ঢাকা, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

দেশে বাস্তুচ্যুত ১৫ লাখের বেশি মানুষ

সরোবর ডেস্ক 

 প্রকাশিত: মে ০৭, ২০২৪, ০৮:৫৮ রাত  

বাস্তুচ্যুতির তালিকায় এশিয়ায় বাংলাদেশ পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে। শুধু ২০২২ সালেই দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশে ১৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সৃষ্ট দুর্যোগের কারণে এ তালিকায় পৌঁছেছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএমর এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীতে হোটেল শেরাটনে সংস্থাটির ওয়ার্ল্ড মাইগ্রেশন রিপোর্ট-২০২৪ এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি পোপ বৈশ্বিক এই রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচন করেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালেও ভারত ও বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য দুর্যোগ বাস্তুচ্যুতি ঘটেছে। ২০২২ সালে সংঘাতের কারণে এই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি হয়েছে মিয়ানমারে (যা ১০ লাখের বেশি)। এটি দেশটির জন্য সর্বকালের সর্বোচ্চ এবং দেশটির সামরিক ও অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে তীব্র সংঘাতের ফলাফল বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। কিরগিজস্তানের পর জনসংখ্যার শতকরা হিসাবে মিয়ানমারে দ্বিতীয় বৃহত্তমসংখ্যক সংঘাতপূর্ণ বাস্তুচ্যুতি হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিধ্বংসী বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে যুক্ত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া জলবায়ু অভিঘাতের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাপপ্রবাহ এবং বন্যার মতো চরম আবহাওয়ার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে। দীর্ঘ বর্ষা ঋতু, উষ্ণ আবহাওয়া এবং ক্রমবর্ধমান খরা সবই এই অঞ্চলে ‘নতুন স্বাভাবিক’ হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

২০২২ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলো রেকর্ড-ব্রেকিং তাপপ্রবাহের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিল এবং একই বছরে, বর্ষা-মৌসুমের বন্যা বিশেষত পাকিস্তানে ধ্বংসের চিহ্ন রেখে গেছে। পাকিস্তানে ২০২২ সালের বন্যা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক ছিল, যার ফলে প্রায় এক হাজার ৭০০ জন মারা গিয়েছিল এবং ৮০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। ২০২২ সালে বাংলাদেশের সিলেটে রেকর্ড ভাঙা বন্যা হয়েছিল, যা ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। যার ফলে কয়েক ডজন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শুধু ২০২২ সালেই দুর্যোগের কারণে বাংলাদেশে ১৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় রিপোর্টে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আফ্রিকার পর এশিয়ার বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতির মূল কারণ ছিল দুর্যোগ। ভয়াবহ ও ব্যাপক বন্যার অভিজ্ঞতা অর্জনকারী পাকিস্তানে ২০২২ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্যোগ বাস্তুচ্যুতি (যা ৮০ লাখেরও বেশি) রেকর্ড করা হয়েছে। এই অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম দুর্যোগ বাস্তুচ্যুতি ফিলিপাইনে রেকর্ড করা হয়েছিল (প্রায় ৫.৫ মিলিয়ন)। তারপরেই অবস্থান করছে চীন (৩.৬ মিলিয়নেরও বেশি)।

প্রতিবেদনে বলা হয়, হঠাৎ শুরু হওয়া বিপর্যয় মানুষের জীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে, প্রায়শই সতর্কতা ছাড়াই, সমগ্র সম্প্রদায়ের জন্য সবচেয়ে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা কঠিন বা অসম্ভব করে তোলে বলে জানানো হয় প্রতিবেদনে। জলবায়ু সম্পর্কিত বন্যা, হারিকেন, দাবানল এবং অন্যান্য আকস্মিক দুর্যোগের ফলে কীভাবে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে তার বিভিন্ন উদাহরণ রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৯ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আফ্রিকার বেশ কয়েকটি স্থানে বন্যা খাদ্য নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করেছে।

দৈনিক সরোবর/এএস