ঢাকা, সোমবার, ২৬ আগস্ট ২০২৪, ১১ ভাদ্র ১৪৩১

আসন্ন নির্বাচনে ট্রাম্পের ওপর এ হামলায় কতটা প্রভাব ফেলবে

সরোবর ডেস্ক

 প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৪, ১১:১৯ দুপুর  

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট কানে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গুলিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডান কানের উপরের অংশ ফুটো হয়ে গেছে। কার্যত হামলা থেকে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী। তার ওপর এই হামলা নির্বাচনী প্রচারণায় ফেলতে পারে ব্যাপক প্রভাব। এমনকি এই হামলা মার্কিন নির্বাচনী প্রচারণাকে দিতে পারে নতুন আকার।

রবিবার এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসির নর্থ আমেরিকা এডিটর সারাহ স্মিথ বলছেন, হামলায় ট্রাম্পের আহত হওয়া এবং রক্তাক্ত অবস্থায় মুষ্টিবদ্ধ হাত ওপরে তুলে হার না মানার ইঙ্গিত দেওয়া এবং সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টদের মাধ্যমে মঞ্চ থেকে তাড়াহুড়ো করে চলে যাওয়ার অসাধারণ এসব ছবি কেবল ইতিহাস তৈরিই নয় – এসব ছবি আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের গতিপথও পরিবর্তন করতে পারে।

রাজনৈতিক সহিংসতার এই জঘন্য হামলাটি আগামী নির্বাচনের প্রচারণায় অনিবার্যভাবে প্রভাব ফেলবে।

ট্রাম্পের ওপর হামলা এবং রক্তাক্ত হওয়ার এসব ছবি বেশ দ্রুতই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়। এমনকি সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের ছেলে এরিক ট্রাম্পও এসব ছবি পোস্ট করেছেন। সেখানে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, আমেরিকার এই ধরনের যোদ্ধাই প্রয়োজন।

হামলার পরপরই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন টিভিতে হাজির হন এবং সেখানে তিনি বলেন, আমেরিকায় এই ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার কোনও স্থান নেই। তিনি তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য উদ্বেগও প্রকাশ করেন এবং বলেন, তিনি আজ রাতেই ট্রাম্পের সাথে কথা বলবেন।

এছাড়া বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারাভিযানও তাদের সমস্ত রাজনৈতিক বিবৃতি স্থগিত করেছে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের এ সম্পর্কিত টেলিভিশন বিজ্ঞাপনগুলোও সরিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করছে। বাইডেনের প্রচারণা দল স্পষ্টভাবেই বিশ্বাস করে, এই সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আক্রমণ করা অনুচিত হবে এবং এর পরিবর্তে পেনসিলভানিয়ায় যা ঘটেছে তার নিন্দায় মনোনিবেশ করা উচিত তাদের।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক স্পেকট্রামজুড়ে সকল রাজনীতিবিদই এই এক জায়গায় একত্রিত হয়ে বলছেন, গণতন্ত্রে সহিংসতার কোনও স্থান নেই। যদিও এসব রাজনীতিবিদ খুব কম সময়ই একে অন্যের সঙ্গে একমত হতে পারেন।

সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বিল ক্লিনটন এবং জিমি কার্টার সকলেই এই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, হামলায় ট্রাম্প গুরুতরভাবে আহত হননি, এতেই তারা বড় স্বস্তি পেয়েছেন।

তবে ট্রাম্পের কিছু ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং সমর্থক ইতোমধ্যেই এই সহিংসতার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দোষারোপ করছেন। এর মধ্যে একজন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে, (ট্রাম্পকে) ‘হত্যার প্ররোচনা দেওয়ার’ জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে অভিযুক্ত করেছেন।

সিনেটর জেডি ভ্যান্স – যিনি ট্রাম্পের ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার জন্য সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছেন বলে মনে করা হয় – বলেছেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় বাইডেনের রাখা বিভিন্ন বক্তব্য সরাসরি এই ঘটনা ঘটার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।

অন্যান্য রিপাবলিকান রাজনীতিবিদরাও অনুরূপ কথা বলছেন। যা আমেরিকার রাজনীতির এই বিপজ্জনক সময়ে তাদের বিরোধীরা নিন্দা করবেন বলেই মনে হচ্ছে।

ইতোমধ্যেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই ঘটনায় সংঘাতের-রেখা টানা হচ্ছে যা গভীর মর্মান্তিক ঘটনার জন্য খুব কুৎসিত লড়াইয়ে পরিণত হতে পারে। আর এটিই আগামী নভেম্বরের ভোটের আগে নির্বাচনী প্রচারণাকে দেবে নতুন আকার।

দৈনিক সরোবর/এমএস