ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলায় ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত

সরোবর ডেস্ক

 প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫, ০৭:৫১ বিকাল  

জাতিসংঘ পরিচালিত শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএ জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরের উত্তরাঞ্চলে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

সংস্থাটির তথ্যমতে, মঙ্গলবার ইসরায়েলি বাহিনী জেনিনে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং হেবরনের কাছে বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ধ্বংস করেছে।

ইউএনআরডাব্লিউএ জানায়, ২১ জানুয়ারি থেকে ইসরায়েলি বাহিনী জেনিন শরণার্থী শিবির ও আশপাশের শহরগুলোতে সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে, যা এখন অন্যান্য এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে জেনিন, তুলকারেম, নূর শামস ও ফারা শরণার্থী শিবিরগুলো প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে। এটি ২০০০ সালের দ্বিতীয় ইন্তিফাদার পর পশ্চিম তীরে সবচেয়ে দীর্ঘ সামরিক অভিযান।
সংস্থাটির মতে, এই চারটি শরণার্থী শিবিরে প্রায় ৭৬ হাজার ছয়শ’ ফিলিস্তিনি শরণার্থী বসবাস করতেন। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনীর বারবার ধ্বংসাত্মক অভিযানের ফলে এসব শিবির বসবাসের অনুপযোগী হয়ে গেছে এবং এখানকার বাসিন্দারা বাধ্য হয়ে বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন।

মার্কিন গবেষণা সংস্থা আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা-এর তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের চলমান অভিযানে ৭০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪৪ জনই জেনিন, তুলকারেম ও টুবাসে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে প্রাণ হারিয়েছেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।

এদিকে, ইসরায়েল ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউএ-কে দুর্বল করার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং মানবিক সহায়তার পথ আরও সংকুচিত হয়ে পড়েছে।

ইউএনআরডাব্লিউএ আরো জানায়, ২০২৪ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল পশ্চিম তীরে ৩৮টি বিমান হামলা চালিয়েছে। এসব হামলা ও অভিযানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি হয়েছে এবং শরণার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

ইউএনআরডাব্লিউএ ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন গণহারে শাস্তির নীতি পরিহার করা হয়। এছাড়া, সংস্থাটি বলছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞার কারণে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বেসামরিক নাগরিকদের দুর্দশা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। গত ৩০ জানুয়ারি থেকে ইসরায়েল ইউএনআরডাব্লিউএ-এর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখছে না, ফলে সংস্থার কর্মীরা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছেন এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জীবন আরো কঠিন হয়ে উঠেছে।

দৈনিক সরোবর/এএস