ঢাকা, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১

দ্য ওয়াল’র প্রতিবেদন

পুজোর ছুটি বাড়লো বাংলাদেশে

সরোবর ডেস্ক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ০৮, ২০২৪, ০৬:৪৪ বিকাল  

এবার পুজোর চারদিনই বাংলাদেশে বন্ধ থাকছে সরকারি অফিস। যদিও চারদিন ছুটির সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে শুধুমাত্র এ বছরই। দুর্গাপুজোয় বাংলাদেশে একদিন সরকারি ছুটি থাকে।দশমীতে বন্ধ থাকে সরকারি অফিস। এবার দশমী পড়েছে রবিবার। তার আগে শুক্র ও শনিবার বাংলাদেশে সরকারি অফিস বন্ধ থাকে। সেই হিসাবে এবার অষ্টমী থেকে দশমী পর্যন্ত অফিস বন্ধ থাকবে।

মঙ্গলবার সকালে প্রধান উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের  বিশেষ সহকারি মাহফুজ আলম ঢাকায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন।

প্রধান উপদেষ্টার তরফে মাহফুজ আলম ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে ঘোষণা করেন, মঙ্গলবারই সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সপ্তমী অর্থাৎ ১০ অক্টোবরও অফিস ছুটি ঘোষণা করা হবে।

ঘটনাচক্রে মঙ্গলবার দুপুরেই বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সর্বজনীন পুজো কমিটি সাংবাদিক বৈঠকে যে আট দফা দাবি কথা জানান তাতে পুজোয় পাকপাকিভাবে অষ্টমী থেকে দশমী তিনদিন, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবরণা পূর্ণিমায় একদিন ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ইস্টার সানডেতে সরকারি ছুটি ঘোষণার দাবি জানানো হয়।

এবার পুজোর নিরাপত্তা, ছুটি বাড়ানোর দাবিতে প্রবল চাপ তৈরি করে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একাধিক সংগঠন। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদ মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ইতিমধ্যে দু’বার দেখা করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং পুজোর ছুটি বাড়ানোর দাবি জানায়। গত শনিবার দেশের সমস্ত থানায় সরকারের উদ্দেশে দাবিপত্র জমা করে পরিষদ।

অন্যদিকে, ভারতীয় সময় সোমবার গভীর রাতে হোয়াইট হাউসের সাংবাদিক বৈঠকে মার্কিন প্রশাসনের তরফে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়নের ঘটনায় উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সেখানে দুর্গাপুজোর প্রসঙ্গে মার্কিন মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের এই প্রধান ধর্মীয় উৎসব নির্বিঘ্নে পালনের যাবতীয় উদ্যোগ প্রশাসন নেবে, আশা করে আমেরিকা। এই দিকে তাদের নজর থাকবে বলে জানান হোয়াইট হাউসের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মুখপাত্র জন মিলার।

বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, গত বছর দেশে ৩২ হাজার ৪০৮টি সর্বজনীন পুজো হয়েছে। ২০২২-এর তুলনায় প্রায় আড়াইশোটি বেশি। ২০১৫ থেকে ধারাবাহিকভাবে সর্বজনীন দুর্গাপুজোর সংখ্যা বেড়েছে। পরিষদ জানিয়েছে, এবার উল্টো ছবি। দেশব্যাপী অশাম্তি, হুমকি এবং কোনও কোনও এলাকায় বন্যার কারণে এবার পুজোর আয়োজন করা যায়নি। তবে বন্ধ পুজোর সংখ্যা জানাতে পারেনি পরিষদ। তারা জানিয়েছে, রাজধানী ঢাকায় ভিন্ন চিত্র। অশান্তি, হুমকির পরিবেশ সত্বেও ঢাকায় চারটি পুজো বেড়েছে। বাংলাদেশের রাজধানীতে এবার ২৪৮টি সর্বজনীয় দুর্গাপুজো হচ্ছে।

পুজো উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর পুজো কমিটি বলেছে এবারের মতো আতঙ্কের পরিবেশ কখনও পুজোর সময় ছিল না। এই পরিবেশ বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার পরিপন্থী জানিয়ে দুই কমিটি সাংবাদিক বৈঠকে জানান, সরকারের তরফে তাদের কী কী আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কমিটি প্রত্যাশা করে, সরকার ও সেনা বাহিনী নির্বিঘ্নে পুজো করার জন্য দেওয়া যাবতীয় প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে।

সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান গত সপ্তাহে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে গিয়ে নিরাপত্তার আশ্বাস দেন। ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষ অস্থির পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে কুমারী পুজো না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেনাবাহিনী পুজোর চারদিন মঠ ও মিশনের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেওয়ায় কুমারী পুজো করার সিদ্ধান্ত নেন মহারাজেরা। সূত্র: দ্য ওয়াল 

দৈনিক সরোবর/এএস