ঢাকা, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি প্রতিষ্ঠান উপযুক্ত করে গড়া হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

সরোবর প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২২, ০৩:২২ দুপুর  

ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা শান্তি চাই, যুদ্ধ চাই না। কিন্তু স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে এবং বাইরের শক্তির আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ‘উপযুক্ত’ ভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে।

রবিবার বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এভিয়েশন বহরে মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট এমপিএ-৮৩২২ ও এমপিএ-৮৩২৭ এর সংযোজন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা নেভাল এভিয়েশন হ্যাঙ্গারের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, যুদ্ধ চাই না। কিন্তু বহিঃশক্রর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষার জন্য আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। যাতে আমরা আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সব সময় ধরে রাখতে পারি। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে তৈরি করছি উপযুক্ত করে।’

দুর্যোগে নৌবাহিনী ভূমিকার প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে কোনো দুর্যোগপূর্ণ সময়ে আমাদের নৌ বাহিনী মানুষের পাশে থাকে। বিশেষ করে দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ… ঝড়, জলোচ্ছ্বাস বা যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় সব সময় সাহায্য করে।’

১৯৯৭ সালে ঘূর্ণিঝড়ের পর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নৌবাহিনীর মাধ্যমে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে প্রথমবারের মত দুর্গত ভূমিহীন মানুষের জন্য ঘর ও ব্যারাক হাউজ নির্মাণের কথা মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘সশস্ত্রবাহিনী দেশের সীমানা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রশংসিত হচ্ছে। ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশের যুদ্ধ জাহাজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করছে। এ ছাড়া দক্ষিণ সুদানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কন্টিনজেন্ট অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। শান্তিরক্ষা মিশন ছাড়াও এ বাহিনী নিয়মিতভাবে বহুজাতিক এক্সারসাইজ, বঙ্গোপসাগরে সমন্বিত পেট্রোল, এবং কূটনৈতিক সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের জলসীমার নিরাপত্তাকে সুসংহত করে চলেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নের পাশপাশি দেশের উন্নয়নেও তৎপর। আমরা দেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘খাদ্যে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণতা’ অর্জন করলেও বাংলাদেশের উন্নয়নের গতি ‘অনেকটা শ্লথ হয়েছে’ কোভিড মাহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে। শুধু আমরা না। সারা বিশ্বব্যাপী উন্নত দেশগুলো এখন হিমসিম খাচ্ছে। সেই অবস্থার মধ্য দিয়ে আমাদের চলতে হচ্ছে।’

খাদ্য উৎপাদনে মনোযোগী হওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের নিজেদের সম্পদ দিয়ে নিজেদের মাটি ও মানুষ দিয়েই দেশকে সুরক্ষিত রাখব এবং যার যেখানে যতটুকু সুযোগ আছে, আমাদের খাদ্য উৎপাদনে মনোযোগী হতে হবে।’

‘হয়ত কিছুটা আন্তর্জাতিকভাবে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেওয়ার প্রভাব আমাদের উপর পড়েছে, কিন্তু আমাদের চেষ্টা করতে হবে যে এর থেকে যেন আমরা নিজেরা মুক্ত থাকতে পারি।’

দেশের উন্নয়নে সমুদ্র সম্পদের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমুদ্র সম্পদ আমাদের অর্থনৈতিক কাজে কীভাবে ব্যবহার করতে পারি,  ব্লু ইকোনমির মাধ্যমে, অর্থাৎ সুনীল অর্থনীতি… সেদিকে আমাদের বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।’

স্বাধীনতার পর দেশকে গড়ে তুলতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন তার মেয়ে শেখ হাসিনা। চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নেভাল এভিয়েশন হ্যাঙ্গারে এ অনুষ্ঠানে নৌ বাহিনী প্রধান এম শাহীন ইকবালসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

দৈনিক সরোবর/আরএস