ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

‘রাস্তায় নেমে জনগণের শক্তি দিয়েই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে’

সরোবর প্রতিবেদক 

 প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৩, ০৯:৩১ রাত  

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রাস্তায় নেমে জনগণের শক্তি দিয়েই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।

তিনি বলেন, ‘তরুণ, পেশাজীবী, মেহনতি মানুষ জেগে উঠেছে। এখন আপনাদের (পেশাজীবী) জেগে উঠতে হবে, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে। তাই সবাই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসুন, কাজ ছেড়ে রাস্তায় নামুন। মানুষকেও রাস্তায় নামতে উদ্বুদ্ধ করুন। আর রাস্তায় নেমে জনগণের শক্তি দিয়েই আমরা এদের পরাজিত করবো।’

শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপিপন্থি পেশাজীবীদের এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সমাবেশ শেষে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে একটি নীরব পদযাত্রা বের করা হয়। পদযাত্রাটি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে আইনজীবী, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষক, কবি-সাহিত্যিকসহ বিভিন্ন পেশার নেতারা অংশ নেন।

প্রশাসনে নগ্ন দলীয়করণ, দলীয় বিবেচনায় চাকরি ও পদোন্নতি, ভিন্নমতের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, লেখক, সাংস্কৃতিক কর্মী ও কৃষিবিদসহ পেশাজীবীদের চাকুরিচ্যুত, জেল-জুলুম, গুম-খুন বন্ধ, সীমাহীন দুর্নীতিতে জর্জরিত, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সবাইকে জাগিয়ে তুলতে হবে। সবাই জেগে উঠেছে। আমি গতকাল নোয়াখালীতে গিয়েছিলাম, সাধারণ মানুষের ঢল দেখেছি। শ্রমিক, কৃষক ও মেহনতি মানুষের ঢল। এটা বিএনপির মিটিং ছিল না। এটা ছিল কৃষকদের সমাবেশ।’

তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে হুমকি দিয়েছে, ২০১৩ সালের মামলাগুলো আবার শুরু করা হবে। সবাইকেই শাস্তি দেওয়া হবে, এভাবে বলেন তারা। ময়লার ট্রাক পুড়িয়েছি, বোমা মেরেছি, এগুলো করতে হুকুম দিয়েছি- এসব অভিযোগে মামলা। আইন মন্ত্রণালয় থেকে জেলাপর্যায়ের বিচারকদের বলা হয়েছে যে, মামলা দুমাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। দ্রুত বিএনপির যারা নেতা আছেন, যারা নির্বাচন করতে পারেন, তাদের সাজা দিয়ে ভেতরে ঢোকাতে হবে। এদের সঙ্গে আপস? এদের অধীনে নির্বাচন?’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এখন সবচেয়ে বেশি অসহায় বোধ করি ওই বিচারব্যবস্থার কাছে। সবচেয়ে বেশি অসহায় বোধ করি, যখন আমরা কোর্টে যাই। কারণ আমরা সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী।’

ফখরুল বলেন, ‘জাতি আজকে একটা চরম ক্রান্তিলগ্নে। এ ক্রান্তিলগ্নটা কীসের? ক্রান্তিলগ্নটা হচ্ছে, আমাদের অস্তিত্বের। জাতি হিসেবে আমি স্বাধীনভাবে টিকে থাকতে পারবো কি না? জাতি হিসেবে একটি সমাজতান্ত্রিক সমাজ তৈরি করতে পারবো কি না, জাতি হিসেবে আমার কৃষ্টি ও ঐতিহ্য নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো কি না।’

পেশাজীবী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলীর সভাপতি। সঞ্চালনা করেন বিএসপিপির সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরী।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলাম, ডা. আবদুল কুদ্দুস, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন, অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, ডা. মো. আবদুস সালাম, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, কবি আবদুল হাই শিকদার, সাংবাদিক এম এ আজিজ, ডা. এ কে এম আজিজুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান, প্রকৌশলী মো. হানিফ, প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, প্রকৌশলী মো. মোস্তাফা-ই জামান সেলিম, প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান চুন্নু প্রমুখ।

দৈনিক সরোবর/আরএস