ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

সবজির উচ্চমূল্যেও দাম পায়না চাষী

সরোবর ডেস্ক 

 প্রকাশিত: মার্চ ২২, ২০২৪, ০৮:০৪ রাত  

সবজিসহ নিত্যপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত দামের বিষয়ে আজকের পত্রিকার প্রথম পাতার খবর-‘খুচরায় খাচ্ছে কয়েক গুণ লাভ’। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে কৃষক পর্যায়ের পাইকারি মোকামে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে সাত টাকা করে। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে এসে তা ৭৫ টাকা পর্যন্ত হয়ে যাচ্ছে। বেগুনের মতোই অবস্থা লাউ, মুলা, টমেটোসহ আরও কয়েকটি সবজির। খুচরা ব্যবসায়ীদের হাতে এলেই জিনিসপত্রের দাম এক লাফে কয়েক গুণ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে। খুচরা এবং পাইকারিতে যে দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে, স্থানীয় পর্যায়ের পাইকারিতে কৃষকরা সেই দাম পাচ্ছে না বলে শ্রমিকের খরচই উঠছে না চাষীদের।

রমজানে খুচরা বাজারে সবজিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্য যে মাত্রাতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে, এ বিষয়টি আজকের পত্রিকা ছাড়াও প্রথম আলো, বণিক বার্তা, নয়া দিগন্তসহ আরও কয়েকটি পত্রিকার প্রথম পাতায় উঠে এসেছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হচ্ছে যে সরকার বেশ কিছু নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিলেও বাস্তবে সেই দামে বেশিরভাগ পণ্যই বিক্রি হচ্ছে না, বরং আগের তুলনায় দাম আরও বেড়েছে।

‘ভোটার বাড়ানোর কৌশলে আওয়ামী লীগ’-এটি মানবজমিন পত্রিকার প্রথম পাতার খবর। এখানে বলা হয়েছে, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার টানতে নির্বাচনে দলীয় প্রতীক রাখা হচ্ছে না। এতে দলের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। তবে প্রতি উপজেলায় যোগ্যতর একজনকে কৌশলে দলীয় সমর্থন দেয়া হতে পারে। একাধিক প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকায় দলীয় কোন্দল বাড়তে পারে এজন্য এ বিষয়টিও মাথায় রাখছে ক্ষমতাসীন দল।

দলীয় কোন্দলের চ্যালেঞ্জটি এরই মধ্যে সামনে এনেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্প্রতি তিনি সাংবাদিকদের জানান, সামনে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে না, দলীয় নেতাদের জনপ্রিয়তা যাচাই হবে।

এর আগে একই নির্দেশনা দেয়া হয় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে। জাতীয় নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের যৌথসভায় দলীয় সভাপতি নিজেদের মধ্যে দোষারোপ ও অপরাধ খোঁজা বন্ধ করতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন।

‘দখলে ভরাটে বিলীন ৯০ শতাংশ’- এটি দেশ রূপান্তর পত্রিকার প্রথম পাতার একটি সংবাদ। এটি ঢাকার বেশ কয়েকটি পুকুরের ওপর করা ‘পুকুর চুরি’ নামক এক সরেজমিন প্রতিবেদন। এতে বলা হয় যে ঢাকার সিংহভাগ পুকুরই সময়ের সাথে সাথে দখল হয়ে গেছে। ১৯২৪ সালে টপোগ্রাফি মানচিত্রে ঢাকার সীমানা অনেক ছিল, কিন্তু ছোট হলেও তখন অন্তত ১২০টি পুকুর ছিল। এরপর ১৯৮৫ সালে ঢাকা শহরের পুকুর নিয়ে মৎস্য বিভাগের করা এক গবেষণা অনুযায়ী, ওই সময় ঢাকায় পুকুরের সংখ্যা ছিল দুই হাজারেরও বেশি। অথচ, এর পরের তিন দশকে এসব পুকুরের ৯০ শতাংশই হারিয়ে গেছে। সর্বশেষ ২০২১ সালে রিভার অ্যান্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা শহরের পুকুর নিয়ে একটি জরিপ করে। সেই জরিপে বলা হয়, ঢাকায় এখন সর্বসাকুল্যে মাত্র ২৪১টি পুকুর কোনোমতে টিকে আছে। এগুলোর টিকে থাকার কারণ, এগুলো বড় অংশই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও মন্দিরসহ নানা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের আওতায় থাকায় প্রভাবশালীরা দখল করতে পারছে না।

