ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১

ফরিদপুরে শামা ওবায়েদরের নামে হত্যা মামলা

ফরিদপুর প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৪, ০৮:৩৪ রাত  

বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে ফরিদপুরের নগরকান্দায় কবির ভূঁইয়া (৫৫) নামের এক ব্যক্তির নিহতের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক (পদ স্থগিত) শহীদুল ইসলামের সমর্থক কবির ভূঁইয়াকে (৫০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (পদ স্থগিত) শামা ওবায়েদকে (৫২) আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।  

শনিবার দুপুরে নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে শুক্রবার দিনগত রাত ১টার দিকে নগরকান্দা থানায় নিহত কবির ভূঁইয়ার স্ত্রী মোনজিলা বেগম (৪৪) বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। যার মামলা নং- ০৮।

এ মামলায় ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত হিসেবে ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় শামা ওবায়েদের নাম এক নম্বরে রাখা হয়েছে। তাকে এ মামলায় হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

এ মামলায় এজাহারভুক্ত ৩৬ জনের মধ্যে নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি বাবুল তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মুকুল (৫০) ও তার ভাই মাসুদুর রহমানও রয়েছেন।

ওসি আমিনুর রহমান আরো বলেন, শুক্রবার দিনগত রাত ১টার দিকে নিহত কবিরের স্ত্রী মোনজিলার অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে শামা ওবায়েদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মামলার বিষয়টি এখনও আমার জানা নেই। তবে মামলার কপি হাতে পাওয়ার পর অফিশিয়ালি বক্তব্য দেব। 

ফরিদপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েল বলেন, শামার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে দাগ লাগানোর জন্য তার নাম জড়ানো হয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই প্রমাণ হবে তিনি এতে জড়িত নন। ওই দিন তিনি বাড়িতেই ছিলেন না।

প্রসঙ্গত, বুধবার কৃষক দল নেতা শহীদুল ইসলামের মোটর শোভাযাত্রা করে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা চৌরাস্তা হয়ে নগরকান্দা উপজেলা সদর ও তালমার মোড় হয়ে ফরিদপুর শহরে এসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে নগরকান্দা সদরে শামা ওবায়েদের সমর্থকরা শহীদুল ইসলামের সমর্থকদের ওপর হামলা করে বাজারে সশস্ত্র মহড়া দেয়।  

এ হামলায় শহীদুল ইসলামের সমর্থক নগরকান্দা পৌরসভার ছাগলদী মহল্লার বাসিন্দা কবির ভূঁইয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। পরে শহীদুল ইসলাম নগরকান্দা উপজেলা সদরে না গিয়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের তালমার মোড় এলাকায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দিয়ে শোভাযাত্রা শেষ করেন।  

পরে ওই দিন সন্ধ্যায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেছিলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলি, এ খুনের নির্দেশদাতা শামা ওবায়েদ ইসলাম। স্পষ্টভাবে আমি এ কথা বলছি। তিনিই খুনের মদদদাতা, নির্দেশদাতা।

এ প্রেক্ষাপটে বুধবার রাতেই বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত আলাদা দুই পত্রে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ শহীদুল ও শামা ওবায়েদের সব পদ স্থগিত করেন।  

তবে শামার প্রাথমিক সদস্যসহ ‌সব পদ স্থগিত করলেও শুক্রবার  বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে পাকিস্তানের হাই কমিশনার সৈয়দ আহমদ মারুফের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর পাশে স্পেশাল অ্যাসিসট্যান্ট টু দ্য চেয়ারপারসনস ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য পরিচয়ে উপস্থিত ছিলেন শামা ওবায়েদ।

দৈনিক সরোবর/এমই