নাগালে আসছে না দাম, ভরা মৌসুমেও উত্তপ্ত আলুর বাজার
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩, ০৭:৪৩ বিকাল

সারাদেশে চলছে এখন আলুর ভরা মৌসুম। ভরা মৌসুম অথচ বাজারগুলোতে আলুর দাম এখন অন্য সময়ের থেকে সর্বোচ্চ। এতে যেমন বিরক্ত ক্রেতা, তেমনি বিক্রেতারাও। যেন কোন এক অদৃশ্য কারণে এ পণ্যটি নাগালের মধ্যে আসছে না। বাজার সংশ্লিষ্টরা আলুর এ দামকে অযৌক্তিক বলছেন।
শুক্রবার রাজধানীর শান্তিনগরসহ আশপাশে সেগুনবাগিচা ও ফকিরাপুল বাজার ঘুরে দেখা যায় আলুর বাড়তি দাম। অর্থাৎ ৭০ টাকার নিচে এখন কোনো আলুই মিলছে না। ভালো (বাছায় করা) আলুর দাম ৮০ টাকা প্রতিকেজি।
এতে করে দেখা যায়, গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এখন আলু চারগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তালিকানুযায়ী, গত বছর এসময় আলু ১৬-২২ টাকার মধ্যে ছিল।
চলতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে হঠাৎ বাড়তে শুরু করে আলুর দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজিতে আলুর দাম ৩৫-৩৬ টাকা (হিমাগার পর্যায়ে ২৬-২৭) বেধে দেয়। সেই সঙ্গে আমদানির অনুমতি এবং দাম স্থিতিশীল রাখতে অভিযান শুরু করে প্রশাসন। জেলায় জেলায় হিমাগার পর্যায়েও তদারকি করা হয়। কিন্তু বাজারে এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। উল্টো দাম আরো বেড়েছে। ৫০ টাকার নিচে নামেনি আলু।
শান্তিনগর বাজারের ব্যবসায়ী আক্কাছ মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি সেখানে ২০ বছরের বেশি সময় সবজি বিক্রি করছেন। আলুর বাড়তি দামে বিব্রত তিনিও। আগে কখনো ভরা মৌসুমে এত দামে আলু বিক্রির রেকর্ড নেই তার।
এ ব্যবসায়ী বলেন, মৌসুমের সময় জীবনে কখনো এত দামে আলু বিক্রি করিনি। ভালো লাগে না। খালি খালি কাস্টমারের সঙ্গে তর্ক হয়। কী করবো বলেন? বেশি দামে কিনে কমে বিক্রি করবো কীভাবে?
তিনি আরো বলেন, আলু যখন নতুন আসে, তখনকার কথা ভিন্ন। এখন তো ভরা সিজন। এত দাম কেন, আমার নিজেরই মাথায় খেলে না।
সেগুনবাগিচা বাজারের বিক্রেতা মাহাবুব আলম বলেন, এক বস্তা (৭০ কেজি) নতুন আলুর দাম এখন চার হাজার ৮০০ টাকায় কেনা। এরপর পরিবহন ও খাজনাসহ দাম পড়ে ৭২ টাকা কেজি। এরমধ্যে প্রায় ১০ কেজি আলু থাকে একদম ছোট ও খারাপ মানের। যেগুলো আলাদা করে কম দামে বিক্রি করতে হয়। যে কারণে ৮০ টাকার নিচে আলু বিক্রি করলে লাভ হবে না।
আলুর দামের বিষয়ে কথা হয় কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমানের সঙ্গে। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এখন বাজারে কোনো ব্যালেন্স নেই। কোথাও সিন্ডিকেট কাজ করছে, কোথাও মুদ্রাস্ফীতির পরিবেশ কাজে লাগিয়ে অতি মুনাফালোভীদের সক্রিয় করা হয়েছে। আলুর ক্ষেত্রে যতটা সমস্যা রয়েছে, তার চেয়ে বেশি সমস্যাকে কাজে লাগিয়ে অবৈধ মুনাফা করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এ আলু নিয়ে সরকার কিছুদিন হৈচৈ করেছে। কিন্তু ক্রেতা প্রতারণার নানা ক্ষেত্র এখন বাজারে। সেই ক্ষেত্রে আইন আরো কার্যকর প্রয়োজন।
দৈনিক সরোবর/এএস