ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

আলু-পেঁয়াজ-ডিম

বেঁধে দেওয়া দাম কার্যকর হয়নি তিন সপ্তাহেও

সরোবর প্রতিবেদক  

 প্রকাশিত: অক্টোবর ০৬, ২০২৩, ০৩:৪৯ দুপুর  

অযৌক্তিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছিল সরকার। কিন্তু তিন সপ্তাহেও তা হয়নি কার্যকর। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য। উল্টো সেঞ্চুরির পথে পেঁয়াজের দাম।

১৪ সেপ্টেম্বর জরুরি তিনটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের আলোকে আলুর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৫-৩৬ টাকা, দেশি পেঁয়াজের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬৪-৬৫ টাকা আর ডিমের পিস সর্বোচ্চ ১২ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা। ফুটপাত কিংবা ভ্যানগাড়িতে কিছু নিম্নমানের আলু পাওয়া যাচ্ছে ৪০ টাকায়। যখন আলুর দাম ২৫-৩০ টাকা কেজি ছিল তখন এসব নিম্নমানের আলু ১৫-১৮ টাকা দিয়েও কিনত না ক্রেতারা।

সরকার দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার সময় অর্থাৎ ১৫-২০ দিন আগে দেশি পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০-৮৫ টাকা। কিন্তু শুক্রবার (৬ অক্টোবর) তা বিক্রি হতে দেখা যায় ৯০-৯৫ টাকায়। কিছু নিম্নমানের পচন ধরা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। বাধ্য হয়ে এসব পেঁয়াজেই বেশি ঝুঁকছেন সাধারণ ক্রেতারা।

এদিকে ডিমের দাম প্রতি পিস ১২ টাকা বা প্রতি ডজন ১৪৪ নির্ধারণ করা হলেও খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার বিভিন্ন মুদির দোকানে ডিমি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকা ডজন। দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরপরই সুপার শপগুলোতে আলু-পেঁয়াজ না থাকার খবর পাওয়া গেছে। কোনো কোনো এলাকার সুপার শপে পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই।

খুসরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার যে খুচরা দর নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেই দামে তারা পাইকারিতেও কিনতে পারেন না। রাজধানীর মুগদা এলাকার আলু ও পেঁয়াজের দোকানদার আলম বলেন, আলুর দাম ৫ টাকা কমে বিক্রি করতেছি। আগে ৫০ টাকা বিক্রি করেছিলাম আজকে ৪৫ টাকা। ৩৬ টাকা কেমনে বিক্রি করুম। ওই দামে তো আমরা কিনতেও পাই না। বেচুম কেমনে।

আরেক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বলেন, ৯০ টাকা পেঁয়াজ বিক্রি কইরা ১০ টাকাও লাভ হয় না। দোকান ভাড়া, ভ্যান ভাড়া, খরচ তো আছেই। সরকারের দাম এইডা আমাদের বইলা কী হইবো। যারা পাইকারী বিক্রি করছে তাদের জিগান। 

মুদি দোকানদার মিঠু বলেন, ১৫০ টাকা বিক্রি করলেও আমি ডিমে তেমন লাভ করি না। ডিম রাখছি শো হিসেবে। যেন কাস্টমার না ঘুইরা যায়। যখন ১১০-১২০ টাকা ডিম ছিল তখন কিছুটা লাভ হইত শতে এক-দেড়শ টাকা। এখন সেই লাভের মুখ দেখি না।

ক্রেতারা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দাম লোক দেখানো ছাড়া কিছুই নয়। তরিকুল নামে এক ক্রেতা বলেন, সরকার ফাও দাম ঠিক কইরা দিছে। শুধু খবরেই দেখি। বাজারে যা আগের দাম তাই। আলু ও পেঁয়াজ খাওয়া কমাই দিছি। আগে এক সপ্তাহে ৩-৪ কেজি আলু কিনতাম। এখন কিনি ২ কেজি। পেঁয়াজ কিনি এক কেজি।

অপরদিকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে অভিযান অব্যাহত রেখেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। বৃহস্পতিবার পণ্যের মূল্য কারসাজির অভিযোগে ৯৫ প্রতিষ্ঠানকে ৪ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করেছে সংস্থাটি। দিনভর ভোক্তা অধিকারের ৩৯ টিম ৩৭টি জেলায় একযোগে অভিযান চালিয়ে এই জরিমানা করে।

দৈনিক সরোবর/এএস