ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১

বন্যার শঙ্কা নেই তিস্তার পাড়ে

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৪, ০৫:৪২ বিকাল  

সিকিমে পাহাড় ধসের কারণে তিস্তা নদীর ওপরে নির্মিত জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে লালমনিহাটের পাঁচ উপজেলার মানুষ বন্যার আশঙ্কা করছেন। তবে পশ্চিমবঙ্গের গজলডোবা বাঁধে পানির চাপ বাড়লেও তিস্তায় বন্যার শঙ্কা নেই। তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

শুক্রবার দুপুর ১২টায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে নদীর পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)। এর আগে, বৃহস্পতিবার সকালে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

এদিকে, তিস্তার মূল নদীতে পানি না থাকলেও বেশ কয়েকটি তীরে পানি বেড়েছে। মূলত ওইসব তীর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেছে কয়েকটি চক্র। যার ফলে ওইসব স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। গত দুই দিনে তিস্তা নদীর ডান তীর লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়া গাছ ইউনিয়নের হরিনচড়া গ্রামে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে।

এতে ভাঙন হুমকিতে রয়েছে শতাধিক পরিবার। নদীগর্ভে চলে গেছে তিনশ বিঘা জমির ধান-সবজিসহ ফসলের খেত। তিস্তা পাড়ে লোকজন ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। এসব স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো লোকজনের দেখা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগও করছেন স্থানীয় লোকজন।

জানা গেছে, গত দুই দিন ধরে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণে তিস্তাপাড়ের হাজারও মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছেন। উজানের ঢল যে কোনো সময় লালমনিরহাটে প্রবেশ করে বন্যার সৃষ্টি হতে পারে—এমন শঙ্কায় নির্ঘুম রাত পার করছেন তারা।

তিস্তাপাড়ের শাহিন মিয়া বলেন, গত দুই দিনে তিস্তার পানি একটু একটু করে বাড়ছে। অনেকে বলছেন, ভারতের বাঁধ ভেঙে তিস্তা নদীতে বন্যা শুরু হবে। তাই দুই দিন ধরে আতঙ্কে আছি। অনেক উঠতি ফসলি নিয়েও চিন্তায় আছি।

এ বিষয়ে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। তিস্তাপাড়ের মানুষদের আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই প্রতিবাদ করছেন। তিস্তার পানি বৃদ্ধি হওয়ার এখন কোনো সম্ভাবনাই নেই।

হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জাকির হোসেন বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে কিছু কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। তবে পানি বিপৎসীমার অনেক নিচে রয়েছে। আপাতত সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছি।

লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, জেলার কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধের কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি বৃদ্ধি হলে এ বিষয়ে আমাদের সর্বাধিক প্রস্তুতি রয়েছে।

দৈসিক সরোবর/এমই