ঢাকা, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

জাতীয় সংসদ নির্বাচন 

দেশ মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধে পরিচালিত হবে

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২৩, ০৮:০০ রাত  

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ৭ জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, এ নিয়ে আর কোনো সংশয় নেই। বিএনপি মনে বদ্ধমূল ধারণা ছিল, এ নির্বাচন বানচালে তারা সক্ষম হবেন। কিন্তু অবরোধ-হরতাল দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নির্বাচন অনুষ্ঠান থেকে একচুলও সরানো যায়নি। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় নির্বাচনের ছক বদলে গেছে। নির্বাচন বর্জন করায় আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ অন্য দলগুলোকে নির্বাচনে কিছুটা হলেও সুবিধা এনে দিয়েছে। বিএনপিবিহীন নির্বাচনে ছকও বদলে গেছে। এতে বড় সুবিধা এনে দিয়েছে জাতীয় পার্টির। দলটি ২৮৩টি আসনে ভোট করবে। তবে ২৬টি আসনে সুনিশ্চিত জয় নিশ্চিত করার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে একটি সমঝোতা হয়েছে। আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী লড়াই করবে এসব আসনে। এ কারণে অবশ্য জাতীয় পার্টির ২৬ আসনের প্রার্থীদের শঙ্কা রয়েই যাচ্ছে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে। জাতীয় পার্টি নানা নাটকীয়তার মধ্যদিয়ে অবশেষে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এটি দেশের গণতন্ত্রের জন্য অবশ্য একটি সুসংবাদ। 

আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির আসন ভাগাভাগি নিয়ে অচলাবস্থারও সৃষ্টি হয়েছিল। তখন অনেকে ভেবেছিলেন, জাতীয় পার্টি হয়তো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপি মন ভেঙে পড়েছে। দলটির মনে শেষ পর্যন্ত একটি ক্ষীণ আশা ছিল যে, জাতীয় পার্টি আসন ভাগাভাগি নিয়ে যদি সন্তোষ্ট না হতে পারে এবং এ কারণে নির্বাচনে অংশ না নেয়, তাহলে বিএনপির শক্তি বৃদ্ধি পাবে। বিএনপি ওই আশাতেও ছাই পড়েছে। জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের গণতন্ত্র ধারা বজায় রাখায় যে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করল, তা দেশের গণতন্ত্রাকামী মানুষ নিশ্চিতভাবে খুশি হয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কেমন হবে। এর উত্তরে বলা যায়, জাতীয় পার্টি পূর্ণ শক্তি নিয়ে ভোটের মাঠে থাকবে। এ ছাড়া অন্য দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ভোটযুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন। ফলে ভোটার উপস্থিতি কম হবে, এটি ভাবা কোমামি বলে আমরা মনে করি। 

বলা বাহুল্য, জাতীয় পার্টি দেশের রাজনীতিতে যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। আগামীতে দলটি আরও শক্তি ও সামর্থ্যও অর্জন করতে পারে। তাই বলা যায়, জাতীয় পার্টি কোনো বিভ্রান্তি বা ফাঁদে পা না দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ভালো করেছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতায় ৭ জানুয়ারির ভোটে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে দলটি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বা মহাজোট গঠন না করলেও ২৬টি আসনে সমঝোতায় জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নিতে সম্মত হয়। এ ২৬টি আসনে নৌকা প্রতীকে কোনো প্রার্থী থাকবে না। তবে জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হয়নি। ফলে ২৮৩ আসনে ভোট করবে দলটি। ২৬টি আসনে নৌকা প্রতীক প্রত্যাহার করা হলেও অধিকাংশ আসনেই আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় বিজয়ী হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছে না জাতীয় পার্টি। আমরা বলব, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন যথাসময়ে হতে যাওয়ায় দেশের একশ্রেণির মানুষ খুশি নয়। ছদ্মগণতন্ত্রের যারা দোসর, তারাই খুশি নন। আশা করা যায়, এ নির্বাচনে নির্ঘাত আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ফের ক্ষসতায় আসবে এবং দেশ মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধে পরিচালিত হবে।

দৈনিক সরোবর/কেএমএএ