ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্রশ্নই আসে না: তথ্যমন্ত্রী

সরোবর প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: এপ্রিল ০৬, ২০২৩, ০৫:৫৫ বিকাল  

মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতে আইনটি করা হয়েছে। কাজেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের প্রশ্নই আসে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, সাংবাদিকরা যাতে এ আইনে হয়রানির শিকার না হয়, সেজন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তবে আমেরিকার আইনের চেয়ে আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সহজ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের হয়রানি প্রশ্ন করা হলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতে আইনটি করা হয়েছে। আমেরিকার আইনের চেয়ে আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সহজ। ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য আমেরিকায় যে আইন আছে, ২০১৫ সালে যেটি করা হয়েছে। পরে ২০২২ সালে সেটি আবার সংশোধন করা হয়েছে। সেখানে সর্বোচ্চ শাস্তি রাখা হয়েছে ২০ বছরের কারাদণ্ড। আমাদের আইনে এতো কারাদণ্ড নেই।

তিনি বলেন, ডিজিটাল অপরাধের জন্য যদি কারো মৃত্যু হয়, তবে আমেরিকার আইনে তাতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড রাখা হয়েছে। যে কারণে আমাদের আইন তাদের চেয়ে অনেক সহজ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাইবার অপরাধের জন্য অস্ট্রেলিয়ার আইনও আমাদের চেয়ে কঠিন। ২০২২ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নতুন করে আরেকটি আইন করেছে। সব দেশেই এ আইন আছে। সুতরাং এ আইন বাতিল করার প্রশ্নই আসে না। সব মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দিতে এ আইন। তবে এ আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সেটি নজর দেওয়া প্রয়োজন। আমরা এ ব্যাপারে সতর্ক আছি। আগের তুলনায় এ আইনে সাংবাদিকরা কম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এখনো হচ্ছেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে এর আগে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আরো কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেটি আইন মন্ত্রণালয় দেখছে। সব আইনেরই অপব্যবহার হয়। কেবল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনই না।

উদহারণ দিতে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ‘আইনজীবীরাই বলেন নারী নির্যাতনের আশি ভাগ মামলা ভুয়া। এভাবে অনেক আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। ’

অপরাধ নিয়ে রিপোর্ট করলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার করার হুমকি দেওয়া হয়। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, যারা অপরাধী, তারা-তো হুমকি দেবেই। কেবল সাংবাদিকদেরই না, অনেককেই হুমকি দেয় অপরাধীরা। যা সমীচীন না। কিন্তু সাংবাদিকরা সাহস নিয়ে কাজ করলে সমাজ উপকৃত হবে।

হাছান মাহমুদ বলেন, সবাইকে একত্রিত করে একটি ঘোষণাপত্র দেওয়া বিএনপির জন্য তো কঠিন কাজ। আবার বিএনপির মধ্যে কয়েকটি ভাগ আছে। তাদের মধ্যে চেয়ারপারসনের ধারা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের ধারা, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ধারা, সংস্কারপন্থীদের ধারা। সব ধারাকে এক-করে কিছু করা—সেটি কঠিন কাজ। সেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে তারা আছে।

এ সময়ে সাংবাদিকদের কল্যাণে সরকারের সচেষ্ট থাকার কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিকদের সহায়তায় সরকার সচেষ্ট, সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। সাংবাদিকরা যাতে কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হন, মন্ত্রী হিসেবে আমি সেই খেয়াল রাখব ও রেখে আসছি। এ বিষয়ে কেউ যদি আমার নজরে আনে, কিংবা আমার নজরে আসে, তখন তাকে সাধ্যমত সহায়তার চেষ্টা করি। মন্ত্রী হিসেবে যেমন আপনাদের সঙ্গে আছি, যখন থাকব না, তখনও থাকব।

বিএনপি জোটের সব শরীকদের নিয়ে একটি ঘোষণা পত্র দিতে চাই, কিন্তু পুরোনো ও নতুন মিত্রদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকার কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, মাঝে মাঝে বিএনপি জোট বড়ো হয়, ছোটো হয়, আকার বড়ো হয়, আবার আকার ছোটো হয়। অ্যামিবার মতো, আকার বড়ো হয়, আবার মাঝেমধ্যে ভাগ হয়ে যায়। বিএনপির জোটও হচ্ছে সে রকম। অ্যামিবা যেমন নিজেকে ভাগ করে দুটি হয়ে যায়, আবার চারটি হয়। দেখা গেল, ওদের ২২ দলীয় জোট ছিল, আবার সেটি ভাগ হয়ে ১২ দলীয় হয়ে গেল। আবার কয়দিন পর শুনি ৫৪ দলীয় জোট। এ জন্যই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব। আবার তাদের মধ্যে ডান, বাম, অতি ডান, অতি বাম—সবই আছে।

দৈনিক সরোবর/ আরএস