নিম্নমুখী মাছ-মুরগির বাজার
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২৩, ০৬:৪৫ বিকাল

রমজানে মাছের বাজার চড়া হলেও ঈদের পর দাম কমতে থাকে। বিভিন্ন মাছ ও মাছের আকার ভেদে ২০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। তবে মৌসুম না হওয়ায় ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে গেছে ইলিশ। এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশ ২০০০ টাকার নিচে নেই। এরপরও স্বল্পতা রয়েছে ইলিশের।
অন্যদিকে ঈদের আগে হঠাৎ করে ৩০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল মুরগির দাম। এখন তা আবারো কমে আগের অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে।
বুধবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেট, খিলগাঁও ও বাসাবো মুগদা হাসপাতাল সংলগ্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
মাছের দাম কম হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন শাহজাহানপুর এলাকার বাসিন্দা ডায়না। তিনি বলেন, এখন মাছের দাম বেশ কম। ঈদের আগে বাজারেই যাওয়া যায়নি। মাছ ব্যবসায়ীরা এক দামে বিক্রি করেছেন মাছ। এখন ক্রেতাদের ডেকে ডেকে বিক্রি করছেন।
তবে ক্রেতার সাধ্যের বাইরে চলে গেছে ইলিশের দাম। বর্তমানে এক কেজি ওজন বা তারচেয়ে বড় ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে ২ হাজার ২৫০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। দুই কেজি ওজনের ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা। চট্টগ্রামের ছোট ইলিশ (সারডিন) বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, এখন ইলিশের মৌসুম না হওয়ায় ইলিশ বাজারে নেই। যারা আগে থেকে কয়েক পিস রাখতে পেরেছেন তারা এখন বেশি দামে বিক্রি করছেন।
মালিবাগ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মো. নাজির হোসেন বলেন, এখন ইলিশের মৌসুম না হওয়ায় দাম চড়া। ইলিশ বাজারে পর্যাপ্ত এলে দাম কমে যাবে। অন্য মাছের দাম ঈদের পরের দিন বেড়েছিল, এখন কমেছে। কাঁচামালের দাম আসলে ওঠা-নামা করে। সরবরাহ বাড়লে কমে যায়, আবার ঘাটতি পড়লে পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যায়। প্রভাব পড়ে খুচরায়।
কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আনোয়ার বলেন, ঈদের পরের দিন কোথাও মাছ ছিল না। তাই সেদিন দাম অনেক চড়া ছিল। এখন মাছ আসতে শুরু করেছে, দামও কমছে। তবে এখনো অনেক মাছের দাম তুলনামূলক বেশি।
অন্যদিকে দাম কমেছে মুরগির। ঈদের আগে ব্রয়লার ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ২৪৫ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়। ঈদের আগে ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়।
খুচরা মুরগি ব্যবসায়ী বুরহান বিশ্বাস বলেন, এখন ঘাটে (পাইকারি বাজার) মুরগির দাম কমেছে। তাই খুচরা বাজারে দাম কম। সেখানে দাম বাড়লে আমাদের এখানেও দাম বেড়ে যায়।
এসব বাজারে বড় আকারের রূপচাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকার মধ্যে। কিছুটা ছোট আকৃতির রূপচাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে। ঈদের আগে বড় রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০ টাকার নিচে পাওয়া যায়নি। ছোটগুলোও বিক্রি হয়েছিল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। কেজিতে ২০ থেকে ১০০ টাকা কমে প্রতি কেজি চাষের শিং আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি শিং ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, দেশি মাগুর ৪৫০ টাকা, পাবদা ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা, রুই ১৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, মলা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কাঁচকি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রায় ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে বোয়াল ও আইড় মাছের দাম। বর্তমানে ভারতীয় বড় বোয়াল বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি, দেশি বোয়াল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, আইড় ৫০০ থেকে ৮০০, দেশি বড় আইড় ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
ঈদের আগের তুলনায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে বিভিন্ন চিংড়ির দাম। এসব বাজারে এখন প্রতি কেজি গলদা চিংড়ি (ছোট) বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, বড় গলদা এক হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাগদা চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। তবে আগের দাম রয়েছে ছোট দেশি চিংড়ির বাজারে। এসব বাজারে ছোট দেশি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে।
বিজ্ঞাপন