন্বয়ে লাইনটির দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১৩.৫০ কিলোমিটার পাতাল এবং ৬.৫০ কিলোমিটার হবে উড়াল।
এমআরটি-৫-এর পাতাল অংশে ৯টি এবং উড়ালে পাঁচটি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে মাটির নিচে স্টেশন থাকবে যথাক্রমে গাবতলী, দারুসসালাম, মিরপুর-১, মিরপুর-১০, মিরপুর-১৪, কচুক্ষেত, বনানী, গুলশান-২ ও নতুনবাজার।
প্রকল্পটির কাজ ২০২৮ সালের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা আছে সরকারের। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। এ প্রকল্পেও ঋণ সহায়তা দিচ্ছে জাইকা। সরকার দেবে ১২ হাজার ১২১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আশা করা যায়, দিয়াবাড়ি-মতিঝিল মেট্রোরেল রুটের পর হেমায়েতপুর ও ভাটারার মেট্রোরেল রুট ঢাকাকে আধুনিক শহরে রূপান্তরের পথে বহুলাংশে এগিয়ে নেবে।
দৈনিক সরোবর/এমএইচ