ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

গরমে বাড়ছে চাহিদা, দামে খুশি চাষিরা

সরোবর প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২২, ০৯:৫৩ সকাল  

টাঙ্গাইলে হাটে আনারস নিয়ে এসেছেন চাষিরা- ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের চাষিরা ৩০ শতাংশ জমিতে আনারসের চাষ করেছেন। এতে এক বিঘা জমিতে ৪০-৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এরই মধ্যে আনারস বিক্রি শুরু করেছেন চাষিরা। প্রচণ্ড গরমে আনারসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ভালো দাম পাচ্ছেন। ৩০ শতাংশ জমির আনারস ১ লাখ ২০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হবে। একই জমিতে হলুদ, আদা ও কচুর চাষ করেছিলেন। সেখান থেকেও ভালো মুনাফা পাচ্ছেন চাষিরা।

অরণখোলা ইউনিয়নের চাষি ইসমাইল হোসেন বলেন, প্রচণ্ড গরমে আনারসের চাহিদা বেড়েছে ব্যাপক। এখন প্রতিটি আনারস ৪৫-৫০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। ভালো দাম পেয়ে আমি খুব খুশি।

শুধু ইসমাইল হোসেন নন, চলতি মৌসুমে টাঙ্গাইলের মধুপুর গড় অঞ্চলে আনারসের ভালো ফলন ও বেশি দাম পাওয়ায় খুশি অন্য চাষিরাও। মধুপুরের আনারস দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে।

মধুপুর উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, এবার এ উপজেলায় আনারসের চাষ হয়েছে ১৬ হাজার ৫৫ একর জমিতে, যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার ৭২৯ একর বেশি। মধুপুর ছাড়াও টাঙ্গাইলের ঘাটাইল, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ও মুক্তাগাছা এবং জামালপুর সদর উপজেলায় আরো ৭ হাজার একর জমিতে আনারস চাষ হয়েছে। আনারসের জমিতে আদা, হলুদ, কলা, কচু ও পেঁপে, যেকোনো তিনটি ফসল চাষ করা যায়।

এসব আনারস মধুপুরের গারো বাজার ও জলছত্র পাইকারি হাটে বিক্রি করা হয়। জুন মাসের শেষদিকে আনারস উঠতে শুরু করে। চলে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত।

জলছত্র হাটে সরেজমিন দেখা গেছে, পাহাড়ি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার বাগান থেকে চাষি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বাইসাইকেল ও ভ্যানে করে আনারস নিয়ে আসছেন পাইকারি হাটে। ব্যবসায়ীরা তাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে ট্রাকে করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছেন।

আনারসচাষি ওমর ফারুক বলেন, এক বিঘা জমিতে ৩ হাজার আনারসের চারা লাগিয়েছিলাম। প্রতিটির পেছনে ১৫ টাকা করে খরচ হলেও প্রতিটি ৪৬ থেকে ৫০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করছি। কৃষি অফিস থেকে আমাদের তেমন সহযোগিতা করে না। আমরা জঙ্গলে থাকি তো, তাই কেউ খোঁজ রাখে না।

আরেক চাষি খোকন মিয়া বলেন, আগে অতিবৃষ্টি, ভাইরাস ও মাটি দূষিত হওয়ার কারণে আনারস নষ্ট হলেও এবার তেমনটি হয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে।

ময়মনসিংহের শিমতলী এলাকার পাইকারি ক্রেতা আতিকুর রহমান ও রফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড গরম। এতে আনারসের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। তাই দামও অনেক বেশি। এক মাস আগেও যে আনারস ২৫-৩০ টাকা দিয়ে কিনতাম, বর্তমানে সেই আনারস ৪৫-৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। চাহিদা বাড়লে দাম বাড়ে, চাহিদা কমলে দাম কমে।’

মধুপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল বলেন, প্রচণ্ড গরম ও ঈদকে কেন্দ্র করে আনারসের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। ভালো দাম পেয়ে খুশি চাষিরা।

দৈনিক সরোবর/এমকে