ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

পদ্মার চরে স্বপ্ন বুনতে ব্যস্ত চাষিরা

রাজশাহী প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২২, ০৬:১৯ বিকাল  

রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার পানি কমে যাওয়ায় জেগে উঠছে চর। সেই চর নিয়ে চাষিদের মনে রঙিন স্বপ্ন। পেঁয়াজ চাষে সেখানে সম্ভাবনা দেখছেন চাষিরা। চরাঞ্চলের আবহাওয়া অনুকূলে ও রোগ বালাইও কম হওয়ায় পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হবে।

রবিবার সকালে উপজেলার দুর্গম পদ্মারচরে খায়েরহাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন কৃষক পদ্মার বুকে জেগে উঠা চরে কর্মব্যস্ততায় পার করছেন।

কথা হয় খায়েরহাট এলাকার সাহাবুদ্দিনের ছেলে কৃষক সুজন আলীর সঙ্গে। তিনি লেবার দিয়ে পেঁয়াজের জমি পরিচর্যা করছিলেন। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে পদ্মার পানি আগে নেমে যাওয়ায় পেঁয়াজ আগাম রোপণ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে পেঁয়াজের বাজারমূল্য ভালো পাবেন বলে আশা করছেন। তবে অসময়ে পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে কিছু রোপণ করা পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। ২-৩ দিনের মধ্যে পানি নেমে যাওয়ায় রক্ষা পেয়েছি। তারপরও গত বছরের মতো দাম পেলে লাভ হবে।

তিনি আরো বলেন, আমি পদ্মার চরে এক বছরের জন্য চারবিঘা জমি এক লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে লিজ নিয়ে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। বীজ, সার, লেবার চাষ বাবদ আরো এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজ জমি থেকে উঠাবেন।

এদিকে চকরাজাপুর চরের পেঁয়াজ চাষি গোলাম মোস্তফা বলেন, এবার পদ্মার পানি আগে নেমে যাওয়ার কারণে চলতি মৌসুমে আগাম পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। গত বছর তিন বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করে বাজারমূল্য পেয়েছিলেন কেজিপ্রতি ৩৫-৪০ টাকা। এবারো আশা করছেন ওই দামই পাবেন। বর্তমান বাজারে নতুন পেঁয়াজ পাইকারি হিসেবে ৩০-৩৫ টাকা প্রতি কেজি হিসেবে ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে।

একই এলাকার মাহতাব হোসেন বলেন, চরের পলি মাটি খুব উর্বর। চাষাবাদে সার-কীটনাশক কম লাগে। তাই এলাকায় শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে পানি তুলে চরের জমিতে ধানেরও চাষাবাদ হয়। বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি থাকায় এবার চরে পেঁয়াজের আবাদ বেশি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, এ বছর উপজেলায় সর্বত্রই কমবেশি পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। উপজেলার সমতল এলাকার চেয়ে বেশি পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপন্ন হয় পদ্মার চরে। তবে পেঁয়াজ চাষিদের সবসময় পরামর্শ দেওয়া হয়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে উপজেলায় পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় এক হাজার ৬০০ হেক্টর। চাষ হয়েছে দুই হাজার হেক্টর। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে উপজেলার দুর্গম পদ্মার চরে। আগাম পেঁয়াজ চাষিরা ভালো ফলন ও বেশি দাম পাবেন আশা করছেন। পদ্মার চরের পেঁয়াজের গুণগতমান ভালো হওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে পেঁয়াজ কিনতে আসেন ব্যবসায়ীরা।

দৈনিক সরোবর/আরএস