ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

ঝরে পড়ছে আম

সরোবর ডেস্ক 

 প্রকাশিত: মে ০৫, ২০২৪, ০৭:০৪ বিকাল  

টানা দাবদাহের মধ্যে মৌসুমি ফসলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমের। শুরুতেই আম ঝরে পড়ায় দুশ্চিন্তায় চাষিরা। এ ছাড়া আমের উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে কৃষি বিভাগ। পুরো এপ্রিল জুড়ে সারা  দেশেই চলছে দাবদাহ। গত দু’দিন কয়েক স্থানে বৃষ্টির দেখা মিললেও তাপপ্রবাহ নিয়ে এখনি স্বস্তির খবর দিচ্ছে না আবহাওয়া অফিস।

এ বছর রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোরে ৯৩ হাজার ২৬৬ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টন। গত বছর এ অঞ্চলে মোট ১২ লাখ সাত হাজার ২৬৩ টন আম উৎপাদন হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এসব জেলার চাষিরা বলছেন, এমনিতে বছরের শুরুতে নানা কারণে আমের গুটি ভাল আসেনি। তারপরে তীব্র গরমে গুটি ঝরে পড়ছে। ফলে মৌসুমে আমের ফলন মার খাবে। যার প্রভাব পড়বে বাজারে।

রাজশাহী: রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, খরা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় স্বাভাবিকের চেয়ে আম কিছুটা বেশি ঝরে গেছে। এ ছাড়া তীব্র গরমে বেশ কিছু আম ফেটেও গেছে। তবে খরার শুরু থেকে যারা বাগানের যত্ন নিয়েছেন; বিশেষ করে নিয়মিত সেচ ও স্প্রে করেছেন তাদের গাছের আম ঠিকঠাক আছে। বাতাসে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে বলা হয় মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। এরপর ৪২ ডিগ্রির উপরে উঠলে তাকে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। এ হিসেব অনুযায়ী, অতি তীব্র তাপপ্রবাহ দেখেছে রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ। এ জেলায় তাপমাত্রার পারদ ওঠে ৪৩ ডিগ্রি পর্যন্ত। বুধবার রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একই তো বৈশাখের শুরু থেকে পুড়ছে রাজশাহী অঞ্চল; দেখা নেই বৃষ্টিরও।

এ অবস্থা কতদিন চলবে? জানতে  চাইলে রাজশাহী আবহাওয়া কার্যালয়ের ইনচার্জ শহীদুল ইসলাম বলেন, ৩১ মার্চ থেকে রাজশাহীতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি শুরু হয়। সেদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সবশেষ ৩০ মার্চ জেলায় মাত্র এক মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। তারপর থেকে আর বৃষ্টির দেখা নেই।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ গাছে আমের মুকুল আসে। মৌসুমের শুরুর দিকে ঘন কুয়াশা ও হালকা বৃষ্টিতে প্রথম দফায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর যে খরা চলছে, তাতে এবার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি আম ঝরে গেছে। বিশেষ করে বড় গাছগুলোতে বেশি আম ঝরছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক উম্মে সালমা বলেন, খরা থেকে আম রক্ষায় চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা আম চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।

এ পরিস্থিতিতে আম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নগরীর খড়খড়ি বাইপাসের চাষি শরিফুল ইসলাম কাদু। তিনি বলছিলেন, প্রথমে আমের বোঁটার রস শুকিয়ে যাচ্ছে; পরে হলুদ আকার হয়ে ঝরে পড়ছে। খরার কারণে আম ফেটেও যাচ্ছে। তবে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত সেচ ও আমগাছে স্প্রে করছি। এ বছর উৎপাদন যেমন কম হবে, তেমনি খরচও বাড়বে। কাশিয়াডাঙ্গার এনতাজ আলী বলেন, আমের জন্য এ সময় বৃষ্টি খুবই প্রয়োজন। বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এবার আমের আকার বেশ ছোট হবে; সেইসঙ্গে উৎপাদনও কমবে। গাছে আম না থাকায় মৌসুমের শুরু থেকে দাম চড়াও থাকবে। রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার আমের অফ ইয়ার; ৬০ শতাংশ গাছে আম রয়েছে। এতে স্বাভাবিকভাবেই আমের ফলন কমবে। প্রতিকূল আবহাওয়া হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হবে। আম রক্ষায় বাগানে নিয়মিত সেচ দেওয়ার পাশাপাশি সকালে বা সন্ধ্যায় গাছে পানি স্প্রে করার পরামর্শ দেন এই কর্মকর্তা।

