ঢাকা, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

যশোর ইপিজেড: সরকারকে সাধুবাদ

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৩, ০৯:৪০ রাত  

বর্তমান সরকার ইপিজেড করে মানুষের কর্মসংস্থানের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে দেশের অর্থনীতিকে আরো চাঙ্গা করে তুলবে। মানুষের কর্মশক্তিকে যত কাজে লাগানো যাবে, ততই দেশের অর্থনীতি তার কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।

দেশের কর্মক্ষম মানুষের অভাব নেই। এটা দেশের বড় সম্পদ। এখন প্রশ্ন হলো কতটুকু কাজে লাগানো যাচ্ছে। শিল্পোন্নত দেশে মানুষের কাজের অভাব থাকে না। যে কারণে সেখানে বেকারের সংখ্যা কম। বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে মানুষকে সময় পার করতে হয় না।

বাংলাদেশ এমনিতে কৃষিনির্ভর অর্থনীতির দেশ। কিন্তু শিক্ষিত মানুষ কাজের অভাবে যথন বসে থাকে, তখন দেশেরই অপচয় হয়। তাই বর্তমান সরকার ইপিজেড গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে বেশ আগে থেকেই। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে বহু সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা নেওয়ায় আশার আলো দেখছে মানুষ।

ইতিমধ্যে সরকার যশোর ইপিজেট গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে সাড়ে চার লাখ মানুষের নিশ্চিত কর্মসংস্থান হবে। দেশের পশ্চিমাঞ্চলে এমনিতেই উন্নয়নবঞ্চিত। মানুষের কাজের সুযোগ কম। সরকার যশোর ইপিজেড তৈরি করলে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য বদল হবে তাও নিশ্চিত। যশোরে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যশোর ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সাড়ে চার লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্যোগে প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া ‘যশোর রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ। 

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলায় হবে এই ইপিজেড। সরকারের তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে ১ হাজার ৫৪২ কোটি ৭২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। আর ইপিজেড কর্তৃপক্ষের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ৩৫০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি ২০২৬ সালের ৩০ জুন মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। 

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে ইপিজেড স্থাপনের মাধ্যমে বিনিয়োগ আহরণ, রপ্তানি আয় বাড়ানো ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখার উদ্দেশ্যেই প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে। ৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এই প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)-তে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে। প্রকল্পের আওতায় ৫৬৫ দশমিক ৮৭১ একর ভূমি অধিগ্রহণ এবং ভূমি উন্নয়ন করে  ৪৩৮টি শিল্প প্লট সৃষ্টি করা হবে।

যশোর ইপিজেড গড়ার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে, তাকে আমরা অভিনন্দন জানাই। অনেক আগে থেকেই এমন উদ্যোগ নিলে আরো ভালো হতো। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের জীবন বদলে দেওয়ার ব্যাপারে সরকার বদ্ধপরিকর, তা, এ উদ্যোগই প্রমাণ করে। এতে শুধু দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মানুষ উপকৃত হবে তাই শুধু নয়, গোটা দেশই উপকৃত হবে। 

যএখন আমরা চাইবো, যশোর ইপিজেড গড়ে তোলায় কোনও জটিলতায় যে আক্রান্ত না হয়। যে সময়ের মধ্যে এটি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, সেই সময়ের মধ্যে শেষ করা হোক।

দৈনিক সরোবর/এএস