ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

পিটার হাসের নিরাপত্তা

মার্কিন দূতাবাস নিল ১৬ আনসার

সরোবর প্রতিবেদক  

 প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২৩, ০৫:১৬ বিকাল  

আনসার বাহিনীর বিশেষায়িত ব্যাটালিয়ন এজিবির ১৬ সদস্যের একটি দল মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তায় ২২ অক্টোবর থেকে কাজ করছে। এই নিরাপত্তার জন্য প্রশিক্ষিত একজন আনসার সদস্যকে নিতে মার্কিন দূতাবাসকে মাসে ৩০০ মার্কিন ডলার বা ৩৩ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে।

বাংলাদেশে বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় আনসার সদস্যদের নিয়োগ শুরু হয়েছে। অর্থের বিনিময়ে প্রথম এই সেবা নিয়েছে ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর গণসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) উপ-পরিচালক (প্রকল্প-প্রশিক্ষণ) মো. জাহিদুল ইসলাম মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে বলেন, ২২ অক্টোবর থেকে বিদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় আনসার সদস্যদের নিয়োগ শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, আনসার বাহিনীর বিশেষায়িত ব্যাটালিয়ন এজিবির ১৬ সদস্যের একটি দল মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নিরাপত্তায় কাজ শুরু করেছে। এক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী প্রশিক্ষিত একজন আনসার সদস্যকে মাসে ৩০০ মার্কিন ডলার বা ৩৩ হাজার টাকা দেওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে, ১৫ মে থেকে বিদেশি কূটনীতিকদের ট্রাফিক মুভমেন্টে (রাস্তায় চলাচল) সহায়তার জন্য বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা (এসকর্ট) প্রত্যাহার করে নেয় সরকার। বাড়তি নিরাপত্তা প্রত্যাহারের পর ১৬ মে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে আছে। তাই বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার আবশ্যকতা নেই।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তখন জানায়, বিদেশি দূতাবাস, সংস্থা ও কূটনৈতিক মিশনগুলো নির্ধারিত পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে আনসার বাহিনীর মাধ্যমে অতিরিক্ত নিরাপত্তা (এসকর্ট) নিতে পারবে। কোনো দূতাবাস যদি অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য প্রশিক্ষিত একজন আনসার সদস্যকে নিতে চায়, তাহলে মাসে ৩০০ মার্কিন ডলার বা ৩৩ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। এ সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত করে দূতাবাসগুলোকে জানিয়ে দেয় সরকার।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর বিদেশি কূটনীতিকদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছিল। এর আগে, ২০০৪ সালের মে মাসে যুক্তরাজ্যের তখনকার হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর সিলেটে গ্রেনেড হামলা হয়। এরপর থেকে তাকে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়া শুরু হয়। পরে যুক্তরাজ্যের অন্য হাইকমিশনারেরাও এই বাড়তি নিরাপত্তা সুবিধা পেয়ে আসছিলেন।

আনসার বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, নিরাপত্তার জন্য নিয়োগের আগে মার্কিন দূতাবাস এবং আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। ১১ অক্টোবর মার্কিন দূতাবাসের পক্ষে আঞ্চলিক নিরাপত্তা কর্মকর্তা ডাস্টিন ডং ও আনসারের পরিচালক (অপারেশন্স) সৈয়দ ইফতেহার আলী সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

সূত্রটি আরো জানায়, মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ দল সফিপুরের আনসার ভিডিপি একাডেমিতে ব্যাটালিয়ন আনসারদের প্রশিক্ষণ, দক্ষতা ও অন্যান্য সক্ষমতা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে। একজন অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে (ভিআইপি) চলাচলের সময়, কোনো অনুষ্ঠান চলাকালে আক্রমণ হলে, অসুস্থ হলে, দুর্ঘটনা ঘটলে এবং কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে কীভাবে নিরাপত্তা দিতে হয়, তা প্রদর্শন করেন আনসার সদস্যরা। সবকিছু দেখে মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ দল আনসার সদস্যদের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিতে সম্মত হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে আনসার গার্ড ব্যাটালিয়নকে (এজিবি)। এই ব্যাটালিয়ন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। কেউ অর্থের বিনিময়ে নিরাপত্তা সেবা নিতে চাইলে তাদের এজিবি থেকেই আনসার সদস্য দেওয়া হবে। ভিয়েনা সনদ অনুসারে যেকোনো স্বাগতিক দেশ সব কূটনৈতিক মিশন এবং তাদের কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাধ্য থাকবে।

দৈনিক সরোবর/এএস