ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১

ভেরিকোজ ভেন: কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা

সরোবর  ডেস্ক

 প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০২৪, ০৪:৫২ দুপুর  

প্রাত্যহিক জীবনে যাদের পায়ে অতিরিক্ত চাপ পড়ে তাদের নানা সমস্যা দেখা দেয়। এমন ব্যক্তিদের শিরায় এক ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। কিছুক্ষেত্রে পায়ের শিরা ফুলে গাঢ় নীলচে রঙের রেখা চামড়ার ওপরে ফুটে ওঠে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ‘ভেরিকোজ ভেন’ বলা হয়। সাধারণত নারীরা এই রোগে বেশি ভোগেন। 

এই রোগের ফলে পা ফুলে যাওয়া, পায়ের পেশীতে টান ধরে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা, চুলকানির মতো সমস্যাও দেখা দেয়। পুরুষের তুলনায় নারীরা এ সমস্যায় বেশি ভোগেন। 

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতে, নারীরা বেশিরভাগ সময়েই পা মুড়ে বসে কাজ করেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রান্নাও করেন অনেকে। এসব কাজের চাপ পড়ে পায়ে। অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায়, শিরা ফুলে নীল হয়ে গেছে। অনেকে একে বাতের ব্যথা বা আর্থ্রাইটিস ভেবে এড়িয়ে যান। কিন্তু পরবর্তীতে যন্ত্রণা বাড়তে থাকে। তখন পা অসাড় হয়ে যেতে শুরু করে। 

ভেরিকোজ ভেন কী? 

চিকিৎসকদের মতে, পায়ের শিরাগুলো সাধারণত দু’টি সারিতে বিভক্ত থাকে। এই শিরাগুলোতে যে রক্তজালক থাকে সেখানে রক্তের প্রবাহ একমুখী হয়। রক্ত প্রবাহের সময়ে, কোনো কারণে যদি শিরার মধ্যে থাকা রক্তজালিকা ঠিকমতো কাজ না করে, তখন রক্ত বিপরীত দিকে প্রবাহিত হতে থাকে। ফলে শিরাগুলোর উপর প্রচণ্ড চাপ পড়ে আর শিরা ফুলে উঠে। ত্বকের উপর দিয়েও শিরা খুব স্পষ্ট হয়ে দেখা দেয়। এই সমস্যাকেই ভেরিকোজ ভেন বলা হয়। এই রোগ হলে ধীরে ধীরে শিরাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। 

ভেরিকোজ ভেনের উপসর্গ কী? 

এই রোগটির অনেক উপসর্গ রয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, পা ফুলে গেলেই অনেকে ভাবেন, ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা হচ্ছে। যদি দেখা যায়, ত্বকের উপরে গাঢ় বেগুনি বা নীল রঙের শিরা ফুটে উঠেছে, তখন বুঝতে হবে এটি আসলে ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা নয়। 

ভেরিকোজ ভেন হলে পায়ের মাংসপেশিতে টান অনুভব হয়। হাঁটাচলা করতে সমস্যা হয়। সব সময় অস্বস্তি হতে থাকে পায়ে, গোড়ালি ফুলে যায়, পায়ের ত্বকে বাদামি দাগছোপ পড়তে থাকে। পায়ের পাতায় সংক্রমণ, ফোঁড়া, চুলকানি হতেও দেখা যায় অনেকের।

ভেরিকোজ ভেনের চিকিৎসা 

ভেরিকোজ ভেন সারতে সময় লাগে। চিকিৎসকদের মতে, আগে থার্মাল অ্যাবলেশন পদ্ধতিতে এই রোগের চিকিৎসা হতো। সেই পদ্ধতি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক ছিল। এখন কাটাছেঁড়া ছাড়াই বিশেষ রকম ইঞ্জেকশন পায়ের শিরায় ফুটিয়ে চিকিৎসা করা হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে রোগী খুব দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন।

দৈনিক সরোবর/এমই