মোবাইলে প্রেম, এসে দেখেন প্রেমিক দৃষ্টিহীন
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ০১, ২০২৩, ০৮:২০ রাত

মোবাইল ফোনে গার্মেন্টেস কর্মী রেবা আক্তার সুমির (২৬) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন মো. রাসেল (২৮) নামে এক যুবক। একপর্যায়ে সুমি প্রেমিকের টানে হাজির হন হাতিয়ায় রাসেলের গ্রামের বাড়িতে। এসে দেখেন প্রেমিক দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী।
হতাশ হলেও ফিরে যাননি প্রেমিকা সুমি। নিজের ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়ে দৃষ্টিহীন রাসেলের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাতে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের তালুকদার গ্রামে বিয়ে হয় এ যুগলের।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। রাসেল-সুমিকে দেখতে বিয়ের খবরে এলাকার লোকজন রাসেলদের বাড়িতে ভিড় করছেন।
প্রেমিক দৃষ্টিহীন মো. রাসেল উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের তালুকদার গ্রামের বাসিন্দা। অন্যদিকে, প্রেমিকা সুমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট ইউনিয়নের বাসিন্দা।
রাসেলের বড় ভাই জামসেদ জানান, এ বিষয়ে তারা আগে কিছুই জানতেন না। গত শনিবার হঠাৎ সুমি তাদের বাড়ি এসে হাজির হন। রাসেল দৃষ্টিহীন, তার সংসার চালানোর ক্ষমতা নেই। এসব বলার পরও রাসেলকে বিয়ে করবে বলে সিদ্ধান্তে অটল থাকেন সুমি। পরে দুইজনকে নিয়ে আসা হয় হাতিয়া থানায়। থানা থেকে সুমির বাড়িতে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তার বাবা-মা কেউ সাড়া দেননি। সবশেষ বৃহস্পতিবার দুইজনের সম্মতিতে বিয়ে হয়।
সুমি বলেন, আমার দুটি সন্তান আছে। আগের স্বামী ট্রাকচালক। তার সঙ্গে দুই বছর আগে সম্পর্ক ছিন্ন হয়। এসব জেনেও রাসেল আমাকে বিয়ে করবেন বলে জানান। রাসেল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এটা আমি আগে জানতাম না। চোখে সমস্যা আছে বলে রাসেল আমাকে জানিয়েছেন। কিন্তু একেবারে দৃষ্টিহীন, এটা বলেননি। এখন যেহেতু চলে এসেছি, তাই ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়ে বিয়ে করলাম।
হাতিয়া থানার ওসি আমির হোসেন জানান, সুমির আগের স্বামীর সঙ্গে কয়েকদিন আগে তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর তিনি গার্মেন্টেসে চাকরি করতেন। একপর্যায়ে মোবাইল ফোনে রাসেলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ওসি আরো জানান, সুমির দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী তার অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তারা কেউ আসেননি। পরে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।