ঢাকা, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধের অঙ্গীকার

ইশতেহার বাস্তবায়নে সক্ষম হতে হবে

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩, ০৭:৫৮ বিকাল  

নির্বাচনের আগে ইশতেহার ঘোষণার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে যে প্রতিশ্রুতিদান, সেটির সংস্কৃতি শুরু করেছে বলা চলে আওয়ামী লীগ। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে ‘দিন বদলের সনদ’ ইশতেহার ঘোষণা করে এই সংস্কৃতি চালু করে দলটি। তা পরবর্তী সময়ে প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনের আগে করে যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণসহ ১১ অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ইশতেহার ঘোষণা করেন। ক্ষমতায় এসে এসব অঙ্গীকার পূরণ করতে সক্ষম হলে বাংলাদেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে নিশ্চিত। তবে এর মধ্যে দুটি বিষয় বিশেষভাবে আলোচনার দাবি রাখে। তা হলো একটি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও অন্যটি দুর্নীতি-অনিয়ম।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ নাকাল। অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট পণ্যের দাম হু হু করে বাড়িয়ে দিলেও এর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে খুব একটা দেখা যায়নি। বাজার নিয়ন্ত্রণে কিছুটা দৌড়-ঝাঁপ করতে দেখা গেলেও দাম কমতে দেখা যায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়ী হলে দ্রব্যমূল্য কমানোর যে অঙ্গীকার করেছেন, তা ফলপ্রসূ হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। কারণ তিনি যা বলেন, তা বাস্তবায়ন করেন। অন্যদিকে দুর্নীতি-অনিয়মের লাগাম টেনে ধরা খুবই জরুরি। বিশেষ করে সরকারি দপ্তরে যেভাবে প্রকাশ্যে ঘুষ-দুর্নীতি জেঁকে বসেছে, এর বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর হওয়ার বিকল্প নেই। গত টানা ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে দেশকে যে উন্নতির সোপানে নিয়ে গেছে, তা বিস্ময়কর। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে দুর্নীতির ভয়াবহতা না থাকলে এই উন্নতি-অগ্রগতি আরও বেশি করা সম্ভব হতো। 

নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণাকালে নৌকাকে ভোট দিয়ে জয়ী করার জন্য অনুরোধ করেছেন গণতন্ত্রের মানসনকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১০০ পৃষ্ঠার পুস্তিকা আকারে প্রকাশিত ইশতেহারের চুম্বক অংশ পাঠ করেন টানা তৃতীয় মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী। এ সময় আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশবাসীকে আবারও নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের অবিচল আস্থাই আওয়ামী লীগের শক্তি। এ দেশের জনগণের প্রতি আমাদের রয়েছে অগাধ বিশ্বাস। ২০০৮ সালের ‘দিন বদলের সনদ’, ২০১৪ সালের ‘শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে’ এবং ২০১৮ সালের ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে আমরা আমাদের নির্বাচনী অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়ন করে চলেছি। এ দেশের মানুষের স্বাধীনতা, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা, ডিজিটাল, পরমাণু ও স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ- সবই সম্ভব হয়েছে নৌকায় ভোট দিয়ে। আমাদের আহ্বান, সব ভেদাভেদ ভুলে সম্মিলিতভাবে দেশ ও জনগণের স্বার্থে আপনারা বঙ্গবন্ধুর নৌকা, আওয়ামী লীগের নৌকার পক্ষে রায় দিন। গত ১৫ বছরের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখুন। এটা প্রমাণিত যে, অব্যাহত উন্নয়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখা দরকার।
 
আমরা মনে করি, দেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগের বিকল্প দল সামনে নেই। এর আগে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যে ইশতেহার ঘোষণার মাধ্যমে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা পালনে পুরোপুরি আন্তরিক ও সক্ষম। এ কারণে আওয়ামী লীগের প্রতি মানুষের অসম্ভব আস্থা ও বিশ্বাস। শুধু যদি দুর্নীতি গলা টিপে ধরা যেত এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হতো; তা হলে মানুষের আর কোনো ক্ষোভ, অভিযোগ থাকত না।