‘বাংলাদেশের বিদেশী ঋণ এখন ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি’-এটি বণিক বার্তা পত্রিকার প্রথম পাতার সংবাদ। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিদেশী ঋণ ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশী ঋণের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, গত বছরের শেষ তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) দেশের বিদেশী ঋণ ৪ দশমিক শূন্য ৯ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। এ সময়ে সরকারের বিদেশী ঋণ বেড়েছে ৪ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। তবে সরকারের বাড়লেও বেসরকারি খাতে বিদেশী ঋণ ৩৩ কোটি ডলার কমেছে। গত ডিসেম্বর শেষে সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদেশী ঋণের স্থিতি ছিল ৭৯ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার। আর বেসরকারি খাতের বিদেশী ঋণের স্থিতি ২০ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে।

'Capital flight covered up'- এটি দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রথম পাতার খবর। এতে বলা হয়েছে, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের উত্তরা শাখার ছয় গ্রাহকের সাড়ে ৩৪ কোটি টাকার রপ্তানি আয় দেশে আসেনি। কিন্তু, ব্যাংকটি এই তথ্য ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছে বলে প্রমাণ মিলেছে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষায়। তাছাড়া, ওই কোম্পানিগুলোর মধ্যে পাঁচটি ৯০ কোটি টাকার এলসি'র বিপরীতে কোনো পণ্যই রপ্তানি করতে পারেনি। ফলে, ব্যাংক থেকে বেরিয়ে যাওয়া ডলার আর ফেরত আসেনি। এন আর বি কমার্শিয়াল ব্যাংকের বিরুদ্ধে আগেও মানি লন্ডারিংসহ বিভিন্ন অনিয়মের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে বলে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

‘৫ কাউন্সিলরসহ ৬৪ ‘বড় ভাইয়ের’ প্রশ্রয়ে চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাং’-এটি প্রথম আলো পত্রিকার প্রধান শিরোনাম। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম নগরে এখন অন্তত ২০০টি কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে, একেকটি দলে পাঁচ থেকে ১৫ জন সদস্য থাকে। আর পুরো নগর জুড়ে এদের সদস্যসংখ্যা অন্তত এক হাজার ৪০০ জন।

পুলিশ বলছে, এইসব কিশোর গ্যাংগুলোকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পাঁচজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ ৬৪ জন তথাকথিত ‘বড় ভাই’ আশ্রয় দিচ্ছেন। এই নগরের ৪৫টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এই কিশোর গ্যাং-এর সদস্যদের বেশিরভাগই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের। তবে এরা নামে কিশোর গ্যাং হলেও দলে ২০ থেকে ৩২ বছর বয়সীরাও রয়েছেন। এলাকায় নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে খুনোখুনি থেকে শুরু করে জায়গা দখল, অপহরণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মারামারি, অস্ত্রবাজি সহ নানা অপরাধে জড়িয়েছে এরা। গত ছয় বছরে ৫৪৮টি অবরাধের ঘটনায় এরা জড়িত। এর মাঝে খুনের ঘটনাই ঘটেছে ৩৪টি।

