ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১

সবজির বাজারে নেই বন্যার প্রভাব

সরোবর প্রতিবেদক  

 প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৪, ০৮:৩৭ রাত  

দেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কোনো প্রভাব পরেনি দেশের কাঁচাবাজারে। কয়েকটি ছাড়া সব সবজির দাম রয়েছে আগের মতোই। ইতোমধ্যে যেসব সবজির দাম বেড়েছে সেগুলো বন্যার কারণে বাড়েনি বলে দাবি বিক্রেতাদের। তবে বন্যার প্রভাব পেঁয়াজের বাজারে পড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। দুই-একদিন পরেই তা বোঝা যাবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় আজকের বাজার দর। গত সপ্তাহের তুলনায় আজ কিছু পণ্য ছাড়া বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দামই রয়েছে অপরিবর্তিত।

আজকের বাজারে ভারতীয় টমেটো ১৩০ টাকা থেকে ১৬০ টাকায়, দেশি গাজর ১০০ টাকা, চায়না গাজর ১৫০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১২০ টাকা, শসা ৬০-৭০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, পটোল ৪০-৮০ টাকা,  চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৭০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৮০-৩২০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৩৫-৪০ টাকা, লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা করে।

বাজারে শসা ও ঢেঁড়সের দাম কমেছে ২০ টাকা পর্যন্ত। ঝিঙার দাম কমেছে ১০ টাকা। আর কাঁচা মরিচের দাম কমেছে ২০ টাকা থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত। ধনেপাতার দাম কমেছে ১০০ টাকা। কালো গোল বেগুনের দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। লম্বা বেগুন, লাউ ও চাল কুমড়ার দাম বেড়েছে ১০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। 

সবজি বিক্রেতা ইকরাম হোসেন বলেন, বাজারে এখন পর্যন্ত বন্যার কোনও প্রভাব পড়েনি। যেসব সবজির দাম বেড়েছে সেগুলো রেগুলার যেরকমভাবে বাড়ে সেভাবেই বেড়েছে। আর আমাদের সবজি বেশি আসে উত্তরবঙ্গ থেকে, সেখানে তো আর বন্যা হচ্ছে না। ওদিকে বন্যা হলে আমাদের আর সবজি খাওয়া লাগতো না। তবে বৃষ্টির কারণে সবজির দাম কিছুটা বেশিই থাকে।

আরেক সবজি বিক্রেতা রিয়াজুল বলেন, বন্যার প্রভাব ইনশাআল্লাহ সবজিতে পড়বে না। তাই বলা যায় সবজির দাম এরকমই থাকবে। কাঁচাবাজার তো... স্বাভাবিক সময়ে দাম যে রকম বাড়ে কমে ওরকমই হবে।

এদিকে আজকের বাজারে আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ১১০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আর ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা করে। এক্ষেত্রে দেখা যায় সব ধরনের পেঁয়াজের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। এছাড়া আজকে আলুর দামও রয়েছে একইরকম। লাল আলু ৬০ টাকা, সাদা আলু ৬০ টাকা, বগুড়ার আলু ৭০ টাকা, দেশি রসুন ২০০-২২০ টাকা, চায়না রসুন ২০০ টাকা, চায়না আদা ২৬০ টাকা, ভারতীয় আদা মানভেদে ২৬০ দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, চায়না রসুন, আদা ও ভারতীয় আদার দাম কমেছে ২০ টাকা করে।

বাজারে আলু-পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও চায়না রসুন, আদা ও ভারতীয় আদার দাম কমেছে। তবে পেঁয়াজের বাজারে পড়েছে বন্যার প্রভাব, দাম বাড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিক্রেতারা। বিক্রেতা শরীফ বলেন, বন্যার কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়তে পারে। এটা দুই-একদিন গেলেই বোঝা যাবে। মনে হচ্ছে বাড়বে দাম।

আজকের বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ১০০০-১৮০০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০-৬০০ টাকা, কাতল ৪০০-৫৫০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০-৬৫০ টাকা, চিংড়ি ৭০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি ৫০০ টাকা, কৈ মাছ ২০০-৬০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৮০০ টাকা, শিং ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা ৫৫০-৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০-১২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৬০০-১০০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ৮০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে আজকেও শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত নতুন দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। আজকে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ টাকা কেজি দরে। আর বিভিন্ন দোকানে মুরগির লাল ডিম ১৫০ টাকা এবং সাদা ডিম ১৪৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায় ডিমের দাম বেড়েছে ৫ টাকা করে।

ডিমের দাম বাড়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে খোদ ব্যবসায়ীরাই। খুচরা ব্যবসায়ীরা অভিযোগ তুলেছেন পাইকারি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। 

ডিম বিক্রেতা নিয়াজ হোসেন বলেন, আমরা আড়তদারদের কাছে জিম্মি। ওরা যা ইচ্ছা দাম রাখে। আমরা দাম বাড়ার কারণ জিজ্ঞেস করতে পারি না। আবার অনেক ডিম ভাঙা থাকে, তাই আমাদের ক্ষতি পোষাতে আরো বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।

এছাড়া আজকে ব্রয়লার মুরগি ১৬৮-১৭৫ টাকা, কক মুরগি ২১৩-২২৩ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, আজকে সব ধরনের মুরগির দামই অপরিবর্তিত রয়েছে।

দৈনিক সরোবর/এএস