আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি কী হবে সেটা জনগণই ঠিক করবে: ফখরুল
প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৩, ০৫:১৭ বিকাল

ফাইল ফটো
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, সরকারের কোনো ফাঁদে তারা পা দেবেন না। আন্দোলনের গতি-প্রকৃতি কী হবে সেটা জনগণই ঠিক করবে বলে মনে করেন ফখরুল। আমাদের দেশে বড় আন্দোলন বলতে হরতাল-অবরোধকে বোঝায়, তবে বিএনপি বর্তমানে সচেতনভাবে সেই ধরনের আন্দোলন এড়িয়ে চলছে। তবে ধাপে ধাপে বিএনপির আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে যাবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির এই মুখপাত্র।
চলমান আন্দোলনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে শুক্রবার বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফখরুল এসব কথা বলেন।
আন্দোলন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে আন্দোলনকে ‘চূড়ান্ত পর্যায়ে’ নেওয়ার জন্য দলের নির্দেশনা দেওয়া আছে। যেকোনো মূল্যে আমরা আন্দোলনের মাধ্যমেই এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করা এবং সেই নির্বাচনের মাধ্যমে ‘জনগণের একটা সরকারকে প্রতিষ্ঠা’ করা - এটাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। সেই নির্দেশনাই আমাদের মাঠ পর্যায়ে নেতাকর্মী সকলের কাছে যাচ্ছে।’
বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ যে দাবিগুলো নিয়ে আন্দোলনের করছে সে ব্যাপারে সরকারের অবস্থান এখনো কঠোর। নির্বাচনের আগে সরকারকে ‘বাধ্য করার’ মতো আন্দোলন গড়ে তোলাই এখন বিএনপির সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। এ অবস্থায় আন্দোলন কীভাবে এগিয়ে নেওয়া হবে? সে প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই এ পরিবর্তন সম্ভব হবে।
‘জনগণই নির্ধারণ করবে তাদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যেকোনো সময়ে কোন ধরনের আন্দোলনে তারা যাবে। আমাদের দেশে আন্দোলন বলতেই আপনার হরতাল অবরোধ এ সমস্ত বোঝায় এর আগে থেকেই। আমরা এই কর্মসূচিগুলো কিন্তু অত্যন্ত সচেতনভাবেই পরিহার করছি এবং আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে, শান্তিপূর্ণভাবেই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই।’
সারাদেশে জেলা পর্যায়ে নতুন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার ও শনিবার অর্থাৎ ১৯ ও ২০ মে ১৮টি জেলায় এই কর্মসূচি পালিত হবে। এছাড়া ২৬ মে ১৭টি জেলায় ও ২৭ মে বিএনপির ১৫টি জেলায় জনসমাবেশ করবে। এ প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আমরা আবার জনগণের কাছে যাচ্ছি, জনগণকে সংগঠিত করছি। জনগণের যে দাবি অর্থাৎ এ সরকারের পদত্যাগ, সংসদকে বিলুপ্ত করা, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেওয়া এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন করার দাবিতে আমরা জনগণকে সংগঠিত করছি।’
আগামী দিনের আন্দোলনের রাজনীতিতে খালেদা জিয়া কি দৃশ্যমান হবার সম্ভাবনা আছে? এ প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বিবিসিকে বলেন, ‘প্রশ্নই ওঠে না। এখনতো প্রশ্নই ওঠে না।’
ফখরুল বলেন, ‘নিঃসন্দেহে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখনো বন্দী অবস্থায় আছেন। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় আছেন। সুতরাং তার ব্যাপারে সঙ্গতভাবেই আপনি জানেন যে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্বেই দল পরিচালিত হচ্ছে এবং সেভাবেই আমরা কাজ করছি।’
আন্দোলন কর্মসূচি ঘিরে তৃণমূলের দাবি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদেরতো সব দিক চিন্তা করেই কর্মসূচি নির্ধারণ করতে হয়। আমাদের স্ট্যান্ডিং কমিটি নির্ধারণ করে এবং সেটা নিঃসন্দেহে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার ছবি সেখানে পাওয়া যায়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এই অবৈধসরকারের কোনো উসকানিতে পা দিতে চাই না। এবারো আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়েই এগোচ্ছি। সে আন্দোলনটা একটা চূড়ান্ত পর্যায় আসবে এবং সে আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই আমরা এ সরকারকে বাধ্য করতে সক্ষম হবো।’
দৈনিক সরোবর/আরএস