ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

পদ ছাড়াই লাখো মানুষ আমার সঙ্গে রয়েছে: জাহাঙ্গীর

গাজীপুর প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২৩, ০৯:০৪ রাত  

বরখাস্তকৃত সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, আমার কোনো পদ নেই। তারপরও লাখ লাখ মানুষ আমার সঙ্গে রয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ একসঙ্গে হয়ে গাজীপুরে ভোটের কাজে আসছেন। আপনারা যুদ্ধ করতে যেখানে আণবিক বোমা ব্যবহার করছেন, সেখানে আণবিক বোমার কোনো দরকার ছিল না।

মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুর মহানগরের ছয়দানা (মালেকের বাড়ি) এলাকায় নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুনসহ তার সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন। 

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দীর্ঘ ১৮ মাস আমি চোখের পানি ফেলেছি, এখন আর চোখের পানি ফেলব না। ১৮ মাস আমি বিভিন্নজনের ঘরের দরজায় ঘুরেছি। আমি আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে দলের কেন্দ্রীয় প্রত্যেক নেতার অফিসে অফিসে, ঘরের দরজায় গিয়েছি। কিন্তু কেউ আমাকে সুযোগ দেয়নি। আমার সত্য তথ্যটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করতে দেওয়া হয়নি। পার্টির কর্মীরা যদি কেউ বিপদে পড়েন তবে স্থানীয়, জাতীয় বা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তা নিয়ে আলোচনা করেন, সমাধান করেন। কিন্তু তা তারা করেনি।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় নেতারা আসছেন গাজীপুরে, আপনাদের বলবো দাওয়াত খেয়ে যান। কিন্তু গাজীপুরের মানুষকে আপানার থ্রেট দিয়েন না। আর আপানারা নেতা, আমরা কর্মী। কোনো সংস্থা দিয়ে, কোনো পেশি শক্তি দিয়ে আপনারা কর্মীর বাসায় দিনে রাতে যাচ্ছেন, থ্রেট দিচ্ছেন, মোবাইল করছেন। এটাকে ভোটের পরিবেশ বলে না।

আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার মা জায়েদা খাতুন। উনি একজন সংগ্রামী নারী। তিনি নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। জন্মের পর থেকেই আমার মা আমাকে ছাত্রলীগ করার জন্য, আওয়ামী লীগ করার জন্য যে শিক্ষা দিয়েছেন, সে শিক্ষা নিয়ে আমি গাজীপুরে আওয়ামী লীগের পরিবার এবং আওয়ামী লীগে থেকে কাজ করেছি। ছাত্রজীবন থেকে আমি আমার সংগঠনের আদর্শ নিয়ে নিয়মনীতির বাইরে কোনো দিন চলি নাই। আমি ৬ বছর গাজীপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। আমাকে ২০১৮ সালে নৌকা দিয়েছে। সেই নৌকা নিয়ে আমি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করেছি। আওয়ামী লীগসহ নগরবাসী সবাই আমাকে ভোট দিয়েছে, সহযোগিতা করেছে। আমি নির্বাচিত হয়েছি।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ তিন বছর মেয়রের দায়িত্ব পালন করার পর যেখানে আমার গাজীপুরের কোনো মানুষ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেনি। কিন্তু একজন মানুষ আমার বিরুদ্ধে বলেছে। সকল নেতৃবৃন্দ আমাকে বলেছে তুমি কোনো অন্যায় করো নাই। তোমার জিনিসটা সমাধান হয়ে যাবে, আমরা বলবো। কিন্তু দুঃখের বিষয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে কেউ সঠিক খবরটি পৌঁছায়নি এবং উপস্থাপন করেনি। মেয়র থাকা অবস্থায় আমি যেসব কাজ করেছি সব কাজ সরকারি নিয়ম মেনেই করেছি। তারপরও আমার মেয়র পদ বাতিল বা স্থগিত হয়ে গেল।

সাবেক এই মেয়র বলেন, আমি কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সত্যটা জানান। তিনি সত্যটা জানুক। উনার নেতা-কর্মীর ওপর এখানে হয়রানি করা হচ্ছে, অবিচার করা হচ্ছে। আজমত উল্লাহকে মনোনয়ন দিয়েছে। সে আমার ক্ষতি করার কাজে জড়িত ছিল। সেজন্য আমার মা আমাকে বলেছেন, তোমার ওপরে যে অবিচার করা হয়েছে, গাজীপুরের ১২ লাখ ভোটার এবং ৪০ লাখ মানুষের ওপর অবিচার করা হয়েছে।

পুনরায় বহিষ্কারের বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক। একজন সমর্থককে বহিষ্কার করতে আপনাদের কেন্দ্রীয় কমিটি কেন লাগবে? আমি আবেদন করব আমাকে দলের সমর্থক হিসেবে থাকার জন্য আমাকে জায়গা করে দেন। ক্ষমতার জন্য না, পদের জন্য না। আমার বিরুদ্ধে যে অবিচার করা হয়েছে সেই সত্যটা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমি আমার মায়ের সঙ্গে রয়েছি।

ইভিএম নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইভিএম ভালো না খারাপ সেটা আগামী ২৫ মে (নির্বাচনের দিন) দেখতে পারবেন। তখন আপানারাই বলবেন ভালো না খারাপ।

দৈনিক সরোবর/আরএস