ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বন্ধে রাজি হয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী

সরোবর ডেস্ক

 প্রকাশিত: জানুয়ারী ১২, ২০২৫, ১১:১৭ দুপুর  

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে, গাজায় চলমান সহিংসতা বন্ধ করতে রাজি হয়েছেন ইসরায়েলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তির প্রথম ধাপ সম্পন্ন হলেই যুদ্ধ সমাপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাসের কয়েকটি সূত্র আল আরাবিয়াকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর জেরুজালেম পোস্টের।

আল আরাবিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহুর অবস্থানে স্পষ্ট পরিবর্তন এসেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে যে চুক্তির প্রথম ধাপ সম্পন্ন হলে যুদ্ধ সমাপ্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিছুদিন আগে লেবাননভিত্তিক গণমাধ্যম কেএএন নিউজ এক প্রতিবেদনে বলেছে, কাতার ইসরায়েলকে একটি ইতিবাচক বার্তা পাঠিয়েছে। সেখানে তারা জানিয়েছে, একটি যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত রয়েছে হামাস। কেএএনের ওই প্রতিবেদনে পর আল আরাবিয়া এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।

হামাসের একটি সূত্র কেএএনকে বলেছে, যুদ্ধবিরতিকেন্দ্রিক আলোচনা শুরু করার জন্য বিতর্কিত কিছু বিষয় এড়িয়ে মূল আলোচনা শুরু করা হবে। ওইসব বিষয়ে পরবর্তী পর্যায়ে আলোচনা হবে। এখন অন্যতম বিষয় হলো মিসরীয় সীমান্ত বরাবর অবস্থিত ফিলাডেলফি করিডোর থেকে ইসরায়েলি সেনাদের অপসারণ।

এদিকে গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। সেনাদের বর্বর হামলায় গত ৪৮ ঘণ্টায় আরও ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার পাশাপাশি লেবাননেও প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। একইসঙ্গে ইয়েমেনেও হামলা চালিয়েছে ইহুদিবাদী দেশটি।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা ইয়েমেনের হুথি যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রিত স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ করেছে। ইসরায়েলি হামলার শিকার এই অবকাঠামোগুলোর মধ্যে রাজধানী সানার কাছে অবস্থিত একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং হোদেইদাহ ও রাস ইসার বন্দরও রয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ৪৬ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিরলস এই হামলায় আরও লক্ষাধিক লোক আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সবাই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। অবরুদ্ধ এই ভ‚খণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে।

গত বৃহস্পতিবার চিকিৎসাবিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় নিহতের প্রকৃত সংখ্যা উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানের চেয়ে প্রায় ৪১ শতাংশ বেশি।

দৈনিক সরোবর/কেএমএএ