জয়পুরহাট: প্রচণ্ড গরমে আম ঝরে পরলেও কৃষি বিভাগ থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন জয়পুরহাটের আম চাষিরা। আর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ‘লোকবল কম’ থাকায় সব আম চাষিদের কাছে যাওয়া সম্ভব হয়নি তাদের।
আম চাষের তেমন ‘অজ্ঞিতা’ না থাকায় এবারের তীব্র খরা মোকাবেলা করতে পারেননি জয়পুরহাটের চাষিরা। ফলে টানা দাবদাহে অনেক বাগানের আম ঝরে গেছে। জয়পুরহাট সদর উপজেলার খঞ্জনপুর এলাকার আম বাগান মালিক দেওয়ান শফিউল ইসলাম বলেন, আমি বেশ কয়েক বছর ধরে আম চাষ করছি। বাগানে বিভিন্ন জাতের প্রায় হাজার খানেক আম গাছ আছে। শুরুতে আমের মুকুল ও গুটি ভাল আসলেও প্রচণ্ড রোদ আর তাপপ্রবাহে বেশিরভাগ আমের গুটি ঝরে গেছে। এ ব্যাপারে কোনো প্রতিকার খুঁজে পাচ্ছি না। বুঝতেও পারছি না যে আমগুলো রক্ষার জন্য আসলে কী করব? শফিউলের অভিযোগ, কৃষি বিভাগের কোনো লোকজন আমার বা এলাকা কোনো বাগান পরিদর্শন করতে আসেনি। আর কৃষি বিভাগের গেলেও তারা তেমন কোনো পরামর্শ দেন না।    

বনখুর এলাকার আমচাষি জয় বলছিলেন, তার বাগানে প্রায় ৩০০ আম গাছ আছে। গত বছর সাড়ে ৩০০ মণ আম বিক্রি করেছেন। কিন্তু এ বছর অতি খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে বাগানের প্রায় ৮০ ভাগ আম ঝরে পড়েছে। আর যে ২০ ভাগ আম রয়েছে সেগুলো নানা রোগে আক্রান্ত। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগ থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা বা পরামর্শ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনিও।
 
অনেক বাগান মালিক ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও অভিজ্ঞদের পরামর্শে আম গাছে পানি ছিটিয়ে কিছু রক্ষা করতে পেরেছেন।
কালাই উপজেলার মোসলেমগঞ্জ গ্রামের আব্দুল হাকিম বলেন, অল্প পরিমাণ আম গাছ থাকায় তাদের কেউ কেউ গাছে পানি ছিটিয়ে ভালো ফল পেয়েছেন। তবে বড় বাগানের মত তাদের গাছের আম ঝরেনি। আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর গ্রামের মোজাফফর রহমান, জয়পুরহাট শহরের সবুজ নগর এলাকার আসলাম হোসেনসহ আরো কয়েকজন একই কথা জানান। জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাহেলা পারভীন জানান, সব মিলিয়ে জেলায় প্রায় ৮০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমচাষ হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার গরম একটু বেশি; যা মৌসুমী ফলের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আম ঝরে পড়া রোধে কৃষকদের মাঝে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ ও দলীয় আলোচনা করা হচ্ছে বলে জানান কৃষি অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা। সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের লোকবল কম। তাই সব আম চাষিদের কাছে যাওয়া সম্ভব হয়নি।

নওগাঁ: নওগাঁর পোরশা, সাপাহার ও নিয়ামতপুর, পত্নীতলা, বদলগাছীসহ উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ হয়ে থাকে। তবে গেল চার সপ্তাহ ধরে চলমান তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়েছে আমে। প্রচণ্ড খরায় আম ঝরে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফিকে হয়ে আসছে চাষিদের স্বপ্ন। এ অবস্থায় ফলন এক থেকে দেড় লাখ টন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আম ঝরেপড়া রোধে গাছের গোড়ায় পানি দেওয়াসহ পানি স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। চলতি মৌসুমে এ জেলা থেকে ৫০০ টন আম বিদেশে রপ্তানি করার কথা জানিয়েছে এ বিভাগের কর্মকর্তারা।

