ধান ক্ষেতে জাতীয় পতাকা, সবজি ক্ষেতে স্মৃতিসৌধ
প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০২৩, ০৪:২৩ দুপুর

পাখির চোখে সবুজের প্রান্তরে জাতীয় পতাকা আর পাশের মাঠে রঙিন সবজিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে স্মৃতিসৌধ ও বাংলাদেশের মানচিত্র। শেরপুরের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা স্বাধীনতার মাস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা, স্মৃতিসৌধ ও মানচিত্রের আদলে সবজি ও ধান ক্ষেত সাজিয়েছেন।
ধানের মাঠে ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্য, ৯৬ ফুট প্রস্থ ও ৩২ ফুট বৃত্তের ব্যাসার্ধের জাতীয় পতাকা তৈরি করেছেন ইনস্টিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ধান ক্ষেতে জাতীয় পতাকা, সবজি দিয়ে সাজানো স্মৃতিসৌধ ও মানচিত্র দেখতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
এবারই প্রথম নয়, এর আগেও বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে সবজি দিয়ে পতাকা বানিয়েছিলেন কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। সম্প্রতি জনসাধারণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক এমপি।
শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) এর প্রায় ৪৩ একর জমির বিশাল এলাকায় ধান ও সবজির প্রদর্শনী প্লট। এরমধ্যে সবার দৃষ্টি কাড়ে বিশাল এক পতাকা। পতাকার সবুজ অংশ বঙ্গবন্ধু-১০০ ও হাইব্রিড এবং মাঝখানে বৃত্তের লাল অংশ দুলালী সুন্দরী ধানের চারা দিয়ে সাজানো হয়েছে। পাশেই সবজির প্লটে লাল শাক ও পাট শাকের চারা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ।
ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী নাজমুন-নাহার বলেন, স্যারদের সহযোগিতায় এমন সুন্দর একটা কাজ করতে পেরে খুশি আমরা। অনেকেই সৃজনশীল এ কাজ দেখে খুশি হচ্ছেন। অনেক জায়গা লোকজন আসছে, দেখছে ও ফটোসেশান করছে।
খেত দেখতে আসা স্কুলছাত্র সাঈম আহম্মেদ লিজান জানান, দেখে খুব ভালো লাগল। অনেক সুন্দর হয়েছে। ডিসেম্বরেও আমি এসেছিলাম পতাকা দেখতে।
যোগিনী মুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য কবি আলমগীর আল আমিন বলেন, এমন একটি নান্দনিক কাজের জন্য এখানকার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রশংসা পাওয়ার দাবিদার। তাদের কাজ দেখে সত্যিই আমি খুশি হয়েছি। নতুন প্রজন্মের জন্য এসব সৃজনশীল কাজ মহান মুক্তিযুদ্ধের বার্তা দেবে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুকে জানতে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শেরপুর জেলায় এটাই ব্যতিক্রমী ও প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করায় প্রশংসা জানিয়েছেন সরকারদলীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক। তিনি বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েদের সত্যিকারের ইতিহাস জানতে হবে। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধকে জানাতে এখানে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এতে আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পেয়েছি। এবার আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (এটিআই) এর মতো আরো সবাইকে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করার দরকার।
কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইফুল আজম খান জানান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের কোথাও এখন পতিত জায়গা নেই। সবখানে সবজি ও বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করছি। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের আমরা সবসময় বাস্তবমুখী শিক্ষায় উদ্ধুদ্ধ করি। যার অংশ হিসেবে আমরা বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করছি। গত ডিসেম্বরে বিজয় দিবস উপলক্ষে আমরা সবজি ক্ষেতে জাতীয় পতাকা সাজিয়েছিলাম, যা খুবই সাড়া ফেলেছিল।
দৈনিক সরোবর/ আরএস