ঢাকা, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ প্রতিনিধির ঢাকা সফর 

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক পরাশক্তি হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: জুলাই ০৬, ২০২৩, ০৭:২২ বিকাল  

দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের একটি যৌথ প্রতিনিধি ঢাকায় আসে বুধবার (৫ জুলাই)। দেশের আর্থিক খাতের সংস্কার ও গতি-প্রকৃতি এবং আইএমএফের দেওয়া সংস্কার কর্মসূচিগুলোর বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবেন তারা। একই সঙ্গে চলমান ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন (৪৭০ কোটি) ডলার ঋণ চুক্তির দ্বিতীয় কিস্তির বিষয়েও আলোচনা করবেন। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, এটি সংস্থাটির নিয়মিত ভিজিট। তারা মূলত কারিগরি বিষয়গুলোর মূল্যায়ন, পর্যালোচনা, অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবে। এর পর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আসবে আরেকটি (কারিগরি) প্রতিনিধি দল। তারা ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি নিয়ে আলোচনা করবেন।  ৫ থেকে ১৭ জুলাই সফরের এ সময় তারা অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করবেন।

দেশের অর্থনীতির আকার আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ কেন্দ্র করে বিশ্ব অর্থনীতি চাপের মুখে আছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও এই চাপের মুখে পড়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা বারবারই দেশের অর্থনীতিকে গতিহারা হতে দেয়নি, সংকট কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করেছে। দেশের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে দেশের মধ্যেই কতিপয় ব্যক্তি বা অথনৈতিক বিশেষজ্ঞ নানা মন্তব্য করায় এ নিয়ে এক ধরনের বিভ্রান্তিরও সৃষ্টি হয়। সবকিছুর মতো যেমন অর্থনীতিও সমানতালে চলতে পারে না, তেমনি এ কথাটি অনেকেই বুঝতে চান না বা বুঝতে অক্ষম। বৈশ্বিক অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি বদলে যাওয়ার আগে কেউ হয়তো ভাবতে পারেনি এমনটি হবে। কিন্তু সেটিই হয়েছে।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক বিশালতা নিয়ে ক্রমেই মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। এর গুরুত্বটা আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক বুঝতে পারে। তাই সংস্থা দুটি দেশের অর্থনীতিকে আরও বেগবান এবং এর আকার যাতে ক্রমেই বাড়তে থাকে, এ জন্য সার্বিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেÑ এটিও বলা বাহুল্য হবে না। আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতির উচ্চ অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছেÑ এটি যেমন স্বীকার করেছে এবং তার নেতৃত্বের প্রতি প্রগাঢ় আস্থা রেখেই এটি বলেছে। তার পরও বলতে হয়, দেশের আর্থিক খাতের যে অসঙ্গতি, বিশেষ করে অনিয়ম-দুর্নীতি বাসা বাঁধায় এই পরিণতি তা নির্মূলে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের পরামর্শ অবান্তর নয়; বাংলাদেশের অর্থনীতি সর্বোচ্চ অবস্থান ডিঙিয়ে যাক, ওই ভাবনা থেকেই বলা চলে।

বিশ্ব অর্থনীতি প্রচণ্ড মন্দার কবলে পড়ায় বহু দেশের দুর্গতি কতটা তা আর প্রকাশ্য নয়, দৃশ্যমান। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতায় দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আগের মতো চলছে এবং সামষ্টিক অর্থনীতির যে চরিত্রলক্ষণ আমরা দেখছি এতে অন্যরা, বিশেষ করে সরকারের তুখোড় সমালোচক অর্থনীতিবিদররা হতাশ হতে পারেন; আমরা হতাশ নই। চরম প্রতিকূল অবস্থা পাড়ি দিয়ে আসার অভিজ্ঞতা সরকারপ্রধানের রয়েছে। অর্থনীতির গতিপ্রবাহের বেগবান অবস্থা ধরে রাখার প্রজ্ঞা-বিচক্ষণতা তার আছে। আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে যেভাবে গুরুত্ব দিয়ে চলছে, এটিও দিবালোকের মতো সত্য। বাংলাদেশ যে অর্থনৈতিক পরাশক্তি দেশ হওয়ার পথে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে, এটিকে তরান্বিত করার সহায়তায় আর্থিক সংস্থা দুটি পাশে রয়েছে।