‘প্রকাশ্যে ভারত বিরোধিতা শুরু বিএনপির’- এটি কালের কণ্ঠের প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর ভারত বিরোধিতায় আরো সরব হয়েছেন দলের নেতাকর্মীরা। ভারতীয় পণ্য বর্জনের পক্ষে কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে যে প্রচারণা চলছিল, গত বুধবার সেই কার্যক্রমে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিএনপির একজন মুখপাত্র। যদিও ভারতের বিষয়ে দলের অবস্থান কী সে বিষয়ে বিভিন্ন সময় দলীয় ফোরামে আলোচনা হলেও আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের তিনজন নেতা। তবে তাদের কেউ-ই নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি। বিএনপি নেতারা মনে করেন, গত তিনটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থানে জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেনি। দুই দেশের জনগণের মধ্যকার যে সম্পর্ক গড়ে ওঠার কথা তার বদলে শুধু আওয়ামী লীগের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক গভীর হয়েছে।

‘সর্বনাশ জেনেও ভূগর্ভের পানি ভরসা ওয়াসার’- এটি সমকাল পত্রিকার প্রথম পাতার খবর। এতে বলা হয়েছে, ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নেমে যাচ্ছে। ১৯৯৬ সালে ভূগর্ভস্থ পানি ছিল মাত্র ২৫ মিটার নীচে। কিন্তু ২০২৩ সালে তা ৭৫ মিটার পর্যন্ত নেমে গেছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের গবেষণা অনুযায়ী এতে বলা হচ্ছে যে এভাবে চলতে থাকলে ২০৫০ সালের মাঝে ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ১২০ মিটারে নেমে যেতে পারে। কারণ, ওয়াসার প্রাক্কলন অনুযায়ী, ঢাকায় ২০২৫ সালে প্রতিদিন ৩৫ লাখ ঘনমিটার ও ২০৩০ সালে প্রতিদিন ৪৩ লাখ ঘনমিটার এবং ২০৩৫ সালে প্রতিদিন ৫২ লাখ ঘনমিটার পানির চাহিদা থাকবে।

‘ভালো নেই ব্যাংক খাত’- এটি যুগান্তর পত্রিকার প্রথম পাতার সংবাদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি গোপন প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী এতে বলা হয়েছে, সীমাহীন অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণে গ্রিনের (ভালো) চেয়ে লাল (অতি দুর্বল) এবং হলুদ (দুর্বল) ব্যাংকের সংখ্যাই বাংলাদেশে বেশি।

যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের দাবি, এটি পুরো ব্যাংক খাতের চিত্র নয় এবং সেই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র গবেষণার জন্য করা হয়েছিলো ও তালিকাটি কেবলই ধারণাভিত্তিক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, সম্প্রতি গণমাধ্যমে ব্যাংকগুলোর লাল, হলুদ ও সবুজ তালিকাভুক্তির যে প্রতিবেদন ছাপা হয়, তা ব্যাংকের স্বাস্থ্য দেখার সঠিক পদ্ধতি নয়…ব্যাংকের স্বাস্থ্য দেখার একমাত্র উপায় নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, যা ‘ক্যামলেস’ পদ্ধতির মাধ্যমে দেখা হয়।

‘উপকূলে আরো তীব্র হচ্ছে সুপেয় পানির সংকট’- এটি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার প্রথম পাতার একটি খবর। বিশ্ব পানি দিবসকে লক্ষ্য রেখে করা এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার বিভিন্ন ইউনিয়নে পুকুর ও নলকূপের মত মিঠা পানির উৎস ক্রমাগত কমছে। সেখানে প্রাকৃতিক কারণে এমনিতেই পানির সংকট। এর মাঝে দুর্যোগকবলিত এলাকা হওয়ার ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো দুর্যোগের কারণে সেখানকার জলাশয়গুলোতে সমুদ্রের নোনা পানি ঢুকে পড়ে এই সংকটকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। বাধ্য হয়ে মানুষ এই লবণাক্ত পানি ব্যবহার করছে। ফলত, ওই এলাকায় ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, জন্ডিস, চর্মরোগ ও ঘায়ের মতো রোগও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তথ্যসূত্র: বিবিসি নিউজ বাংলা

দৈনিক সরোবর/এএস