ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১

সুনীতা এবং ব্যারি বুচ কে পৃথিবীতে ফেরাতে স্পেস এক্সকে ভরসা করছে নাসা

সরোবর  ডেস্ক

 প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৪, ০৫:৩৯ বিকাল  

সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সহযাত্রী ব্যারি বুচ উইলমোর মাত্র আট দিনের অভিযানে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ থেকে আরো দীর্ঘতর হল সেই অভিযান। আগামী বছরের আগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত নভোশ্চর সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সহযাত্রী ব্যারি বুচ উইলমোরকে পৃথিবীতে ফেরানো সম্ভব নয় বলে আগেই আভাস মিলেছিল। আলাপ-আলোচনার পর এবার তাতে সম্মতি দিল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।

মহাকাশে দীর্ঘ সময় থাকার ফল মারাত্মক হতে পারে। মনের উপর তো বটেই, শরীরের উপরও প্রভাব পড়ে এতে। তাই এতদিন মহাকাশে আটকে থাকা সুনীতা এবং ব্যারির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। যে মহাকাশযানে চেপে তারা মহাকাশে গিয়েছিলেন, সেটিকে যদি সক্রিয় না করা যায়, তাহলে বিকল্প উপায় বের করা হচ্ছে না কেন, উঠছিল প্রশ্ন।

সেই আবহেই শনিবার জরুরি বৈঠকে বসে নাসা। বৈঠক শেষে জানানো হয়, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসে পৃথিবীতে ফেরানো হবে সুনীতা এবং ব্যারিকে। শুধু তাই নয়, বোয়িং স্টারলাইনার বিকল হয়ে যাওয়া মহাকাশযানে চাপিয়ে ফেরানো হবে না সুনীতা এবং ব্যারিকে। বরং সুনীতাকে ফেরাতে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্সকে ভরসা করছে নাসা।

আগামী মাসে স্পেস এক্সের ক্রু ড্রাগন রকেটটি মহাকাশের উদ্দেশে রওনা দেবে। চার আসন বিশিষ্ট রকেটের দুইটি আসন সুনীতা এবং ব্যারির জন্য খালি রাখা হবে। এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে নোঙর করা রয়েছে বোরিং স্টারলাইনার মহাকাশযানটি। সেটিকে পৃথিবীতে কোনও পাবে ফিরিয়ে আনা যাবে কি না, সেই চেষ্টা চলবে। 

নাসার এই সিদ্ধান্তে জোর ধাক্কা খেল বোয়িং স্টারলাইনার। কেননা, মহাকাশ অভিযানের দুনিয়ায় বেসরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে চরম প্রতিযোগিতা চলছে। বোরিং স্টারলাইনার এবং SpaceX এক্ষেত্রে দুই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। অভিযানের আগে থেকেই বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানটিতে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। যে কারণে পিছাতেও হয় অভিযান। শেষ পর্যন্ত ত্রুটি সারিয়ে ওই মহাকাশযানে চেপেই রওনা দেন সুনীতা এবং ব্যারি। 

কিন্তু মহাকাশে পৌঁছে গেলেও, সেখান থেকে ফিরতে গিয়ে ফের সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। কারণ আবারও বিকল হয়ে যায় বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানটি। হিলিয়াম চুঁইয়ে পড়ার পাশাপাশি, থ্রাস্টারও বিকল হয়ে যায়। ফলে অভিযানের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও, পৃথিবীতে ফেরা হয়নি সুনীতা এবং ব্যারির। আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে আপাতত মাথা গুঁজেছেন তারা। 

এত দিন  পর্যন্ত বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানটিকে চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন সুনীতা এবং ব্যারি। কিন্তু ওই মহাকাশযানটিকে যে আর ভরসা করছেন না নাসার বিজ্ঞানীরা, এবার তা স্পষ্ট হয়ে গেল। বরং তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী স্পেস এক্স-এর হাতেই দায়িত্ব তুলে দিল নাসা, যাতে সুনীতা এবং ব্যারি নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারেন।

গত ৫ জুন যে অত্যাধুনিক সিএসটি-২০০০ বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানে চেপে মহাকাশের উদ্দেশে রওনা দেন সুনীতা এবং ব্যারি। শুরু থেকেই ওই মহাকাশযানে সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। কখনও থ্রাস্টার রকেটগুলো ঠিকভাবে কাজ করছিল না, কখনও আবার ছিদ্রপথে বের হচ্ছিল হিলিয়াম। মহাকাশেও সেই সমস্যা অব্যাহত রয়েছে। 

দৈনিক সরোবর/এমই