পোরশার নিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আম বাগান মালিক এনামুল হক বলেন, গতবারের চেয়ে এবার আমের ফলন অনেক কম। মুকুল আসার সময় অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে এমনিতেই ২০ থেকে ২৫ শতাংশ গাছে আমের গুটি আসেনি। এরপর প্রায় একমাস ধরে চলমান তীব্র দাবদাহের প্রভাব পড়েছে আমে। এতে গাছ থেকে ঝরছে আম। এ ছাড়া আম্রপালি, ল্যাংড়া, ফজলি, বারি-৪, গোপালভোগ ও খিরসাপাত জাতের আমে বিভিন্ন রোগবালাই ও পোকার আক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে; এতে আম কালো হয়ে এক পর্যায়ে ঝড়ে পড়ছে বলে জানান তিনি।

এনামুল হক বলেন, সব মিলিয়ে গত বছরের চেয়ে এবার আমের উৎপাদন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম হবে। তুলনামূলকভাবে বড় গাছে কম আম ধরেছে; তবে কোনো কোনো গাছে একেবারেই নেই।

সাপাহার উপজেলার বাগান মালিক মাসুদ রানা বলেন, এবার মুকুল আসার সময় বৃষ্টির কারণে আমের গুটি কম এসেছে। এরপর তীব্র গরমের কারণে আম ঝরে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পোকার আক্রমণও বেড়েছে। বিভিন্ন ওষুধ ও কীটনাশক ছিটিয়েও ফল পাওয়া যাচ্ছে না।
 
বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমের ফলন ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম হবে। ভাল দাম না পেলে চাষিরা চরম ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে পোরশা উপজেলার নিতপুরের আম চাষি মাহমুদুল হাসান খোকন মনে করেন।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বছর ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এতে প্রায় চার লাখ ৩৩ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দাবদাহে কিছু আম ঝরে পড়লেও আমে আঁটি না আসা পর্যন্ত ফলনে প্রভাবের বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে ঝরে পড়া রোধে প্রতি লিটার পানিতে এক গ্রাম বোরন ও এক গ্রাম দস্তা মিশিয়ে গাছে স্প্রে করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

সাতক্ষীরা: চলতি মৌসুমে তীব্র গরমের কারণে আম ও অন্যান্য মৌসুমি ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে সাতক্ষীরাসহ দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সুলতানপুরের আম চাষি ও ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে বাগানের গাছ পড়ে যেমন আম চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, ঠিক তেমনি তীব্র গরমের কারণে এবার আমরা ক্ষতির মুখে পড়েছি। সুলতানপুর, চাঁদপুর, ফিংড়ী, ধুলিহর, বুধহাটাসহ অন্তত দশটি এলাকার বড় বাগানে আমের ফলন ৪০ ভাগও হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, তীব্র গরমে এসব এলাকার আমে নানা রোগ দেখা দিয়েছে। এতে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হবে।

আশাশুনি উপজেলার চাষি খায়রুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি বাগানে শুয়োপোকার মড়কে তারা দিশেহারা। এজন্য অনেক চাষি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের উদাসীনতাকে দায়ী করলেন ওই এলাকার আবু রায়হান ও রেজাউল ইসলাম।

সাতক্ষীরার কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের সাতক্ষীরা আঞ্চলিক কেন্দ্রের ইনচার্জ শিমুল মণ্ডল বলেন, আম বাগানে মড়কের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের উদ্ভিদ রোগতত্ব বিভাগ সঠিক রোগ নির্ণয়ে কাজ করে চলেছেন। দ্রুত এর কারণ জানা যাবে। তবে শুরুতেই জানতে পারলে রোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। চাষিদের এই ক্ষতির মুখে পড়তে হত না।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, এ জেলায় চার হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যেখান থেকে ৫০ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এ জেলায় এবার আমের ফলন যেকোনো বছরের তুলনায় কম হয়েছে। সম্প্রতি তীব্র গরম থেকে আম রক্ষায় চাষিদের সকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে গাছে পানি না দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা যথাযথভাবে না মানায় আম বেশি ঝরছে বলে দাবি তার। তিনি বলেন, গরম থেকে আম রক্ষায় মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত বাগানে পানি দেওয়ার উপযুক্ত সময়।

দৈনিক সরোবর/এএস